|
প্রথম টেস্ট ড্র
প্রথম টেস্ট জিততে শেষ দিনে ভারতকে করতে হতো ১৫৭ রান। হাতে ছিল ৯ উইকেট। কিন্তু পঞ্চম দিন বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ায় জয় পেয়ে সিরিজে এগিয়ে যেতে পারল না ভারত। চেন্নাইয়ে ২০০৪ সালে চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে জিততে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতকে করতে হতো ২২৯। চতুর্থ দিনের শেষে ভারতের রান ছিল ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ১৯। সেবারেও টেস্টের শেষদিনে একটিও বল খেলা না হওয়ায় নিশ্চিত জয় থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছিল ভারতকে। যেমনটা হল আজ। সবচেয়ে বড় কথা, ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে ভারত ১-৪ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল। একমাত্র জয়টি এসেছিল ট্রেন্ট ব্রিজেই। এবার সেখানেই প্রথম টেস্টে সিরিজে এগিয়ে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হল ভারত।
হতাশ বিরাট
বৃষ্টিতে জয় হাতছাড়া হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ বিরাট কোহলি। কিন্তু একইসঙ্গে সিরিজে ভালো কিছুর বিষয়ে প্রত্যয়ীও। ম্যাচের শেষে তিনি এদিন বলেন, আমরা ভেবেছিলাম তৃতীয় ও চতুর্থ দিন বৃষ্টি হবে। কিন্তু তা পঞ্চম দিন আসায় একটাও বল খেলা না হয়ে টেস্ট ড্র হয়ে গেল। এটা এমন সময় হল যখন আমরা টার্গেট পূরণের দিকে ভালোভাবেই এগোচ্ছিলাম। আমরা মজবুতভাবেই ইনিংস শুরু করেছিলাম পরিকল্পনামাফিক এবং যে পরিস্থিতিতে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম তাতে জয় ছিনিয়ে নিতে অসুবিধার কিছু ছিল না। এই ম্যাচে জয়ের ব্যাপারে আমরাই এগিয়ে ছিলাম, কিন্তু পঞ্চম দিনে খেলা না হওয়া লজ্জা ও দুর্ভাগ্যের। চতুর্থ দিনের শেষে আমরা ৫০-এর বেশি রান তুলে ফেলেছিলাম। এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইচ্ছাশক্তিকে সম্বল করে আমরা শুধু ম্যাচ বাঁচানোর জন্য খেলছিলাম না সেটাও স্পষ্ট ছিল।
পজিটিভ দিক
ভারত এই ম্যাচে জয়ের আশা জাগিয়েছিল বিশেষ করে লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংয়ে। বিরাট কোহলি এই প্রসঙ্গে বলেন, গত তিন সপ্তাহ ধরে সকলেই নেটে নিয়মিত অনেকটা সময় কাটানোর এটা সুফল। এ কারণেই আমরা যেখানে ৪০ রানের কাছাকাছি লিড নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম সেখানে প্রথম ইনিংসে ৯৫ রানে এগিয়ে থাকতে পেরেছিলাম লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংয়ের জন্যই। তাঁরা দারুণ অবদান রেখেছেন। চার পেসার ও এক স্পিনার কম্বিনেশন যে এই টেস্টে কার্যকরী হয়েছে সেটা উল্লেখ করে বিরাট বলেন, সব সময়ই সবরকম পরিস্থিতির সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে সক্ষম। তা কন্ডিশনই হোক বা উইকেটের পেস। ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ সব সময়ই চিত্তাকর্ষক ও উত্তেজক হয়। এই সিরিজও তার ব্যতিক্রম হবে না।
রুটের স্বস্তি
২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে ভারতকে দুবার চতুর্থ ইনিংসে আড়াইশোর কমে বেঁধে রেখে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল জো রুটের ইংল্যান্ড। রুট এদিন দাবি করেন, আজ ৪০ ওভার হাতে পেলেই খেলা উত্তেজক পরিসমাপ্তির দিকে এগিয়ে যেত। কিছু ভালো ক্যাচ নিতে পারলে আর ভালো ফিল্ডিং করতে পারল আমাদের জয়ের সম্ভাবনাও ছিল। তবে বেশ কিছু বিভাগে যে উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে সে কথাও স্বীকার করেছেন রুট। ২০১৮ সালে ভারতের বিরুদ্ধে শতরানের পর ফের দেশের মাটিতে এই টেস্টেই শতরান করে হলেন ম্যাচের সেরা। তবে রুট ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ভাবাবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। রুট ভারতীয় পেসারদের প্রশংসা করে বলেন, দেশের মাটিতে শতরান পাওয়া তৃপ্তির। ভারতের বোলিং আক্রমণও ভালো ছিল। আমি কিছু শট খেলে পেসারদের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছিলাম। সেটা সফল হওয়ায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। রুট হয়েছেন ম্যাচের সেরা। দুই দলই ড্রয়ের ফলে চার পয়েন্ট করে পেল আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন নিয়ম অনুসারে।