অসমেও নাটক করেছে তৃণমূল
এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন, নিজের সাংসদ এলাকায়। সেখানে তিনি বলেছেন, এর আগে অসমে গিয়ে নাটক করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ব্যর্থ হয়েছে। এদিক কার্যত তাঁর দাবি তৃণমূল ত্রিপুরায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে ঝাঁপিয়ে পড়লেও, তা তারা করতে পারবে না। তিনি প্রশ্ন করেছেন, যেখানে তৃণমূলের কোনও সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্য, কিছুই নেই, সেখানে কেন শুধু শুধু তৃণমূলের ওপরে আক্রমণ হবে। তিনি মনে করেন, এরকম মারামারি করে তৃণমূল ত্রিপুরায় সংগঠন করতে পারবে না।
নাটক আর সাজানো ঘটনা
তৃণমূলের অভিযোগ ২১ জুলাইয়ের পর থেকে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ওপরে হামলা করা হচ্ছে। আইপ্যাকের টিমকে হোটেলে বন্দি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে গেলে তাঁর গাড়িতেও হামলা হয়। যা নিয়ে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেছেন, দিদি নাটক করেন, ভাইরা আরও বেশি নাটক করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূল হিংসার রাজনীতিকে ত্রিপুরায় নিয়ে যাচ্ছেন। ত্রিপুরায় শনিবার ও রবিবার যা হচ্ছে তাকে সাজানো ঘটনা বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের মতোই একই অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপির নেতা জয় প্রকাশ মজুমদার। তিনি দাবি করেছেন, ত্রিপুরায় কোনও অশান্তি ছিল না, তৃণমূলই ত্রিপুরায় অশান্তিকে ডেকে নিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার থেকে উত্তপ্ত ত্রিপুরা
তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, শনিবার আমবাসায় যাওয়ার পথে তাদের একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে থেকে যাওয়া ছাত্র ও যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত এবং সুদীপ রাহার ওপরে হামলা করা হয়। ইটের আঘাতে সুদীপ রাহার মাথা ফাটে। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, পথে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের গাড়িতে হামলা চালায়। অন্যদিকে বিজেপির তরফে ভিডিও ও স্টিল ছবি প্রকাশ করে অভিযোগ করা হয়েছে, রাস্তার মাঝে গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন জয়া দত্ত। পাশাপাশি রাস্তার ধারে তৃণমূল কর্মীদেরই ইট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
মহামারী আইনে গ্রেফতার করে আদালতে
ত্রিপুরায় করোনা পরিস্থিতি উত্তর পূর্বের অন্য রাজ্যগুলির মতো। প্রতিদিনই উত্তর-পূর্বের ওই ছোট রাজ্যে বহু মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে মহামারী আইনে দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত এবং সুদীপ রাহা-সহ ১১ জন নেতাকে গ্রেফতার করে খোয়াই থানায় রাখা হয়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাতে তাঁদের আটক রাখার পরে সকালে গ্রেফতার দেখানো হয়। যা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ, দোলা সেন, সেখানে যাওয়ার পরে আদালতে পাঠানো হয় ১১ জনকে। আদালতে যাওয়ার পথে তৃণমূল নেতাদের গাড়িতে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুবল ভৌমিক অভিযোগ করেছেন, তাঁর গাড়িতে হামলা করা হয়েছে। তাঁকে শারীরিকভাবেও হেনস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে এদিন খোয়াইয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মহামারী আইন শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে, ত্রিপুরায় নৈরাজ্য চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। কুণাল ঘোষ বলেছেন, ত্রিপুরার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তাদের সহকর্মীদের সারারাত অবরূদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এছাড়ার শনিবার থেকে এদিন পর্যন্ত ত্রিপুরায় তাদের বেশ কিছু পার্টি অফিস ভাঙা হয়েছে। ফ্লেক্স ও ব্যানারও ছেঁড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ তৃণমূলের নেতা কর্মীরা সাধারণভাবে যেসব হোটেলে ওঠেন, সেখানে গিয়ে ভাড়া না দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ মালিকদের গাড়ি ভাড়া না দিতেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে সোমবার তৃণমূল সাংসদরা সংসদ ভবনের বাইরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন বলে জানিয়েছেন।