অলিম্পিকে ভারতের পদক
১২১ বছর পর অ্যাথলেটিক্সে ভারতের প্রথম সোনাটি অলিম্পিকের ইতিহাসে দেশের ৩৫তম পদক। বেশিরভাগ সোনা এসেছে হকিতে। ভারত মোট সোনা জিতেছে ১০টি। রুপো ৯টি এবং ব্রোঞ্জ ১৬টি। ১৮৯৬ সালের এথেন্স অলিম্পিকে অংশ নেয়নি ভারত। ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে দুটি রুপো অ্যাথলেটিক্সে এনে দিয়েছিলেন নর্মান প্রিচার্ড। ১৯০০ সালের ১৬ জুলাই ভারত অলিম্পিকে প্রথম পদক জেতে পুরুষদের ২০০ মিটার হার্ডলসে নরমান প্রিচার্ডের রুপোর সৌজন্যে। ২২ জুলাই তিনি ২০০ মিটার দৌড়েও রুপো জিতেছিলেন। তারপর এই প্রথম অলিম্পিক অ্যাথলেটিক্সে পদক এবং প্রথম সোনা জিতল ভারত। ইতিহাসের পাতায় সোনালি অক্ষরে তাই লেখা থাকবে নীরজ চোপড়ার নাম।
কোন খেলায় কোন পদক
ভারতের সবচেয়ে বেশি অলিম্পিক সাফল্য এসেছে পুরুষদের হকিতে। এবারও মনপ্রীতরা ব্রোঞ্জ জেতায় হকিতে ভারতের মোট পদক সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২। অলিম্পিকে আটটি সোনা, একটি রুপো ও তিনটি ব্রোঞ্জ জিতেছে ভারতের হকি দল। কুস্তিতে এসেছে মোট সাতটি পদক। আজ বজরং পুনিয়া ব্রোঞ্জ জেতায় কুস্তিতে ভারতের ব্রোঞ্জের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫, রুপো এসেছে ২ বার। শুটিংয়ে ভারত জিতেছে চারটি পদক। ২০০৮ সালে অভিনব বিন্দ্রার সোনা-সহ ২টি রুপো ও ১টি ব্রোঞ্জ অলিম্পিক থেকে এসেছে। যদিও রিও অলিম্পিকের পর এবারও হতাশ করেছেন ভারতীয় শুটাররা। অ্যাথলেটিক্সে ভারত নীরজের সোনা-সহ মোট তিনটি পদক জিতল অলিম্পিকের আসর থেকে। ব্যাডমিন্টনে ১টি রুপো ও ২টি ব্রোঞ্জ এসেছে পিভি সিন্ধু ও সাইনা নেহওয়ার হাত ধরে। এ ছাড়া বক্সিংয়ে ভারত জিতেছে তিনটি ব্রোঞ্জ। এবার একমাত্র বক্সার হিসেবে ব্রোঞ্জ জিতেছেন লাভলিনা বরগোঁহাই। ভারোত্তোলনে কর্ণম মালেশ্বরীর ব্রোঞ্জের পর এবারের টোকিও অলিম্পিকেই রুপো জিতেছেন মীরাবাঈ চানু। ফলে এই ক্রীড়াক্ষেত্র থেকে ভারত দুটি অলিম্পিক পদক পেয়েছে। টেনিসের একমাত্র ব্রোঞ্জটি জিতেছিলেন লিয়েন্ডার পেজ।
অলিম্পিকে ভারত
১৮৯৬ সালের অলিম্পিকে অংশ না নিলেও ১৯০০ সালের অলিম্পিকে ভারত অংশ নিয়ে দুটি রুপো জিতে ছিল ১৭তম স্থানে। একমাত্র নরমান প্রিচার্ডই সেবার অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেন। ১৯০৪, ১৯০৮ ও ১৯১২ সালের অলিম্পিকেও ভারত অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। ১৯২০ সালের অলিম্পিকে ভারতের ৬ অ্যাথলিট অংশ নিয়ে কোনও পদক পাননি। ১৯২৪ সালের অলিম্পিকে ১৪ জনকে পাঠিয়েই পদক অধরাই থাকে। ১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৬, ১৯৪৮, ১৯৫২ সালের অলিম্পিকে ভারত সোনা জেতে শুধু পুরুষদের হকিতে। পুরুষদের ফ্রিস্টাইল ব্যান্টামওয়েট কুস্তিতে খাশাবা দাদাসাহেব যাদব কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন ১৯৫২ সালের অলিম্পিকেই। ১৯৫৬ সালের হকিতেও ভারত সোনা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে। ১৯৬০ সালে হকিতে রুপো জেতার পর ফের হকিতে সোনা আসে ১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিকে। ১৯৬৮ ও ১৯৭২ সালে হকিতে ভারত ব্রোঞ্জ জেতে। ১৯৮০ সালের অলিম্পিকে ভারত হকিতে জেতে সোনা। ১৯৭৬, ১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ১৯৯২ সালের অলিম্পিকে ভারত কোনও পদকই জিততে পারেনি।
অভিভূত বিন্দ্রা
১৬ বছরের প্রতীক্ষার পর ভারত ফের অলিম্পিক পদক জেতে ১৯৯৬ সালে লিয়েন্ডার পেজের ব্রোঞ্জ জয়ের সুবাদে। ২০০০ সালের অলিম্পিকে কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন মালেশ্বরী। ২০০৪ সালে শুটিংয়ে রুপো জেতেন রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর। ২০০৮ সালে শুটিংয়েই সোনা জেতেন অভিনব বিন্দ্রা। এদিন নীরজের সাফল্যে তাই উচ্ছ্বসিত ২০০৮ সালের অলিম্পিক সোনাজয়ী।
সেরা সাফল্য
কুস্তিতে বজরং পুনিয়া এদিন ব্রোঞ্জ জেতায় ভারত লন্ডন অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি ৬টি পদক জয়ের রেকর্ড স্পর্শ করে। সেই নজিরও টপকে যায় নীরজের বর্শা নিক্ষেপে। বেজিং অলিম্পিকে ভারত জিতেছিলেন মোট তিনটি পদক। লন্ডন অলিম্পিকে তা বেড়ে ৬ হলেও রিওতে ভারত ২টি পদক জিতে ৬৭ নম্বরে থেকে শেষ করেছিল। নীরজের সোনা এক লাফে পদক তালিকায় প্রথম ৫০-এও তুলে এনেছে ভারতকে। এবারের অলিম্পিকেই সবচেয়ে বেশি ১২২ জন দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অলিম্পিকে।