জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে উচ্ছ্বাস
শনিবার টোকিও গেমসের জ্যাভলিন থ্রোর ফাইনালের প্রথম প্রচেষ্টাতেই ৮৭.০৩ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেন নীরজ। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ৮৭.৫৮ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে নীরজের জ্যাভেলিন। যা তাঁকে ঐতিহাসিক সোনার পদক জিততে সহায়তা করে। নীরজের দুর্দান্ত জয়ে উচ্ছ্বসিত হন স্টেডিয়ামে হাজির তাঁর কোচ সহ অন্যান্য ভারতীয়রা। সেখান থেকেই এক তেরঙা সংগ্রহ করে তা গায়ে জড়িয়ে এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছুটে বেড়ান আনন্দে আপ্লুত নীরজ। জড়িয়ে ধরেন প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও। ভারতীয় অ্যাথলিটকে এগিয়ে এসে শুভেচ্ছা জানান একে একে সব দেশের জ্যাভলিন থ্রোয়াররা।
জাতীয় সঙ্গীতে আবেগ
অলিম্পিকের নিয়ম অনুযায়ী কোনও ইভেন্টের মেডেল সেরেমনিতে কেবলমাত্র সোনাজয়ী দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। তিন জয়ী দেশের মধ্যে সবার ওপরে থাকা সোনাজয়ী রাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা। ২০০৮ সালে এই আবেগঘন মুহুর্তের সাক্ষী হয়েছিল দেশ। শুটিং চ্যাম্পিয়ন অভিনব বিন্দ্রার গলায় পরানো হয়েছিল সোনার পদক। একই রকম মুহুর্ত তৈরি হল টোকিও অলিম্পিকেও। ১৩ বছর অলিম্পিকে সোনা জিতে প্রতিযোগিতার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ভারতের ১২১ বছরের পদকহীনতা দূর হল নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিন থ্রোয়ে। এমন এক ঐতিহাসিক মুহুর্তের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ফের বাজল ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। সবার ওপরে উড্ডীন হল তেরঙা। এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে স্বপ্ন স্বার্থক করা নীরজ নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলেন ভারতীয় অ্যাথলিট।
পদক উৎসর্গ
প্রয়াত হওয়ার আগে কিংবদন্তি মিলখা সিং এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তিনি অলিম্পিকের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে ভারতীয় অ্যাথলিটদের গলায় সোনার পদক দেখতে চান। নিজের কেরিয়ারে খুব কাছে পৌঁছেও সেই স্বপ্ন হাতছাড়া করেছিলেন মিলখা নিজে। তাঁর সেই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ হোক, জীবনের শেষবেলায় চেয়েছিলেন দেশের কিংবদন্তি প্রাক্তন অ্যাথলিট। তার আগেই প্রয়াত হয়েছিলেন মিলখা। তাই টোকিও অলিম্পিক থেকে জয় করা সোনার পদক দেশের সেই কিংবদন্তি অ্যাথলিটকেই উৎসর্গ করেছেন আর্মি ম্যান নীরজ।
আলাদা কিছু করতে চেয়েছিলেন
টোকিও অলিম্পিকের জ্যাভলিন থ্রো-র ফাইনালে কেবল সোনা জেতাই লক্ষ্য ছিল না নীরজ চোপড়ার। শনিবার তিনি দেশের হয়ে আলাদা কিছু করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন চোপড়া। তিনি অলিম্পিক রেকর্ড ভাঙতে চেয়েছিলেন। তা না হলেও বিশ্বমঞ্চে ভারতকে সম্মানিত করতে পেরে নিজেকে গর্বিত বলে মনে করছেন চোপড়া।