সাসপেন্ড ৬ সাংসদ
নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটেছে রাজ্যসভায়। একই দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৬ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল। তারমধ্যে আবার মহিলা সাংসদদের সংখ্যাই বেশি। দোলা সেন, মৌসম বেনজির নুর, শান্তা ছেত্রী, অর্পিতা ঘোষ, নাদিমুল হক, আবির রঞ্জন বিশ্বাসকে দিনেরমতো রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় অশোভন আচরণের অভিযোগ করা হয়েছে। অধিবেশনের শুরু থেকেই উত্তাল ছিল রাজ্যসভা। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিরোধী দলের সাংসদরা। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্গাইয়া নাইডু সকলকে নিজের নিজের আসনে গিয়ে বসার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কেউ রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গাইয়া নাইডু তাঁদের বিরুদ্ধে ২৫৫ নম্বর আইন কার্যকর করা হবে বলে হুঙ্কার দেন। তারপরে সাসপেন্ড করা হয় ৬ সাংসদকে। এই নিয়ে এক জোট হয়ে প্রতিবােদ সামিল হয়েছেন বিরোধী দলের সাংসদরা।
ডেরেকের টুইট
৬ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ওব্রায়েন সঙ্গে সঙ্গে টুইট করে নিশানা করেছেন বিজেপিকে। তিনি স্পষ্ট লিখেছেন দুপুর ২টো থেকে তাঁরা প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করবেন। রাজ্যসভায় সব বিরোধী দলের নেতারা মোদী-শাহের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রতিবাদ দেখাবে বলে টুইটে তিনি লিখেছেন। তারসঙ্গে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন খেলা হবে। সকালেই ডেরেককে নিশানা করে মুক্তার আব্বাস নকভি বলেছেন মাছের বাজার বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা সংসদ অধিবেশনকে। পাপড়ি চাট পছন্দ না হলে মাছের ঝোল খান। ডেরেককে নিশানা করেই এই কথা বলেছেন মুক্তার আব্বাস নকভি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ডেরেক ওব্রায়েন সংসদে মোদী সরকারের বিল পাসকে পাপড়ি চাট খাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বিরোধীদের অনুপস্থিতির সুযোগে একের পর এক বিল পাস করে চলেছেন মোদী সরকার। ডেরেকের এই পাপড়ি চাট টুইট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। তাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তারপরের দিনই তৃণমূল ভবনে পাপড়ি চাট পার্টি করেন ডেরেক। তাতে সামিল হয়েছিলেন দলের অন্যান্য সাংসদরাও।
উত্তাল সংসদ
একাধিক ইস্যুতে আজ সকাল থেকেই সংসদের দুই কক্ষ উত্তাল। বিরোধীরা পেগাসাস থেকে ধর্ণষ একাধিক ইস্যুতে সরব হয়েছেন। লোকসভা অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দিল্লিতে নাবালিকা ধর্ষিতা খুন ওয়ার ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন। সেই নাবালিকার বাড়িেত গিয়ে তাঁদের লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তারপরেই সংসদের অধিবেশনে কংগ্রেস সাংসদরা এই নিয়ে সরব হয়েছেন। একই সঙ্গে পেগাসাস ইস্যুতে সরব হয়েছেন তাঁরা। গত কয়েকদিন ধরেই সাংসদ রাহুল গান্ধী বিরোধীদের একজোট করে পেগাসাস ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন। পেগাসাস ইস্যুতে যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিবৃতি িদচ্ছেন ততক্ষণ কোনও রকম বিল নিয়ে আলোচনা তাঁরা করবেন না বলে হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি। দুই দফায় রাহুল গান্ধী বিরোধীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।যদিও এই বৈঠকে যোগ দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তাঁর দল পেগাসাস ইস্যুতে লড়াই চালিয়ে যাবে।
সাসপেন্ড শান্তনু সেন
পেগাসাস ইস্যুতে প্রতিবাদ দেখানো নিয়ে এর আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের এক সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে রাজ্যসভায়। সাংসদ শান্তনু সেন পেগাসাস ইস্যুতে প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ কেড়ে নিয়েছিলেন এবং সেটা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপরেই শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিস আনে বিজেপি। এবং সেই নোিটসের ভিত্তিতেই বাদল অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হয় শান্তনু সেনকে। যদিও তাতেও বিক্ষোভ দমেনি। লাগাতার সংসদের উভয় কক্ষে পেগাসাস ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছেন বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ বিরোধীরা সংসদ অধিবেশন না চলতে দেওয়ার চক্রান্ত করছে সেকারণেইএই ধরনের নজির বিহীন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।