বন্যায় বিধ্বস্ত বাংলা। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, খানাকুল সহ বিস্তির্ন এলাকা এখন জলের তলাতে। কার্যত বিধ্বংসী বন্যার রূপ দেখে আতঙ্কিত বন্যা দুর্গতরা। এই অবস্থায় উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে সেনাকে। আকাশ পথে চলছে হেলিকপ্টারের সাহায্যে এয়ার লিফটিং।
এই অবস্থায় বুধবার সকালেই সড়কপথে উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি নিজে চোখ খতিয়ে দেখেন। হাঁটু সমান জলে নেমে এই বন্যাকে 'ম্যান মেড বন্যা' বলে দাবি করেছেন। শুধু প্রকাশ্যে নয়, খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সকালে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কেন এই রাজ্যে এত ভয়ঙ্কর রূপ নিল বন্যা? সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তথ্য চান প্রধানমন্ত্রী। আর এই কারণ হিসাবে কেন্দ্রের উপরেও দায় চাপান মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি মোদীর কাছে ডিভিসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন মমতা।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে মমতর অভিযোগ, ডিভিসি দিনের পর দিন পলি পরিষ্কার করে না। তাঁর দাবি, ডিভিসির ৩টি জলাধারে অতিরিক্ত ২ লক্ষ কিউসেক জল ধরত, পলি পরিষ্কার করলে আর অতিরিক্ত জল ছাড়তে হত না। শুধু তাই নয়, ৫৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়বে বলেও ডিভিসি ২ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।
কার্যত মমতার এই অভিযোগ মেনেও নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কার্যত এই ফোনালাপের পর পিএমও'র দফতর থেকে একটি টুইট করা হয়। সেখানে কার্যত বন্যার কারণ হিসাবেও দ্যামের জল ছাড়াকে দায়ী করা হয়েছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনালাপে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
তবে বন্যা সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্যকে দিতে নির্দেশ কেন্দ্রের। সেই মতো ডিভিসিকে দায়ী করে ফের মোদীকে চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ফের একবার ম্যান মেড বন্যা বলে ডিভিসিকে দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, পাঞ্চেৎ, মাইথন এবং তেনুঘাট জলাধার থেকে লাগাতার জল ছাড়া হচ্ছে।
রাজ্যেকে না জানিয়ে লাগাতার জল ছাড়া হচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে একটি তথ্য তুলে ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধায়। মোদীকে দেওয়া চিঠিতে মমতা বলছেন, একাধিক জলাধার থেকে ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
যার জেরে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলা কার্যত ডুবতে বসেছে। শুধু তাই নয়, ডিভিসির কারণে বন্যা আর সেই কারণে রাজ্যে মৃত্যু মিছিল বলেও চিঠিতে তোপ মোদীর। জলাধারগুলির সংস্কার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি আগামিদিনে এই ধরনের বন্যা পরিস্থিতি যাতে এড়ানো যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কীভাবে এই বন্যা এড়ানো যায় সে বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে।
এই অবস্থায় ডিভিসিকে চিঠি দিলেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী। আগামি কয়েকদিন জল না ছাড়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!