বন্যা বিধ্বস্ত রাজ্যের এক প্রান্ত। হু হু করে ঢুকছে জল। কেউ বাড়ির ছাদে তো আবার কেউ ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকই বলছেন এমন ভয়ঙ্কর এবং বিধ্বংসী বন্যা নাকি বিগত কয়েক বছরে দেখেননি বলে দাবি বন্যা বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের। জলের তলাতে আরামবাগ, খানাকুল সহ একাধিক এলাকা। তথ্য বলছে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে আড়াই লক্ষ মানুষ ক্ষতির মুখে। অন্যদিকে সরকারি ভাবে এখনও সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সাধারণ মানুষকে উদ্ধারে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। হেলিকপ্টারের সাহায্যে এয়ার লিফটিং করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বন্যা বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০ থেকে ২১ জনকে এয়ার লিফটিং করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর এই অবস্থায় রাজ্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
জানা যাচ্ছে, বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা এবার নিজে সরজমিনে খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলির খানাকুলের বিস্তির্ন এলাকা এই মুহূর্তে জলের তলাতে রয়েছে। জানা যাচ্ছে বুধবার সেই সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম আকাশপথে পুরো এলাকা ঘুরে দেখবেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকও করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, মুখ্যসচিব মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হতে পারেন।
নবান্ন সূত্রের খবর, বিস্তারিত ভাবে গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করতে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকালেও প্রতি মুহূর্তে ওই সমস্ত এলাকার জেলা আধিকারিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু তাই নয়, স্থানীয় জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর যোগাযোগ রেখেছেন বলে খবর। ফোনে প্রতি মুহূর্তের খোঁজ নিয়েছেন। অন্যদিকে সোমবার বন্যা নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্ত মন্ত্রি, আধিকারিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে একগুচ্ছ নির্দেশিকা মুখ্যমন্ত্রী কার্যত জারি করেন।
মন্ত্রীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, বন্যা নিয়ে কোনও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না শুধু তাই নয়, নবান্নে মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে মমতা তাঁর নির্দেশে আরও জানিয়েছেন যে মন্ত্রীদের নিজেদের এলাকায় থাকতে হবে এই অবস্থায়। ত্রাণের অভাব যাতে কোনও ভাবে না হয় সে বিষয়ে নজর রাখার কথা বলা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে বিষয়ে একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। যারা বন্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের তালিকাও তৈরি করতে বলা হয়েছে। আর্থিক সাহায্য তৈরি করতে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন সাংসদ দেবও। ঘাটালের অবস্থাও ভয়াবহ। বহু মানুষ কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন! এই অবস্থায় ঘটনাস্থল সরজমিনে খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদ।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা বানভাসী অবস্থা। এর মধ্যে ডিভিসি'র তরফে জল ছাড়ার কারণে নতুন করে আরও প্লাবিত হয়েছে বহু এলাকা। তবে এই বছর বিধ্বংসী বন্যার চেহারা অন্য কোনও বছর দেখা যায়নি বলে দাবি এলাকার মানুষের।
জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!