টোকিও অলিম্পিকে হার দিয়েই শুরু হল ভারতের কুস্তি অভিযান। মহিলাদের ৬২ কেজি বিভাগের প্রথম রাউন্ডে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রূপোজয়ী মোঙ্গলিয়ার বোলোরতুয়া খুরেলখুর কাছে পরাজয় স্বীকার করতে হল ১৯ বছরের সোনাম মালিককে। রেপেচেজ রাউন্ডে খেলে টুর্নামেন্টে ফিরে আসার সুযোগও হারিয়েছেন ভারতীয় কুস্তিগীর। সোনামকে প্রথম রাউন্ডে হারানো মোঙ্গলিয়ার কুস্তিগীর দ্বিতীয় রাউন্ডে পরাজিত হওয়ায় টোকিও গেমস থেকে কার্যত ছিটকে গেলেন সোনাম।
ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্তভাবেই করেন সোনাম। মোঙ্গলিয়ার শক্তিশালী বোলোরতুয়া খুরেলখুর বিরুদ্ধে শুরুতেই পয়েন্ট হাসিল করেন ১৯ বছরের ভারতীয় কুস্তিগীর। ২-০ পয়েন্টে এগিয়ে যান সোনাম। কিন্তু নিজের সমস্ত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরে আসেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রূপোজয়ী ২৫ বছরের মোঙ্গলিয় কুস্তিগীর। একদম শেষ মুহুর্তে ২ পয়েন্ট অর্জন করেন বোলারতুয়া। টাচডাউনের ভিত্তিতে মূ্ল্যবান পয়েন্ট অর্জন করার জন্য তাঁকেই জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।
এই পরাজয়ের পর টোকিও অলিম্পিকের ৬২ কেজি বিভাগের রেপেচেজ রাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেতে পারতেন ভারতীয় কুস্তিগীর, যদি তাঁকে হারানো মোঙ্গলিয়ার কুস্তিগীর ক্যাটেগরির ফাইনালে পৌঁছতে পারবেন। তবে হয়েছে তার উল্টোটাই। ৬২ কেজির কোয়ার্টার ফাইনালে বুলগেরিয়ার তাইবে য়ুসেইনের কাছে হেরে গিয়েছেন বোলোরতুয়া খুরেলখুর। ১০ এসইউপি পয়েন্ট নিয়ে মোঙ্গলিয়ার কুস্তিগীরকে হারিয়ে প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছেন বুলগেরিয়ার প্রতিযোগী।
ফলে কিছুটা হলেও হতাশ হয়েছেন দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা। কারণ তীব্র প্রতিবন্ধকতা জয় করে টোকিও অলিম্পিকে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন সোনাম। কারণ তাঁর এতদূর পৌঁছনোর আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছিলেন অনেকে। ২০১৭ সালে এক জটিল স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই কুস্তিগীর। সোনামের ডান হাত এবং কাঁধ পুরোপুরি অসাড় হয়ে গিয়েছিল। ওই হাত দিয়ে কোনও বস্তু ধরা তো দূরের কথা, ঠিকমতো তুলতেই পারতেন না ১৯ বছরের কুস্তিগীর। জীবন তাঁর সেখানেই থেমে যাবে বলে মনে করেছিলেন অনেকে। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল সোনামের লড়াই। ঘটনার ৬ মাস পর ফের অনুশীলনে নেমে পড়েছিলেন ভারতীয় কুস্তিগীর।
২০১৮ সালেই ম্যাটে ফিরে এসেছিলেন সোনাম। সে বছরের এশিয়ান ক্যাডেট ও ওয়ার্ল্ড ক্যাডেট চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ২০১৯ সালে আরও এক বিশ্ব ক্যাডেট চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন সোনাম। তাঁকে সিনিয়র লেভেলে তুলে আনা হয়েছিল। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী সাক্ষী মালিককে ২০২০ সালে লখনৌয়ে হওয়া জাতীয় ট্রায়ালে হারিয়ে দিয়েছিলেন সোনাম। রাতারাতি শিরোনামে উঠে আসা ১৯ বছরের তারকা এর মাঝে আরও তিন বার সাক্ষী মালিককে পরাজিত করেছিলেন।
জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!