আফগানিস্তানে ১২ টি বুলেটে বিদ্ধ দানিশের দেহ গাড়িতে পিষে বিকৃত করে তালিবানরা! নয়া মিডিয়া রিপোর্টে চাঞ্চল্য

পেশার তাগিদ নয়, বরং পেশার নেশায় আমৃত্যু লড়াই করে মানুষের সামনে সত্যিটা তুলে ধরার যে ব্রত সাংবাদিকরা নিয়ে থাকেন ,তাঁর মূর্ত উদাহরণ ছিলেন দানিশ সিদ্দিকি। ভারতীয় অই সাংবাদিকের মৃত্যু আফগানিস্তানের যুদ্ধপ্রান্তরে হয়েছে বলে শোনা যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল যে দানিশ তালিবানের বম্ব শেলিং এর মাঝে প্রয়াত হন। তবে সিএএন-নিউজ এইট্টিনের এক সাম্প্রতিক এক্সক্লুসিভ রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, অফগানিস্তানে দানিশকে শেলিং এ নয়, বরং তালিবানের নৃশংস অত্যাচারে খুন করা হয়েছে।

কীভাবে খুন করা হয়?

নিউজ এইট্টিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, রয়টারের চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকিকে ১২ টি বুলেটে প্রথম গুলি করে ঝাঁঝরা করে হত্যা করা হয়। তারপর সেই দেহকে একটি এসইউভির নিচে ফেলে দিয়ে তা পিষে দেওয়া হয়। দানিশের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট থেকে এই ঘটনার তথ্য উঠে এসেছে বলে খবর। এক সাংবাদিকের দেহকে গাড়ির চাকায় পিষে ফেলার সময় , তালিবানরা কোনও নারকীয়তার অভাব রাখেনি বলে খবর। দানিশের মাথা যতক্ষণ না থেঁতলে ছন্নভিন্ন হয়েছে ততক্ষণ এসইউভির চাকা চলেছে দানিশের শরীরের ওপর দিয়ে। ততক্ষণে ১২ টি বুলেটের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকেন দানিশ।

পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট কী বলছে?

পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী দানিশের শরীর থেকে বহু বুলেট উদ্ধার হয়েছে। বেশিরভাগ বুলেট দানিশের মাথা লক্ষ্য করে টার্গেট করা হয় বলে ধারণা। বহু বুলেট পিঠের দিক থেকে পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, চারিদিক থেকে দানিশকে ঘিরে ফেলে নৃশংস নারকীয়তা নিয়ে হত্যা করা হয় । তালিবানের অত্যাচারের নমুনা আগেও পাওয়া গিয়েছে আফগনিস্তানের বুক থেকে। সেখানে ফুটবল মাঠে সারি দিয়ে মানুষকে বসিয়ে রেখে নারকীয় হত্যালীলায় মাততে দেখা গিয়েছে তালিবানকে। তালিবানের সেই ঘটনা আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যের পদশব্দ শোনার বহু আগে ঘটে। ওই নারকীয় খেলার মাঠের ভিডিও ভাইরালও হয়। এদিকে, দানিশের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ফের একবার তাজা হয়ে উঠছে তালিবানের সেই সমস্ত নারকীয় ঘটনার বিবরণ।

নারকীয়তা

এদিকে, সাম্প্রতিক নিউজ রিপোর্ট বলছে, দানিশের দেহকে যে টানা হেঁচড়া করা হয়েছে, তারও তথ্য প্রমণ রয়েছে । মনে করা হচ্ছে তালিবানরা দানিশকে খুন করে তাঁর দেহ কোথাও থেকে চেনে আনে। তারপর মৃতদেহের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে তাকে ছিন্নভিন্ন করা হয়। দানিশের এক্সরে রিপোর্ট বলছে তাঁক দেহে একাধিক ফ্র্যাক্চার পাওয়া গিয়েছে। এদিকে গাডিতে পিষে তালিবানি কায়দায় হত্যাকাণ্ডের খবরে কার্যত শিলমোহর দিয়েছে আফগানিস্তানের গোয়েন্দারাও।

ঘটনার দিনের বিবরণ

জানা যায়, ঘটনার দিক, তালিবান গোষ্ঠীর রেড ইউনিট একটি মসজিদের দিকে দৌড়তে থাকে। তাদের টার্গেটে ছিল আফগানিস্তানের সেনা। সেই ঘটনাস্থলে দানিশও ছিলেন। তিনি চিৎকার করতে থাকেন । পরিচয় দিতে থাকেন তিনি নিজে সাংবাদিক বলে। নিজের ভারতীয় হওয়ার পরিচয় দেখান দানিশ। তালিবানদের সামনে তুলে ধরেন আইডি কার্ড। তাঁর আইডি কার্ড দেখে তা তালিবানরা কোয়েট্টায় নিজেদের হেডকোয়ার্টারে পাঠায়। হেড কোয়ার্টারকে জিজ্ঞাসা করা হয়, দানিশকে নিয়ে তারা কী করবে? নির্দেশের অপেক্ষা করে স্থানীয় তালিবান নেতারা। এরপর টুইটারে তারা দানিশের বিষয়ে পোস্ট পড়তে থাকে। তাতে তালিবানরা দেখতে পায় যে দানিশ আফগানিস্তানে বহুদিন ধরে রিপোর্টিং করছিলেন। একটি ছবিতে আফগানিস্তানের সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দানিশকে দেখা যায়। তিনি তালিবান বিরোধী সাংবাদিকতা করছিলেন বলে অভিযোগ তোলে তালিবান জঙ্গিরা। এরপরই তালিবান হেড কোয়ার্টার থেকে নির্দেশ আসে দানিশকে শেষ করে দেওয়ার জন্য। এরপরই চলে দানিশের ওপর তালিবানের নারকীয় সংহার।

জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!

More AFGHANISTAN News  

Read more about:
English summary
Danish Siddiqui's death was very brutal. A latest Media report revels Danish death case.