বিজেপি কার্যালয়ে তালা মারা কাউকে পাওয়া যাবে না
ফেসবুক পোস্ট করে বাবুল সুপ্রিয় বলেছিলেন, তিনি বিজেপি ছাড়ছেন। যা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আসানসোল উত্তর তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, আস্তে আস্তে রাজ্যের সব বিজেপি নেতাই পদত্যাগ করবেন। বিজেপির সংগঠন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। মোদী সরকারের জন বিরোধী নীতির ফলেই তা ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেছেন, এমন একটা সময় আসবে যে বিজেপির অফিসে তালা খোলার মতো কাউকে পাওয়া যাবে না।
বাবুলের কেন্দ্রেই অনুষ্ঠানে যোগ মলয় ঘটকের
বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের সাংসদ ২০১৪ সাল থেকে। এই লোকসভার অধীনে রয়েছে আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র। সেই কেন্দ্রে ২০১১ থেকে টানা জয়ী হয়ে আসছেন মলয় ঘটক। এছাড়াও আসানসোল কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে, পাণ্ডবেশ্বর, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, আসানসোল দক্ষিণ, কুলটি এবং বারাবনি বিধানসভা কেন্দ্র।
সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা
মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, বাবুল সুপ্রিয়-র তৃণমূলে যএাগদানের সম্ভাবনা কতটা। এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের আইন ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, তিনি কিছু নন, বিষয়টি দল বলতে পারবে। আর এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এলাকায় উন্নয়ন না হওয়ার অভিযোগ
ময়ল ঘটক অভিযোগ করেন ২০১৪ থেকে সাংসদ তথা মন্ত্রী থাকলেও এলাকায় পর্যাপ্ত উন্নয়ন হয়নি। আরও অভিযোগ বাবুল সুপ্রিয় সাংসদ থাকার সময়ে হিন্দুস্তাুন কেবলস, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রাসত্ত সংস্থা রুগণ হয়েছে। অনেক শিল্প পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে বাবুল সুপ্রিয় এই এলাকায় শিল্পের পুনরুজ্জীবনে পর্যাপ্ত ভূমিকে নেননি বলে অভিযোগ করেথেন মলয় ঘটক। তিনি অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় বহু মানুষ কর্মহীন।
ময়ল ঘটক অভিযোগ করেছেন, মানুষ প্রয়োজনের সময় বাবুল সুপ্রিয়কে দেখা পান না। অপর দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আসানসোল জুড়ে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী।
বাবুলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সৌগত
শনিবার বাবুল সুপ্রিয়র ফেসবুক পোস্টের পরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এব্যাপারে তিনি নিজেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বাবুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি বলেছিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় (টালিগঞ্জে প্রার্থী ছিলেন বাবুল) মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে, দল তাঁর প্রতি সুবিচার করেনি বলেও মন্তব্য করেছিলেন সৌগত রায়। তিনি আরও বলেছিলেন, বাবুলের সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। এছাড়াও দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও বাবুলের সমস্যা রয়েছে। বাবুলের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা প্রসঙ্গে সৌগত বলেছিলেন, দলে কারও যোগদানের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাবুলের অবস্থান নিয়ে জল্পনা
বাবুল নিজের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে ফেসবুক পোস্ট করার পরেই, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি বাবুল সুপ্রিয়কে অবস্থান বদল করতে বলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে জেপি নাড্ডার সঙ্গে কথার বলার পরে, বাবুল সুপ্রিয়কে বিষয়টি নিয়ে সেরকম কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়নি। দলের বিভিন্ন অংশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতি ছাড়লেও বিজেপি ছাড়বেন না বলে কথা দিয়েছেন।
ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল
বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে বলার পাশাপাশি ময়ল ঘটক দাবি করেছেন, ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল। দিন কয়েক আগে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের সদস্যদের আটক করে রাখার অভিযোগ পাওয়ার পরে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে মলয় ঘটকও গিয়েছিলেন ত্রিপুরায়। তিনি বলেছেন, ত্রিপুরার মতো বাংলাতেও বিজেপি করার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আইপ্যাকের সদস্যদের আটক করার ঘটনাকে বেআইনি বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন বিজেপি ভয় পেয়ে কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে।