দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা কোম্পানিগুলির (insurance companies) বেসরকারিকরণের (privatisation) বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী (finance minister) নির্মলা সীতারমনকে (nirmala sitharaman) চিঠি দিলেন বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র (amit mitra)। চিঠিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে আবেদন করেছেন অমিত মিত্র।
অমিত মিত্র চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, দেশের রাষ্ট্রয়ত্ত বিমা ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ হলে দেশের জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা এবং দুর্দশা বাড়বে। রাষ্ট্রয়ত্ত বিমান কোম্পানিগুলিকে অর্থনীতির স্তম্ভ বলে বর্ণনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের বেসরকারিকরণের নীতিগত সিদ্ধান্তে তিনি আঘাত পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি আশঙ্কা প্রকাশও করেছেন।
তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স কোম্পানির পাশাপাশি এলআইসিকেও বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তিনি এই দুই সংস্থাকে বেশিরভাগ ভারতীয়ের আর্থিক নিরাপত্তার ভিত্তি বলে বর্ণনা করেছেন। অমিত মিত্র বলেছেন, এলআইসির বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৬.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ প্রায় ২৩.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা। এই সংস্থা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে যে ঋণ দিয়েছে তার পরিমাণ প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। সেই সংস্থাকে বেসরকারিকরণ করলে প্যাণ্ডোরার বাক্স খুলে যাবে এবং ৩০ কোটি পলিসিগ্রাহক নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বেন। অমিত মিত্র লিখেছেন, ১৯৫৬ সালে এই সংস্থার কাজ শুরুর পর থেকে দেশ গঠনের কাজে হাত লাগিয়েছে। দেশের রেল পরিবহণ, সড়, বিদ্যুৎ, কৃষিতে বড় বিনিয়োগ করেছে। এই সংস্থার বেসরকারি করণে প্রায় ১.১৪ লক্ষ কর্মী এবং প্রায় ১৫ লক্ষ এজেন্টের জীবন ও জীবিকা দুর্দশার মধ্যে ঠেলে দেবে।
বাংলার অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্সের বেসরকারিকরণে প্রায় দুকোটি খুচরো বিমাকারীর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবে। পাশাপাশি তা দেশের অর্থনীতিতেও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাবে। তিনি বলেছেন, এই বেসরকারিকরণ বিমার ওপরে সাধারণ দরিদ্র খুচরো বিমাকারীর আস্থা হারাবে। এই সংস্থায় কর্মী সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার আর প্রিমিয়াম বাবদ আয় করে থাকে প্রায় সাড়ে সতেরো হাজার কোটি টাকা। এই সংস্থা সরকারি সিকিওরিটি এবং বন্ডে বিনিয়োগ করে প্রায় এগারোহাজার কোটি টাকার মতো।
সংসদে পেগাসাস আর কৃষি বিল নিয়ে তৃণমূল-সহ বিরোধীরা সুর চড়িয়েছে। তারই মধ্যে অমিত মিত্র কেন্দ্রের কাছে বিমার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে চিঠি দিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তৃণমূল রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর চিঠিকে হাতিয়ার করে বাদল অধিবেশনেই ঝড় তুলতে চলেছে। যার ফলে কেন্দ্রকে আরও কোণঠাসা করা যাবে বলেই মনে করছে ঘাসফুল শিবির। এব্যাপারে যে তাঁরা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই চলছেন, তাও জানিয়েছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৯-এ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মোদী সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নেয়। তখন থেকেই এই বিরোধিতা শুরু করে তৃণমূল। এর পাল্টা আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছে তৃণমূল।
একইদিনে দুই বড় মামলায় স্বস্তি বিরোধী দলনেতার, আপাতত 'পদে'ই বহাল থাকছেন শুভেন্দু
জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!