ডাকা হয়েছে ১৪ টি দলকে
কংগ্রেস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে রাহুল গান্ধীর ডাকা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ১৪ টি রাজনৈতিক দলকে। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সোনিয়া-রাহুলের কংগ্রেস শুধু তৃণমূলই বাকি সব বিরোধীদলকে নিয়ে কক্ষ সমন্বয় করে চলতে চাইছে। প্রসঙ্গত গত সপ্তাহেও রাহুল গান্ধী এমনই একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। তবে তৃণমূলের তরফে ভুল বোঝাবুঝির কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক হয়। তাই কংগ্রেস শিবির মনে করছে মঙ্গলবারের বৈঠকে তৃণমূলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।
পার্লামেন্টের বাইরে মক পার্লামেন্ট
বিরোধীএখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে বিরোধীরা পার্লামেন্টের বাইরে মক পার্লামেন্ট বসাতে চান। কেননা তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের মতকে মর্যাদা দিতে রাজি নন। তাদের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই চিন্তাভাবনা। এর লক্ষ্য হল সামগ্রিকভাবে বিজেপি বিরোধী পরিবেশ তৈরি করা। বিরোধীদের মতে পেগাসাস জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত। যা নিয়ে সরকারকে ব্যাখ্যা করতে হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার সংসদের দুই কক্ষেই একের পর এক বিল পাশ করিয়ে যাচ্ছে।
বিল পাশের সময় নিয়ে কটাক্ষ তৃণমূলের
এই গণ্ডগোলের মধ্যেও সরকার পক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় বেশ কয়েকটি বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি টুইট করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন, ১২ টি বিল পাশ করাতে সরকার সময় নিয়েছে গড়ে সাত মিনিট করে। বিষয়টি পাপড়িচাট তৈরি নাকি আইন তৈরি, প্রশ্ন তুলছেন তিনি। যে যে বিল পাশ করিয়েছে মোদী সরকার তার একটি তালিকা তিনি টুইট করেছেন। এভাবে কাজ করে কেন্দ্র সংসদের পবিত্রতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে দাবি করেছেন ডেরেক।
১৯ জুলাই সংসদের অধিবেশন শুরুর পর থেকেই গণ্ডগোল
সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে ১৯ জুলাই থেকে। সেই দিন থেকেই একদিনও সঠিকভাবে সংসদের কোনও কক্ষেই কাজ হয়ননি। কেননা বিরোধীরা পেগাসাস এবং কৃষি বিল নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে আসছেন। একটা হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ১৯ জুলাই অধিবেশন শুরুর পর সব মিলিয়ে সংসদে কাজ হয়েছে ১৮ ঘন্টার মতো। হওয়ার কথা ছিল ১০৭ ঘন্টা।
যেখানে লোকসভা চলার কথা ৫৪ ঘন্টা। সেখানে তা চলতে পেরেছেন মাত্র সাত ঘন্টা। অন্যদিকে ৫৩ ঘন্টার মধ্যে রাজ্যসভা চলেছে মাত্র ১১ ঘন্টার মতো। সব মিলিয়ে প্রায় ৮৯ ঘন্টার মতো কাজ হয়নি সংসদে।
করদাতাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি
সংসদের কাজ ব্যাহত হওয়ায় করদাতাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবিতে প্রতি মিনিটে ক্ষতির পরিমাণ ১.১১ লক্ষ টাকা থেকে ১.৩৯ লক্ষ টাকার মতো। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বলতে দেওয়া হয়নি প্রধানমন্ত্রীকে
এমন কি অধিবেশন বসার প্রথম দিন সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে নতুন মন্ত্রীদেরকেও পরিচয় করিয়ে দিতে দেওয়া হয়নি। পেগাসাস নিয়ে বিরোধী সাংসদদের হট্টগোলের জেরেই তা সম্ভব নয়নি। প্রতিদিনই সংসদের অধিবেশন যতক্ষণ চলে ততক্ষণই হইহট্টগোল হচ্ছে, অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা না করা পর্যন্ত তা চলতে থাকছে।
নতুন মন্ত্রীদের পরিচয়ে বাধা পাওয়ার ঘটনার সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি ভেবেছিলেন সাংসদদের মধ্যে মন্ত্রীদের পরিচয় জানা নিয়ে একটা উৎসাহ থাকবে। কেননা এবার বহু মহিলা, দলিত, আদিবাসীকে মন্ত্রী করা হয়েছে। এবার মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়েছে কৃষি এবং গ্রামীণ এলাকার প্রতিনিধিদেরও। মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন ওবিসি সম্প্রদায়ের নেতারাও।
প্রসঙ্গত এদিনও পেগাসাস ও কৃষি বিল ইস্যুতে বারে বারে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে হয়। এরপেরই রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খারগে জানান, মঙ্গলবার সব বিরোধীদলের ফ্লোর লিডাররা দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে মিলিত হবে।