মন্ত্রিত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়াই কি কারণ
শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সাংবাদিক বৈঠকের পরই ফেসবুক-বার্তায় বদল এনে তিনি বিজেপি ছাড়ার পাশাপাশি সাংসদ পদও ছাড়ছেন বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মোদীর প্রিয়পাত্র বাবুল সুপ্রিয়। মন্ত্রিত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়াই কি কারণ তাঁর বিজেপি ছাড়ার। সেই অপমানেই কি ফেসবুকে পোস্ট করে আলবিদা জানালেন বাবুল?
প্রশ্ন উঠবেই কেনই বা বিজেপি ছাড়তে গেলাম?
রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার বার্তা দিয়ে তিনি যে ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন, সেখানেই তিনি লেখেন তাঁর বিজেপি ছাড়ার কারণ। বাবুল পরিষ্কার লেখেন, কেন ছাড়লাম বিজেপি, সেই প্রশ্নের জবাব আমাকে দিয়ে যেতেই হবে। কারণ এটাই প্রাসঙ্গিক। প্রশ্ন উঠবেই কেনই বা বিজেপি ছাড়তে গেলাম? প্রশ্ন উঠবে মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সঙ্গে বিজেপি ছাড়ার কি কোনও সম্পর্ক আছে?
বিজেপি ছাড়ার নেপথ্যে মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়া!
বাবুল নিজেই প্রশ্ন করে, নিজেই সেই জবাব দেন। বাবুল ফেসবুক পোস্টে লেখেন- তাঁর বিজেপি ছাড়ার পিছনে মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সম্পর্ক আছে। কিছুটা তো নিশ্চয় আছে! আমি তঞ্চকতা করতে চাই না। তাই এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে, আমাকেও তা শান্তি দেবে| তাই উত্তরটা জানিয়েই দিলাম।
ফেসবুক পোস্টে যন্ত্রণার কথা জানালেন বাবুল
বাবুল লেখেন, ২০১৪ ও ২০১৯-এর মধ্যে অনেক ফারাক| তখন শুধু বিজেপির টিকিটে আমি একাই ছিলাম। আলুওয়ালিয়াজি জিজেএমের সমর্থনে সাংসদ হন। আর আজ বাংলায় বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল| বলতে দ্বিধা নেই যে আজ পার্টিতে কোনও একজন ব্যক্তিবিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোন বড় ব্যাপার নয় তাও স্পষ্ট হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়াটাই যে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস!
কেন বিজেপি ছাড়ছেন, কাকে দুষলেন বাবুল
বাবুল ফেসবুক পোস্টে আরও লেখেন- ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল। তা হতেই পারে কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিল| তার জন্য কোথাও আমি দায়ী, আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী। যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাই না।
বাবুলের নিশানায় কি দিলীপ ঘোষই!
বাবুলের কথায়, সিনিয়র নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি হচ্ছিল। এই মুহূর্তে তা একেবারেই অনভিপ্রেত। তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি| তাঁর ফেসবুক বার্তায় স্পষ্ট তিনি নিশানা করছেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাদ সর্বজনবিদিত।
তবু কিছু কথা বাকি, প্রশ্ন রেখে গেলেন বাবুল
তারপর আরও এক তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়ে বাবুল শেষ করেন তাঁর লেখা। তিনি বলেন, হ্যাঁ কিছু কথা বাকি রয়ে গেল...হয়তো কখনও বলবো...আজ নাই বা বললাম...। শেষে তিনি আবার লিখলেন- চললাম...। বাবুলের এই ফেসবুক পোস্ট রাজনৈতিক সন্ন্যাস ও সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার আগে বেশ কিছু প্রশ্ন রেখে গেল!
রাজনীতিকে আলবিদা জানাতে হেমন্তর গানই হাতিয়ার করলেন বাবুল
শনিবার বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুকে এক লম্বা পোস্টে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের এক জনপ্রিয় গান আপলোড করে লিখেছিলেন- চললাম.. আলিবিদা...। সেই গানের লাইনের সঙ্গে মিলিয়েই তিনি লেখেন 'বেশ কিছু সময় তো থাকলাম...চললাম।' তারপর জনতার কাঁধে মূল্যায়নের ভার দিয়ে তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার বার্তা দেন। পরে ফেসবুক পোস্টে তিনি সংযোজন করেন, সাংসদ পদ থেকেও অবভিয়াসলি ইস্তফা দিচ্ছি। তিনি লেখেন- বহু নতুন মন্ত্রী এখনও সরকারি বাড়ি পাননি। তাই আমার বাড়িটি আমি এক মাসের মধ্যে (যত তাড়াতাড়ি সম্ভব-হয়তো তার আগেই) ছেড়ে দেবো| হ্যাঁ, সাংসদ পদ থেকেও অবভিয়াসলি ইস্তিফা দিচ্ছি। মাইনেও আর নেব না।