জ্বালানি-সহ বিভিন্ন জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ
পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাস। সব কটি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তৃণমূলের অভিযোগ যা হচ্ছে সহই হচ্ছে কেন্দ্রের জন্য। (যদিও মূল্যবৃদ্ধিতে যে রাজ্যের তৃণমূল সরকারও উপকৃত হচ্ছে তা তারা স্বীকার করতে চাইছে না।) সেই মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধেও পথে নেমে প্রতিবাদ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি, নেতা, কর্মীদের।
এক কাপ চায়ের দাম ১৫ লক্ষ টাকা
এদিন ভবানীপুরে মদন মিত্রের স্লোগান ছিল এক কাপ চায়ের দাম ১৫ লক্ষ টাকা। তিনি বলেছেন, এমন চা আমেরিকার প্রেসিডেন্টও খাওয়াতে পারেননি। তবে মোদীজি এখন ভারতবাসীকে খাওয়াচ্ছেন। মদন মিত্র বলেছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। ব্রিটেনের রাজকুমার কিংবা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যে চা খেতে পারেন না, সেই চা মোদীজি দিয়েছেন। এক কাপ চায়ের দাম ১৫ লক্ষ টাকা।
কেন এই কর্মসূচি
এলাকার বিধায়ক না হলেও যুগের পর যুগ ধরে এলাকার বাসিন্দা দলীয় অনুগামীদের নিয়ে জমায়েত করেছিলেন ভবানীপুরে। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের উদ্দেশ্য নিয়ে। মদন মিত্র-সহ অন্য নেতা-কর্মীরা মোদীর মুখোশ পরেছিলেন। মোদীর মুখোশ পরেই চা বিক্রি করছিলেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী। মদন মিত্র স্মরণ করিয়ে দেনয় ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তৃণমূলের দাবি, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেছিলেন, বিদেশে যা কালো টাকা আছে, তাতে প্রত্যেক ভারতবাসীর অ্যারাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দিয়ে দেওয়া যাবে। মদন মিত্রের কথায়, প্রধানমন্ত্রী মোদীর (narendra modi) দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করতেই এত আয়োজন।
চা-বিক্রেতা ভাবমূর্তিকে হাতিয়ার করেন মোদী
মদন মিত্রের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী হতে গিয়ে মোদী চা বিক্রেতা ভাবমূর্তিকেই হাতিয়ার করেছিলেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, এদিন অনেক চাওয়ালা মোদী রাস্তায় নেমে পড়েছে। প্রসঙ্গত মদন মিত্র নিজে ছাড়াও, তাঁর পাশে থাকা অনুগামীরা সবাই নরেন্দ্র মোদীর মুখোশ পরেছিলেন। মদন মিত্র বলেন, তিনি চা নিয়ে বিজেপির অফিসে যেতে চান। যখন মিটিং চলবে, তখন যদি অনুমতি পাওয়া যায়, তাহলে সবাইকে তিনি ১৫ লক্ষ টাকার এক ভাঁড় চা খাওয়াবেন।
মদন মিত্রের মুখে বাবুল থেকে ত্রিপুরা
মদন মিত্র শুধু এদিন চা বিক্রিতেই থেমে থাকেননি, তিনি বাবুল সুপ্রিয়-র ফেসবুক পোস্ট নিয়েও মুখ খুলেছেন। এদিন তিনি বাবুল সুপ্রিয়কে তৃণমূলে যোগ দিতে পরোক্ষে আহ্বান জানিয়ে রাখলেন। মদন মিত্র বাবুল সুপ্রিয়-র উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, এত তাড়াতাড়ি আলবিদা কেন? এত সুন্দর আকাশ আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব আছে। এক মাঠে খেলবেন না অন্য মাঠে খেলুন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কি আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তৃণমূলে। তখন মদন মিত্র না বলেন। তিনি বলেন, তিনিও মধ্যে প্র্যাকটিসে ছিলেন না। অন্যদিকে ত্রিপুরা প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, সেখানে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল। , সেখানে খেলা হবে দিবস নয়, বিজয় দিবস পালিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভবানীপুরেই একের পর কর্মসূচি
দিন তিনেক আগে পেগাসাস ইস্যুতে রাস্তায় নেমেছিলেন মদন মিত্র। সেই সময় তাঁর চোখে ছিল কালো কাপড়, কালো ঘোড়ার পিঠে উঠেছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ঘোড়াটির নাম রানি। রানি অর্থাৎ লোকতন্ত্র। তিনি অভিযোগ করেছিলেন পেগাসাস লোকতন্ত্রের ওপরে আঘাত হেনেছে। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার স্বামী-স্ত্রীর ঘরেও আড়ি পাতছে। এর আগে ভবানীপুরে মদন মিত্র রিক্সা টেনে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেছিলেন, একটি দল রামের নামে তলোয়ার চালাচ্ছে আর তৃণমূল রিক্সাচালককে রিক্সায় বসিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এই কর্মসূচিতে রিক্সাচালককে দেওয়া হয়েছিল নতুন পঞ্জাবি। এর আগে কামারহাটির বিধায়ককে কখনও সাইকেল চালিয়ে আবার কখনও গরুর গাড়িতে চড়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে।
তৃণমূলের সাম্রাজ্য বিস্তারে ত্রিপুরায় যাচ্ছেন অভিষেক! ভিনরাজ্যে ভিত গড়তে নয়া কৌশল