প্রশান্ত কিশোর-শারদ পাওয়ার সাক্ষাতের পরও
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরের আগে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর তিন-তিনবার শারদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁদের বৈঠক নিয়ে কম চর্চা হয়নি। তারপর প্রশান্ত কিশোর রাহুল গান্ধীর বাসভবনে গিয়ে গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাতেও নানা গুঞ্জন, নানা জল্পনার বাতাবরণ তৈরি হল জাতীয় রাজনীতিতে।
শারদ পাওয়ারের সঙ্গে মমতার বৈঠক হল না
প্রশান্ত কিশোরের ওই বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে গিয়ে বিরোধী ঐক্যের সলতে পাকানোর কাজ শুরু করেন। সেই কাজে তিনি সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও আরও তিনজন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, বৈঠক করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও কানিমোঝির সঙ্গেও। কিন্তু শারদ পাওয়ার আশ্চর্যজনকভাবে তালিকায় রইলেন না।
কেন সাক্ষাৎ হল না শারদ-মমতার, জল্পনা
কেন শারদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। নানা গুঞ্জনও ছড়িয়েছে শারদ পাওয়ারকে নিয়ে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন শারদ পাওয়ার। তাতে আরও জল্পনা বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি বিজেপি-বিরোধী ঐক্য গড়ার মিশন থেকে সরে যাচ্ছেন পাওয়ার?
পাওয়ারকে কি এবার বিরোধী ঐক্য গঠনে সক্রিয় হতে দেখা যাবে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য শারদ পাওয়ার নিয়ে সব জল্পনার অবসান করে দিয়েছেন। তিনি জানান, শারদ পাওয়ারের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ না হলেও, তাঁর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। তবে মমতা জানাননি তাঁর সঙ্গে কী কথা হয়েছে। তবে মমতা দিল্লিতে গিয়েও শারদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করায়, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। শারদ পাওয়ারকে কি এবার বিরোধী ঐক্য গঠনে সক্রিয় হতে দেখা যাবে, সেই প্রশ্নও উঠে পড়েছে এবার।
পাওয়ার-মোদী সাক্ষাতের নেপথ্যে কোনও সমীকরণ
প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সহমত পোষণ করে শারদ পাওয়ার বলেছিলেন, বিরোধী ঐক্য গড়তে কংগ্রেসের প্রয়োজন। তারপর শারদ পাওয়ার মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরই নিষ্ক্রিয় বিরোধী ঐক্য গঠন নিয়ে। শারদ পাওয়ারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাতের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও সমীকরণ ছিল কি না তা অজানাই, কিন্তু শারদ পাওয়ারের হঠাৎ নিষ্ক্রিয়তা অনেক ভাবনার জন্ম দিচ্ছে।
বিরোধী জোটকে আটকাতে পাওয়ারই কি ঘূঁটি
রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, আগামী দিনে শারদ পাওয়ার রয়েছেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধী জোটকে আটকাতে শেষমেশ এই মস্ত চালটা দিতে পারেন। তাহলে বিরোধী জোটকে ছত্রখান করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শারদ পাওয়ারকে নিষ্ক্রিয় করে দিলে বিরোধী ঐক্য মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
বিজেপি-বিরোধী তকমা গায়ে লাগাতে চান না?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী ঐক্যের সলতে পাকাতে দিল্লিতে রইলেন পাঁচ দিন। এই পাঁচ দিনের মধ্যে শারদ পাওয়ার একদিনও মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারলেন না। তিন্তাহলে কী চাইছেন প্রবীণ ওই রাজনীতিবিদ। তবে কি তিনি কোনও বিশেষ কারণে চাইছেন না বিজেপি-বিরোধী তকমা গায়ে লাগাতে?
শারদ পাওয়ারকে ঘিরে ক্রমশই রহস্য দানা বাঁধছে
প্রশান্ত কিশোরেরই বা তিন বার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করতে হল কেন, তবে কি তিনি অন্য কোনও পথ নিতে চলেছেন ২০২৪-এর নির্বাচনের আগে। শারদ পাওয়ারকে ঘিরে ক্রমশই রহস্য দানা বাঁধছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সফরে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারপর তিনি বিরোধী-জোটের বৈঠকেও প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
পাওয়ার-রহস্যের উন্মোচন হলেই বিরোধী ঐক্যের পথ চলা মসৃণ
যদিও বিরোধী ঐক্যের সলতে পাকাতে গিয়ে প্রথম দুদিন জোট-বৈঠকে তৃণমূলের গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্ত মমতা-সোনিয়া বৈঠকের পর সেই বিতর্কের অবসান হয়েছে। তৃণমূলের সৌগত রায় গিয়েছেন ১৮ বিরোধী দলের বৈঠকে। কিন্তু প্রশ্ন এখন শুধু শারদ পাওয়ারকে নিয়ে। এখন দেখার জল্পনা ও রহস্যের সেই জট খোলে কি না? পাওয়ার-রহস্যের উন্মোচন হলেই বিরোধী ঐক্যের পথ চলা মসৃণভাবে শুরু হবে। এবার বৈঠকে প্রাপ্তি শুধু কংগ্রেস-তৃণমূলের কাছাকাছি আসা।