বাইলসের বড় সিদ্ধান্ত
রিও অলিম্পিকে চারটি সোনা জিতেছিলেন সিমোন বাইলস। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যক্তিগত অল অ্যারাউন্ডও। গতকাল মহিলাদের দলগত অল অ্যারাউন্ডে ভল্টে খারাপ স্কোর করার পর সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বাইলস। পরে তিনি জানান, চোট নয়, মানসিক কারণেই তিনি এই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মানসিক স্বাস্থ্য কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে না থাকায় তিনি খেলা চালিয়ে গেলে দেশকে যাতে পদক হাতছাড়া করতে না হয় সেই কারণেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। যদিও ২০১২ ও ২০১৬-র অলিম্পিকে দলগত সোনা জয়ের পর এবার আর হ্যাটট্রিক করতে পারেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটি সোনা জেতায় রুপো পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাইলসের দেশকে। তা সত্ত্বেও সতীর্থরা যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে রুপো নিশ্চিত করেছেন তা যথেষ্ট গর্বের বলেও জানান বাইলস।
মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিতেই
ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলিতে নামবেন কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন বাইলস। বিশ্রাম নিয়ে মানসিকভাবে আর শক্ত হতে। কিন্তু এদিনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্ট দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের অল অ্যারাউন্ডের ব্যক্তিগত ইভেন্টে তিনি নামবেন না। অর্থাৎ নিজের সোনা ধরে রাখা হচ্ছে না বাইলসের। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে বাইলস মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও ফোকাস রাখতে কাল ব্যক্তিগত অল অ্যারাউন্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী সপ্তাহের বাকি ইভেন্টগুলিতেও তিনি নামবেন কিনা তা প্রতিদিন যাচাই করে দেখার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোয়ালিফিকেশনে স্কোরের নিরিখে নবম স্থানে থাকা জেড ক্যারে বাইলসের পরিবর্তে ফাইনালে নামবেন। বাইলসের সাহসী সিদ্ধান্তকে কুর্নিশও জানিয়েছে ইউএসএ জিমন্যাস্টিক্স। বলা হয়েছে, নিজের ভালো থাকাকে প্রাধান্য দিয়ে বাইলস যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই সাহস আরও একবার প্রমাণ করল কেন তিনি সকলের কাছে রোল মডেল। প্রতি দেশের ২ জন ফাইনালে ওঠার সুযোগ পাওয়ায় বাইলস ও সুনিসা লি-র চেয়ে পিছিয়ে থাকা জেড ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। তবে বাইলস সরতেই খুলে গেল তাঁর ভাগ্য।
বিশেষ পদক্ষেপ আইওসি-র
এরই মধ্যে টোকিও অলিম্পিকে অ্যাথলিটদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করেছে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি। আইওসি মুখপাত্র মার্ক অ্যাডামস জানিয়েছেন, মেন্টালি ফিট হেল্পলাইন দিনের ২৪ ঘণ্টাই চালু রয়েছে এবং গেমস শেষের পরও তিন মাস ধরে তা রোজ চালু থাকবে। ক্লিনিক্যাল সাপোর্ট, সুপরিকল্পিত শর্ট-টার্ম কাউন্সেলিং, প্র্যাকটিক্যাল সাপোর্ট-সহ বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে এই হেল্পলাইনে। তবে বাইলসের সিদ্ধান্ত যে আইওসি-কে অস্বস্তিতে ফেলেছে এটা মানছেন অনেকেই। কোনওভাবে হেনস্থা বা কু-কথার শিকার যাতে কোনও অ্যাথলিটকে হতে না হয় সেদিকেও সতর্ক নজর রাখছে আইওসি।