প্রশান্ত কিশোরকে নেপথ্যে রেখে ত্রিপুরা-বিজয়ে তৃণমূল
একুশের যুদ্ধ-জয়ের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভিন-রাজ্যে সাম্রাজ্য বিস্তারে মন দিয়েছেন। তিনি দিন কয়েকের মধ্যে ত্রিপুরা পাড়ি দেবেন। ইতিমধ্যে মুকুল রায় ফিরে এসেছেন তৃণমূলে। ফলে তাঁর পুরনো যোগাযোগ নিয়ে তৃণমূল সংগঠন বাড়াতে সক্ষম হবে ত্রিপুরায়। আর অভিষেক যে প্রশান্ত কিশোরকে নেপথ্যে রেখে ত্রিপুরা-বিজয়ে বেরোবেন, তা নিয়েও জল্পনা ছিল।
তৃণমূলকে শক্তিশালী করে তুলবে টিম প্রশান্ত কিশোর
সেই জল্পনাকে সত্যি করে প্রশান্ত কিশোরের টিম পা রেখেছে ত্রিপুরায়। বাংলার মতোই ত্রিপুরার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে তৃণমূলকে শক্তিশালী করে তুলবে টিম প্রশান্ত কিশোর। সেই লক্ষ্যে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর ঘূঁটি সাজাচ্ছেন। তারপর মুকুল রায় ও প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক যদি এক হয়, তবে ত্রিপুরা বিজয় যে সহজলভ্য হবে, তা বলাই যায়।
প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায় তৃণমূলের শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা
তৃণমূল আভাস দিয়েছিল, বাংলায় তাঁরা রেকর্ড সংখ্যক ২১৩ আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তারপর মুকুল রায় যোগ দেওয়ায় কার্যত আরও একজন বিধায়ক সংযুক্ত হয়েছে তার সঙ্গে। ফলে এই মুহূর্তে বাংলায় আর বিধায়ক সংখ্যা বাড়ানোর দিকে বিশেষ চিন্তা নেই তৃণমূলের। এবার প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায় তৃণমূল শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
মুকুল-যোগে ত্রিপুরায় প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চাইছে তৃণমূল
ত্রিপুরাকে আগেও একবার সংগঠন বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু করেছিল তৃণমূল। মুকুল রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সংগঠন বাড়িয়ে ছিল অনেকটাই। তারপর মুকুল রায়ের বিজেপি-যোগে ত্রিপুরা সংসগঠন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে বিজেপির জয়যাত্রা শুরু হয়। এবার মুকুল রায়কে নিয়েই সেই সংগঠন ফিরিয়ে ত্রিপুরায় ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চাইছে তৃণমূল।
মুকুল ছাড়াও প্রশান্ত কিশোর জাল বিছোচ্ছেন ত্রিপুরায়
এরপর প্রশান্ত কিশোর যদি ত্রিপুরায় জাল বিছোন, তবে বিজেপির পক্ষে গড় রক্ষা করা মুশকিলই হবে। এমনিতেই ত্রিপুরা বিজেপির ভঙ্গুর অবস্থা। বিধায়কদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যক বেঁকে বসে রয়েছে। তাঁরা যদি টার্ন নেন তৃণমূলের দিকে ফলে টলমল অবস্থা হয়ে যাবে বিজেপি সরকারের। তৃণমূলের অবশ্য এখনই বিজেপি সরকার ভাঙার ইচ্ছা নেই। তাঁরা আগে ঘর গুছিয়ে নিতে চাইছে, তারপর বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই ২০২৩-এর নির্বাচনে।
যোগ দিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার কর্মী, উৎসাহী তৃণমূল
ত্রিপুরায় তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি ও বাম দলগুলি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার কর্মী। এই যোগদানে উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্ব। তারপর নিয়মিত যোগদান চলছে নিচুস্তরে। এরপর মেগা যোগদান হলে বিজেপি সরকার সংকটে পড়ে যাবে।
মমতা কলকাতায় বৈঠক করবেন, ত্রিপুরা যাবেন অভিষেক
মুকুল-ঘনিষ্ঠ সুদীপ রায়বর্মন ও তাঁর অনুগামী তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা চলছে। তা হলে ত্রিপুরার রাজনৈতিক চিত্র রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যাবে। একুশে জুলাই ত্রিপুরা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস যে সাড়া পেয়েছে, তাতে আরও উৎসাহী হয়ে উঠেছে নেতৃত্ব। শীঘ্রই ত্রিপুরার নেতৃত্বকে নিয়ে কলকাতায় বৈঠক করবেন মমতা। তারপর ত্রিপুরা যাবেন অভিষেক।
পিকের টিমের তরফে বার্তা পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরা তৃণমূলে
ত্রিপুরার মানুষের আবেগ দেখে প্রশান্ত কিশোরের টিমকেও পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশান্ত কিশোরের টিম ত্রিপুরায় জাল বিছিয়মে মানুষের মন বোঝার চেষ্টা চালা্চ্ছে। তারপর শুরু হবে ত্রিপুরা-বিজয় অভিযান। তৃণমূল হোম-ওয়ার্ক শুরু করে দিয়েছে। পিকের টিমের তরফে বার্তা পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরার রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের কাছে।