কোভিড মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট ভিত্তিহীন ও মিথ্যা, স্পষ্ট দাবি কেন্দ্র সরকারের

‌সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে ভারতের কোভিড–১৯ মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যানকে তুলে ধরা হয়নি। দেশে যে পরিমাণ মৃত্যু দেখানো হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এই মারণ করোনা ভাইরাসে মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের এই রিপোর্টকে খারিজ করে সরকার জানিয়েছে যে অতিরিক্ত মৃত্যুগুলিকেও কোভিড মৃত্যু বলে অনুমান করা হয়েছে রিপোর্টে যা সত্যের ওপর ভিত্তি করে হ্যনি এবং সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা।

সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট মিথ্যা

এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে জোরালো ও আইন-ভিত্তিক মৃত্যুর রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সংক্রমক রোগের নীতি ও পরিচালনার ভিত্তিতে কিছু কেস সনাক্তের বাইরে চলে যায় তবে মৃত্যুর সংখ্যা সনাক্ত করা হয়নি এমনটা হয়নি। মন্ত্রক তার বিবৃতিতে বলেছে, সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে মহামারির সময় অতিরিক্ত লক্ষাধিক মৃত্যু হয়েছে, যা সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি।

সরকারের ব্যাখা

এই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে উদ্ধৃত করে কিছু সাম্প্রতিক সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির বয়স-নির্দিষ্ট সংক্রমণের মৃত্যুর হার সেরো পজিটিভিটির ভিত্তিতে ভারতে অতিরিক্ত মৃত্যুর গণনা করতে ব্যবহার করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মৃত্যুর ‌অনুমান একটি দুঃসাহসিক ধারণার ওপর করা হয়েছে, যেমন কোনও সংক্রমণ ব্যক্তির মৃত্যুর সম্ভাবনা পুরো দেশে সমান, বিভিন্ন প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষ কারণে যেমন বংশবদ্ধি, জাতীয়তা, জনসংখ্যার জিনোমিক সংবিধান, আগের কোনও রোগ, জনসংখ্যার মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশ, অতীতের ঝুঁকির মধ্যেকার পরস্পর ক্রিয়াকে খারিজ করে এই অনুমান করা হয়।'‌ এছাড়াও সেরো-প্রিভালেন্স সমীক্ষার প্রয়োগ কেবলমাত্র দুর্বল জনসংখ্যার মধ্যে সংক্রমণের তীব্রতা রোধের জন্য রণনীতি ও উপায় বের করার জন্য শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয় না, বরং বরং মৃত্যুর অতিরিক্ত ক্ষেত্র হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।

সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট ভিত্তিহীন

এই সমীক্ষায় আরও একটি উদ্বেগের কথা বলা হয়েছে যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডি টিটার্স হ্রাস পেতে পারে এবং সংক্রমণের হার বাড়ার পাশাপাশি তা মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়াতে পারে। তবে সরকার জানিয়েছে যে এই ধরনের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট একেবারে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ভারত কনট্যাক্ট-ট্রেসিং কৌশলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত উপসর্গ বা উপসর্গহীন প্রাথমিক কনট্যাক্টের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হচ্ছে। সত্যিকারের সনাক্ত হওয়া কেসগুলি আরটি-পিসিআরে টেস্টের পরই পজিটিভ বলে মানা হয়, এই কোভিড-১৯ টেস্টের মানদণ্ড যথেষ্ট ভালো।

৪৯ লক্ষের করোনায় মৃত্যু

প্রসঙ্গত, ওয়াশিংটনের একটি সংস্থার নতুন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ভারতে এই মহামারিকালে অতিরিক্ত মৃতের সংখ্যা ৪৯ লক্ষ পর্যন্ত হতে পারে। সরকারি তথ্যে যে মৃতের সংখ্যা আছে, তার থেকে আরও অনেক বেশি মৃত্যু হতে পারে বলে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, করোনার কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪.২ লক্ষ জনের। গত এপ্রিল ও মে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট আসার পর থেকে করোনা সংক্রমণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। শুধুমাত্র মে মাসেই ভারতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি হিসাবে এই তথ্য উঠে এলেও বাস্তবে কিন্তু অনেকটাই বেশি। কারণ অনেকেই বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়নি। তাঁদের মতে, মৃতের সংখ্যা সঠিক নির্ধারণের জন্য অডিটের প্রয়োজন রয়েছে।

কোভিডের প্রকৃত তথ্য গোপনা করা হচ্ছে না

তবে রাজ্য সভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য কোভিড-১৯ মৃত্যুর প্রকৃত্য তথ্য গোপন করা হচ্ছে এ ধরনের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে এবং জানিয়েছে যে রাজ্য সরকার যে তথ্য পাঠায় কেন্দ্র সরকার সেটাই কেবলমাত্র সংকলন ও প্রকাশ করে। তিনি বলেন, ‘‌আমাদের কাজ তথ্য প্রকাশ করা আর কিছু নয়। আমরা কাউকে মৃত্যুর সংখ্যা বা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে বলিনি। এর কোনও কারণ নেই। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী একই কথা বলেছিলেন।'‌ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বারংবার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশিকা অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা রেকর্ডের জন্য বলেছে। তিনি আরও বলেন, ‘‌করোনার তৃতীয় ওয়েভকে আটকাতে গেলে, দেশের ১৩০ কোটি মানুষ, সাধারণ মানুষ, সমস্ত রাজ্য সরকারকে মিলে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমরা তৃতীয় ওয়েভকে আমাদের দেশে আঘাত করতে দেব না।'‌

জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!

More CORONAVIRUS News  

Read more about:
English summary
media reports on covid 19 death are baseless and fallacious claim by the central government