বজ্রপাতের সংখ্যা ও ফ্রিকোয়েন্সির প্রবণতা বৃদ্ধি
সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠছে এসেছে বজ্রপাতের সংখ্যা ও ফ্রিকোয়েন্সির প্রবণতা বৃদ্ধি নিয়ে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং নগরায়ণের ফলে এই ধরনের প্রবণতা বাড়ছে প্রকৃতিতে। গবেকরা ওই দুয়ের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
দ্রুত নগরায়ণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে বজ্রপাত আরও ঝুঁকিপূর্ণ
গত বছরের মার্চ থেকে এ বছরের এপ্রিলের মধ্যে বজ্রপাতে প্রায় ১৬৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এমন ক্রমবর্ধমান বজ্রপাতের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে চলেছে অবিরত, ফলে বিশ্বজুড়ে আরও বজ্রপাত হতে পারে। দ্রুত নগরায়ণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি বজ্রপাতকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছেন বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের যে সব রাজ্যে বজ্রপাত সম্প্রতি সাংঘাতিক রূপ নিয়েছে
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ এবং পুদুচেরিতে বজ্রপাতের ঘটনা হঠাৎ প্রসার লাভ করেছে। পঞ্জাবে এ বছর বজ্রপাতে ৪০১ জন মানুষ প্রাণ হারান। বিহারে ১৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বজ্রপাতের পরিমাণ। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এখন বজ্রপাতও তালিকাভুক্ত হয়েছে।
শতাব্দী শেষে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বজ্রপাত
২০১৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়লে বজ্রপাতের ফ্রিকোয়েন্সি কমপক্ষে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। জলবায়ু রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান জার্নালে শীঘ্রই প্রকাশিত একটি কাগজেও সতর্ক করে দিয়েছিল যে, ভারতে বজ্রপাতের ফ্রিকোয়েন্সি প্রতিবছর ১০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শতাব্দীর শেষে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
২০১৯-এর ১ এপ্রিল থেকে বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া শুরু
তবে বজ্রপাতের বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে ভারতের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। বজ্রপাতের মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আইএমডি ২০১৯-এর ১ এপ্রিল থেকে বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া শুরু করেছিল। জলবায়ু প্রতিরোধক-ব্যবস্থা প্রচার কাউন্সিল বা সিআরওপিসি জাতীয় বহু সংস্থার যৌথ উদ্যোগ বজ্রপাত প্রতিরোধ অভিযান চলছে। বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ, আইএমডি, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান মন্ত্রক এবং অন্যান্যরা ২০২২ সালের মধ্যে এক বছরে বজ্রপাতে মৃত্যু ১২০০-র কম করার লক্ষ্য নিয়েছে।