প্রধনমন্ত্রীর শোকপ্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে লেখেন, ‘চেম্বুর ও ভিখরোলিতে দেওয়াল ধসে পড়ার ঘটনায় আচমকা প্রাণহানিতে শোকাহত। এই দুঃখের মুহূর্তে আমার চিন্তাভাবনা শোকস্তব্ধ পরিবারের সঙ্গে। আহতদের দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার প্রার্থনা করছি।' জানা গিয়েছে, ১৭ ও ১৮ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী রাত ১টার সময় মুম্বইয়ের চেম্বুরের ভাসিনাকা এলাকায় এখটি বাড়ির দেওয়াল ধসে পড়ে এবং তাতে ১৭ জন মানুষ প্রাণ হারান। জাতীয় বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনীর (এনডিআরএফ) পক্ষ থেকে জানানো হয় যে ভূমি ধসের ফলে দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। উদ্ধার কাজ চলছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ভিখরোলিতে দেওয়াল ধসে পড়েছে
ভিখরোলিতে একই ধরনের ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ জন। মুম্বইয়ের শহরতলির ভিখরোলিতে ভোররাত আড়াইটের সময় পাঁচিল ধসে পড়ে পাঁচটি কুঁড়েঘরের ওপর এবং এতে তিনজন কুঁড়েঘরের বাসিন্দার মৃত্যু হয়। ২ জন আহত হয়েছেন এবং তাঁদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এনডিআরএফের ডেপুটি কম্যান্ডান্ট আশিষ কুমার বলেন, ‘তিনজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং মুম্বইয়ে অবিরত বৃষ্টির ফলে ভিখরোলি এলাকায় বহুতলের দেওয়াল ধসে পড়ার ভগ্নস্তুপের মধ্যে আরও পাঁচ-ছয়জনের দেহ আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।'
লাল সতর্কতা জারি আইএমডির
রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মধ্য ও পশ্চিম উভয় শহরতলীর ট্রেন পরিষেবা বাণিজ্য নগরীতে বন্ধ রাখা হয়েছে কারণ রাতভর ভারী বৃষ্টিতে রেললাইনে জল জমে গিয়েছে। এই ভারী বৃষ্টি কিছু মুম্বইবাসীকে ২৬ জুলাই ২০০৫ সালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, সেই সময় ৯৪৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছিল মুম্বইতে। আইএমডি এই ভারী বৃষ্টির জেরে বাণিজ্য নগরীতে লাল সতর্কতা জারি করে দিয়েছে। আইএমডি রবিবার খুব ভোরে এক বুলেটিনে জানিয়েছেন যে আচমকা আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে গত ৬ ঘণ্টায় মুম্বই সাক্ষী থেকেছে ১০০ এমএম বৃষ্টিপাতের। যে কারণে এই শহরে কমলা থেকে লাল সতর্কতায় পরিবর্তন করা হয়েছে। আইএমডি জানিয়েছে রবিবার সকাল সাড়ে ছ'টা পর্যন্ত মুম্বই ও সংলগ্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টায় ১২০ এমএম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আইএমডি এও জানিয়েছে যে মুম্বইয়ের কিছু এলাকায় ‘ভারী থেকে অতিভারী' বৃষ্টিপাত' এবং অতিরিক্ত ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে কিছু প্রত্যন্ত এলাকায়। অতিরিক্ত ভারী বৃষ্টিপাতের অর্থ ২৪ ঘণ্টায় ২০৪.৫ এমএম-এর বেশি বৃষ্টিপাত এবং ভারী বৃষ্টির অর্থ ১১৫.৬ এমএম থেকে ২০৪.৪ এমএম-এর মধ্যে বৃষ্টি হবে। বুলেটিনে বলা হয়েছে, আইএমডি সান্তাক্রুজে ২১৩ এমএম, বান্দ্রায় ১৯৭.৫ এমএম ও কোলাবাতে ১৭৪ এমএম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
বন্ধ একাধিক ট্রেন পরিষেবা
রবিবারের ভারী বৃষ্টির কারণে রেললাইনে জল জমে যাওয়ার জন্য পশ্চিম রেল শহরতলির একাধিক এলাকায় ট্রেন পরিষেবা বাতিল করে দিয়েছে। অন্যদিকে মধ্য রেলের পক্ষ থেকে দাদার, পারেল, মাতুঙ্গা, কুর্লা, সিওন, ভান্ডপ ও অন্যান্য এলাকায় সিএসএমটি ও থানের মেইন লাইনের মধ্যেকার ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ জল জমে গিয়েছে রেললাইনে। রেললাইনে জল জমার প্রভাব পড়েছে মধ্য ও পশ্চিম উভয় রেলের একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে। প্রসঙ্গত, মহামারির আগে মধ্য ও পশ্চিম রেল তিন হাজারের বেশি শহরতলিতে ৭৫ লক্ষের বেশি যাত্রীদের পরিষেবা দিয়ে এসেছে। কিন্তু মহামারির কারণে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা ও সরকারি কর্মীদের জন্য ট্রেন পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।