'ও' গ্রূপের রক্তধারীদের অধিক দংশন মশার?
বাংলায় এগিয়ে এল বর্ষার সময়। এহেন পরিস্থিতিতে অলিগলিতে জমা জলে জন্ম নেয় লক্ষ লক্ষ মশার সন্তান। মশার কামড়ে শরীরের যত্রতত্র লাল ফোলা ফোলা দাগ, সঙ্গে দোসর চুলকানি। নাগরিকদের মনে এই প্রশ্ন বারংবার উঁকি দিয়েছে যে "আমাকেই কী এতো বেশি মশা কামড়ায়?" প্রশ্নের উত্তর যে হ্যাঁ হতে পারে, তা স্পষ্ট করেছে টাইম ম্যাগাজিনের ২০১৪ সালের প্রতিবেদন। 'ও' গ্রূপের রক্তধারীদের মশা কামড়ানোর সম্ভাবনা বেশি, এক গবেষণা অনুযায়ী জানা গিয়েছিল এমনটাই।
ল্যাকটিক অ্যাসিডে আকৃষ্ট মশা
'এ' বা 'বি' গ্রূপের থেকে 'ও' গ্রূপের রক্তের মানুষদের মশা কামড়ায় বেশি, এক গবেষণা মারফত এমনই তথ্য সামনে এনেছিলেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতঙ্গ ও মশা বিশেষজ্ঞ ডঃ জোনাথন ডে। ডঃ ডের মতে, "মানুষের চামড়া থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড সহ অন্যান্য জৈবরস নিঃসৃত হয়। এই যৌগগুলি মূলত পতঙ্গকে আকৃষ্ট করে। যাঁদের দেহের উপরিভাগে ল্যাকটিক অ্যাসিডের আনাগোনা বেশি, তাঁদের মশা কামড়ায় অধিক।"
কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাধ্যমে শিকার খোঁজে মশা
মশকী সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডঃ ডে আরও জানান, "মানুষ সহ অন্যান্য সকল জীব অক্সিজেন টেনে নেয় ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে ছাড়ে। মশা এই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পথ অবলম্বন করে শিকার খুঁজে নেয়। ফলে যাঁদের শ্বাসপ্রশ্বাসের মাত্রা অধিক, তাঁদের মশা বেশি কামড়ায়।" অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং অতিরিক্ত ওজনধারী ব্যক্তিদের মেটাবলিক রেট বেশি হওয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের হার বেশি, ফলে তাঁদের মশা সহজ শিকার হিসেবে বেছে নেয়।
ভাগ্যিস মশা করোনা বহন করে না!
বর্ষা বাড়ার সাথে সাথেই ভনভন করতে শুরু করে মশার দল। মশাবাহিনীর তান্ডবে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু, চিকেনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো নানা রোগ। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে এইসকল রোগ আগের মতো ঘাতক না হলেও, সময় মতো চিকিৎসা না করালে রোগীর প্রাণ কেড়ে নিতে পারে একটিমাত্র মশা! করোনা ভাইরাস বহনের ক্ষমতা মশার নেই, করোনা ও মশার যোগসাজশের বিষয়ে হু এবং মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রক ও প্রতিরোধক বিভাগের মতামত এমনই।