মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা কী বলছে?
নয়া গবেষণায় জানা যাচ্ছে যে পৃথিবীর পরিবেশের ওপর চরম প্রভাব ফেলতে শুরু করে দিয়েছে চাঁদ। চাঁদেরক মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর জলবায়ুতে ভয়াবহ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তিই কার্যত সমুদ্রের জলস্তর বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উপকূল এলাকায় ২ ফুটের বেশি জলরাশি!
'নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নাল' এ ২১ জুনের প্রকাশিত রিপোর্টে নাসার তরফে ভয়াবহ বার্তা দেওয়া হয়েছে। নাসা জানাচ্ছে ' নুইস্যান্স ফ্লাড' নামের এই জাতীয় বন্যা বর্তমানে শুধু উপকূলবর্তী এলাকায় দেখা যায়। যার জেরে জলরাশি ২ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়।
২০৩০ সালে কী ঘটতে পারে?
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে এই নুস্যান্স ফ্লাড বা বন্যা ২০৩০ সালে ঘনঘন হবে। যা অতীতের রেকর্ড ভেঙে চুরমার করবে । ফলে 'ডুমস ডে' ঘিরে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ! বলা হচ্ছে ২০৩০ সালে আচমকাই জলস্তর বেড়ে এমন রেকর্ড ভাঙা বন্যা আসতে পারে।
নেপথ্য নায়ক কি চাঁদ!
বিজ্ঞানীদের দাবি, ২০৩০ সালের এই সম্ভাব্য ঘটনার নেপথ্যে থাকছে চাঁদ। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ততদিন কয়েকগুণ বেড়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বিশ্ব জুড়ে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণে জোয়ারের সময় জলস্তর বেড়ে যাবে ৩ থেকে ৪ গুণ। ফলে ভেসে যেতে পারে সমুদ্র সংলগ্ন বহু এলাকা।
আসছে কোন আশঙ্কার দিন?
নাসার আধিকারিক বিল নেলসন বলছেন, ইতিমধ্যেই জলস্তর বিশ্বের বহু এলাকায় বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সমুদ্রের নিকটবর্তী জায়গায় জলস্তর বাড়তে দেখা যাচ্ছে। তাঁর আশঙ্কা পরিস্থিতি আগামী দিনে আরও খারাপ হতে পারে।
সারা বছর ধরেই বানভাসী হবে বিশ্ব!
নাসার সাম্প্রতিক গবেষণায় ২০৩০ সালের যে নুস্যান্স ফ্লাডের কথা বলা হয়েছে, তাতে সাফ জানানো হয়েছে যে ধীরে ধীরে পৃথিবীর জলবায়ুর ওপর চাঁদের মাধ্যাকর্ষণের গভীর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। তবে এই সমুদ্র তীরবর্তী বিশেষ ধরনের বন্যা সারা বছরই যে ঘটবে তা নয়। এটি একটি বছরে ঘন ঘন দেখা যাবে। তবে সারা বছরই বন্যার পূর্বাভাস আপাতত নেই।
পরিস্থিতি কেন মারাত্মক হতে পারে?
নাসার তরফে যে গবেষণা থেকে এই তথ্যগুলি জানা যাচ্ছে তার মূল কারিগর বিজ্ঞানী ফিল থম্পসন। তিনি জানাচ্ছেন, সমুদ্রের জলরাশির মধ্যে চাঁদের 'ওবল' কার্যত জলস্তরের উচ্চতা বাড়াচ্ছে , তবে পৃথিবীর পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব পরিস্থিতিকে আরও মারাত্মক করছে। ফলে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নিয়ে সতর্ক হওয়ার বার্তা আরও জোরালো হচ্ছে।
চাঁদের 'ওবল' কেন উদ্বেগের বিষয় !
প্রসঙ্গত, চাঁদের কক্ষপথের 'ওবল' অর্থাৎ চাঁদের কক্ষপথের মধ্যে চাঁদের চলার পথের অস্থিরতা। এর হাত ধরে চাঁদ ও পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের ফারাকের তারতম্য ঘটে যায়। যার প্রভাবে পৃথিবীর বিষয়বস্তুর ওপর চাঁদের মাধ্যাকর্ষণের ক্ষেত্রেও তারতম্য ঘটে যায়। এরফলেই পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে যায়। যার ফলস্বরূপ চাঁদের আকর্ষণের তেজ বাড়তে শুরু করতে পারে। আর এই আশঙ্কাতেই বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে নাসা। প্রসঙ্গত চাঁদে কক্ষপথের 'ওবল' ১৮.৬ বছর ধরে চলতে পারে বলে মনে করা হয়।