মারাদোনার জন্য
অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি আক্ষেপ করছেন দিয়োগো মারাদোনার জন্য। গত বছর ২৫ নভেম্বর প্রয়াত হন। ফুটবলের রাজপুত্রের উত্তরাধিকার বহন করছেন মেসি। তাই অনেকেই বলছেন, আজ মারাকানার গ্যালারিতে নিশ্চিতভাবেই থাকতেন দিয়েগো মারাদোনা। দেশের হয়ে মেসির প্রথম কাপ জয়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন সেই মানুষটিই।
মেসির জন্য
অনেকে আবার এমন ছবিও শেয়ার করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে আকাশ থেকেই মেসিদের চিয়ার-আপ করছেন দিয়েগো, যেমনটা করতেন গ্যালারিতে বসে। মারাদোনার দেশের জন্য সেই আবেগের ছবি ফুটে উঠেছে শিল্পীর কল্পনায়।
মিশন বিশ্বকাপ
কাতারে ফিফা বিশ্বকাপ শুরু হতে আর ৫০০ দিনও বাকি নেই। আর্জেন্তিনা সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের ম্যাচ খেলবে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে। ক্লাব ফুটবলে সাফল্যের পর মেসি দেশের হয়ে অভিষেকের ১৬ বছর পর প্রথম মেজর ফাইনাল জিতলেন। চারবার ফাইনালে উঠে হারার পর। ২৮ বছর পর জিতল কোপা জয়ের খরা। আর্জেন্তিনার ভক্তরা প্রতীক্ষায় মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপ জয়ের খরা মেটার জন্য।
মেসি ও মারাদোনা
মেসির সঙ্গে মারাদোনার তুলনা হয় বারেবারেই। গোলের পর সেলিব্রেশনই হোক বা খেলার নানা মুহূর্তে। দেশের জন্য দুই কিংবদন্তি যে কতটা নিবেদিত তা নিয়ে সন্দেহ নেই। মারাদোনা যেমন একার কাঁধে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনাকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন তেমনভাবেই অধিনায়ক মেসিও এবারের কোপা আমেরিকায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। দলের ১২টি গোলের মধ্যে ৯টিতেই তাঁর অবদান। আজও গোলের সংখ্যা বাড়তেই পারত ৮৮ মিনিটে সহজতম সুযোগটি হাতছাড়া করায়।
মেসিই সেরা
লিওনেল মেসি আজ কতটা খুশি তা মারাকানাতেই দেখা গিয়েছে। এ তো স্বপ্নপূরণ। তাই চোখ দিয়ে নেমেছে আনন্দাশ্রু। কখনও বা বন্ধু নেইমারকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। মেসি মেতেছেন বাঁধনহারা উল্লাসে। সচরাচর যা করতে তাঁকে দেখা যায় না। চারটি গোল ও অ্যাসিস্টের সুবাদে মেসি পেয়েছেন সোনার বুট। টুর্নামেন্টের সেরা হিসেবে জিতে নিয়েছেন সোনার বলও। মেসিকে অনেকেই তুলনা করেছেন সুপারম্যানের সঙ্গেও। তবে মারাদোনার আশীর্বাদের বিষয়টি সকলকেই উল্লেখ করছেন।
বিশ্বকাপ কি পাবেন?
ফুটবল বিশ্বকাপ আগামী বছর। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পর্তুগাল বা আর্জেন্তিনা দলের সামগ্রিক যা অবস্থা তাতে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জয় হয়তো অধরাই থেকে যাবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বা লিওনেল মেসি-র কাছে। বিভিন্ন পুরস্কারে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই চললেও মেসি ও রোনাল্ডো দুজনেই বিশ্বকাপ হাতে ধরার সুযোগ পাননি এখনও। সামনের বিশ্বকাপেই শেষ সুযোগ। নাহলে রোনাল্ডোকে ইউরো আর মেসিকে কোপা জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। ফুটবল খেলাই হোক বা দেশের হয়ে সাফল্যের নিরিখে মেসির চেয়ে সেক্ষেত্রে এগিয়েই থাকবেন দিয়েগো মারাদোনা।
হতাশ ব্রাজিল ভক্তরা
আর্জেন্তিনার জয়ে মুষড়ে পড়েছেন ব্রাজিল ভক্তরা। আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রাজিল যেহেতু কখনও কোপা আমেরিকায় হারেনি ফলে নেইমার প্রথম কোপা ফাইনালেই কাপ জিতবেন বলে আশায় ছিলেন ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাজিল সমর্থকরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। কেউ লিখেছেন, যেভাবে দৈহিক শক্তি প্রয়োগ করে আজ আর্জেন্তিনা খেলল তা জার্মানিকে মনে করাল। কেউ লিখেছেন, আজ যেভাবে কার্ড দেখানো চলছিল তাতে হয়তো আর কিছু সময় দুই দলের গোলকিপার ছাড়া কেউই থাকত না। অফ সাউডে ব্রাজিলের গোল বাতিলও অনেকের হজম হয়নি। সবচেয়ে তাতিয়ে দিয়েছে নেইমারের কিছু ছবি। মাঠে নেইমার কাঁদছিলেন, মেসি গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। পরক্ষণেই মেসির পাশে বসে হাসতে দেখা যায় নেইমারকে। এই ছবি দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে মাঠে লোকদেখানো কান্নার দরকারটা কী ছিল? ব্রাজিল কোচ তিতে-র রণকৌশলও প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিশ্বকাপের আগে।
বিরাট কটাক্ষের শিকার
এরই মধ্যে ব্রাজিল ভক্ত ক্রিকেটপ্রেমীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জিতলেও বিরাট কোহলি অধিনায়ক হিসেবে এখনও বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাননি। সেটা নিয়েই অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন, বিরাট নিশ্চয়ই মেসিকে কোপা জিততে দেখে নিদাহাস ট্রফি বা এশিয়া কাপ না খেলার জন্য কান্নাকাটি করছেন। একজন আবার লিখেছেন, আমি আর্জেন্তিনার সমর্থক ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না। কারণ, তাঁরা ৩৫ বছর ধরে বিশ্বকাপ না জিতলেও আশা ছাড়ে না!