দাদায় অবাক দিদি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় চলতি বছরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখনও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে ছুটে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজও সৌরভকে তিনি বলেন, 'আমি এখনও বুঝে উঠতে পারিনি কী করে তোমার মতো স্পোর্টসম্যানের হার্ট অ্যাটাক হলো। হাঁটা কিন্তু একেবারে বন্ধ করো না। চিন্তা করবে না, কিচ্ছু হবে না তোমার।' সৌরভ বলেন, আমি এখন পুরো ফিট রয়েছিল। সৌরভকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অ্যান্টিবডি টেস্ট করাতে। সৌরভ বলেন, আমার করোনা হয়নি, দাদার হয়েছিল। তখন মুখ্যমন্ত্রী স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। রাজ্যে করোনা সংক্রমণ কমার পাশাপাশি রাজ্যের ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থার কথাও উঠে আসে ঘরোয়া আড্ডায়।
দিদিকে দাদার প্রশ্ন
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, আপনার এমন স্ট্যামিনার রহস্য কী, প্রতিদিন এতো মেসেজ আসে তার উত্তরই বা দেন কী করে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ট্রেডমিল করতে করতেই যাবতীয় মেসেজের উত্তর দিয়ে দিই।
পুজো নিয়ে
ঘরোয়া আড্ডায় উঠে আসে এবারের দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি তো চাই দুর্গাপুজো যাতে স্বাভাবিকভাবেই হয়। কিন্তু সবটাই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মা নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রণাম করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি জিজ্ঞাসা করেন বাড়িতে কী কী পুজো হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও রোজ বাড়িতে যেসব পুজো করেন সে কথাও জানান। আড্ডা চলাকালীন মা মঙ্গলচণ্ডী পুজোর প্রসাদ খান মুখ্যমন্ত্রী।
দুই কাপ চা
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রয়াণের সময়ও রাতে বেহালার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বাংলার দিদি-কে দাদা তাঁর বাড়ি ঘুরিয়ে দেখান। নিয়ে যান ট্রফি রুমেও। যেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট কেরিয়ারের নানা স্মারক রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শাড়ি ও মিষ্টি উপহার দেন মহারাজ। জন্মদিনের উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন দিদিও। তাঁকে আপ্যায়নের জন্য ছিল কচুড়ি, ঘুগনি, কেক, স্যান্ডউইচ, ফিশ ফ্রাই-সহ রকমারি মেনু। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী দুই কাপ চা আর প্রসাদের মিষ্টিই খান বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
বাঙালি মানেই বেড়াতে ভালোবাসেন। ব্যতিক্রমী নন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও। এদিনের আলোচনার অনেকটা জুড়েই ছিল হাঁটা আর বেড়ানোর প্রসঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমার পাহাড়ে যেতে খুব ভালো লাগে। আমি লন্ডন শহরও হেঁটে ঘুরেছি। এ প্রসঙ্গে মজার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, যখন হেঁটে বেড়ানোর পরিকল্পনা করি তখন আমার সঙ্গে অনেকেই হাঁটা শুরু করেছিলেন। যখন শেষ করছি তখন দেখি আমি একাই রয়েছি।

উপভোগ্য আড্ডা
সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবারের বিকেলে এই নিখাদ ঘরোয়া আড্ডা সেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বেহালা থেকে কালীঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন, তখন বললেন অনেকদিন বাদে এত ভালো আড্ডা হলো, খুব উপভোগ্য বিকেল কাটালাম।