মাও যোগ তত্ব সাজাতে সাইবার হানা ? তবে কী ফাঁসানো হয়েছিল স্ট্যান স্বামীকে? মৃত্যুর পরেও উঠছে প্রশ্ন

দিন যত গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে চাপ। মানবাধিকার কর্মী তথা ভারতের আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু ক্রমেই বাড়ছে ধোঁয়াশা। শারীরিক অসুস্থতা ও করোনা পরবর্তী জটিলতার জেরে সোমবার দুপুরে মু্ম্বইয়ের একটি হাসাপাতালে এই অশীতিপর সমাজকর্মী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেও স্বামীর মৃত্যুকে 'রাষ্ট্রীয় খুন’ বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাজের একটি বড় অংশের বিদ্বজনেরা।

ফাঁসানো হয়েছে স্ট্যান স্বামীকে ?

এদিকে আরবান নকশাল তকমা দিয়ে মাওবাদী যোগের তত্ত্ব তুলে বারেবারেই নাস্তানাবুদ করা হয়েছিল এই বৃদ্ধ মানবাধিকার কর্মীকে। এমনকী ভীমা কোরগাঁও মামলায় মাও যোগের তত্ত্ব তুলে গত বছর অক্টোবরে রাঁচি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তারপর থেকে মুম্বইয়ের তালোজা জেলেই বন্দি ছিলেন তিনি। এবার এই গ্রেফতারি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল মার্কিন ফরেনসিক এজেন্সি আর্সেনাল কনসাল্টিং ফার্ম।

মার্কিন ফরেনসিক এজেন্সির দাবি জোর চাঞ্চল্য

এই মার্কিন ফরেনসিক এজেন্সির দাবি মাও যোগের তত্ত্ব স্থাপন করতে ফাঁসানো হয়েছে স্ট্যান স্বামীকে। এই ক্ষেত্রে হাতিয়ার করা হয়েছিল ভীমা কোরেগাঁও মামলার আর এক অভিযুক্ত নাগপুরের আইনজীবী তথা দলিত অ্যাক্টিভিস্ট সুরেন্দ্র গ্যাডলিংকে। সাইবার হানার মাধ্যমে তাঁর কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল একাধিক সন্দেহজনক তথ্যাদি। আর সেই প্রমাণাদির হাত ধরে পরবর্তীতে মাও যোগ সন্দেহে সুরেন্দ্র গ্যাডলিংকে গ্রেফতার করে এনআইএ।

নিশানা স্বামীর কম্পিউটার ?

সূত্রের দাবি, এই সুরেন্দ্র গ্যাডলিংয়ের সঙ্গেও স্ট্যান স্বামীর যোগসাজসের তত্ত্ব তোলা হয়েছিল বলে জানা যায়। মার্কিন ফরেন্সিক এজেন্সির দাবি সুরেন্দ্রর মতো ফাঁসানো হতে পারে স্ট্যান স্বামীকে। তার গ্রেফতারি সহজ করতেও বেছানো হতে পারে ভুয়ো প্রমাণের জাল। এমনকী ভীমা কোরেগাঁও মামলার মোট ১৬ অভিযুক্তের সকলের সঙ্গেই এই কাজ হয়ে থাকতে পারে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে স্ট্যান স্বামী বাদে কবি ভারাভারা রাও মুক্তি পেলেও এথনও ১৪ জন জেলবন্দি রয়েছেন।

মাও যোগ সন্দেহে পাওয়া চিঠি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন

এদিকে ম্যাসাচুসেটসের এই ফরেন্সিক টিমের তথ্য সামনে আসতেই নতুন করে চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে এনআইএ-র তদন্ত প্রক্রিয়া। এমনকী এতদিন মাও যোগ তত্ত্ব প্রমাণ করতে যে সমস্ত চিঠি গুলিকে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল সেগুলির বৈধতা ও সত্যতা নিয়েও উঠে গিয়েছে বড়সড় প্রশ্ন।

চাপে মোদী সরকার

এনআইএ-র দাবি ছিল ভারতে ভবিষ্যতের মাওবাদী কর্মকাণ্ড নিয়ে ওই চিঠিগুলির মাধ্যমে বিস্তর আলোচনা চালিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলার বিষয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই সমস্ত ‘জোরালো প্রমাণাদির' উপর ভিত্তি করেই স্ট্যান স্বামীর জামিন দিতে অস্বীকার করে আদালত। তার জেরে একাধিক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে দিনে দিনে জেলেই মৃত্যুর অপেক্ষা করতে থাকেন স্ট্যান স্বামী। বর্তমানে এই সমস্ত প্রমাণের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় মোদী সরকার যে রীতিমতো চাপে পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

More NIA News  

Read more about:
English summary
nia-investigation-in-bhima koregaon case in question was stan swamy framed to sort out the maoist link theory