ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের পর করোনা পরবর্তী অসুস্থতার তালিকাতে যুক্ত হল আরও একটি নাম। avascular necrosis। এই রোগে হারের কোষ শুকিয়ে যাচ্ছে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর এই উপসর্গ দেখা যাচ্ছে রোগীদের শরীরে।
সম্প্রতি মুম্বইতে তিন জন রোগীর শরীরে এই জাতীয় রোগের উপসর্গ দেখা গিয়েছে।
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, আগামী কয়েকমাসে এমন আরও রোগীর সন্ধান মিলবে।
মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে তিনজন রোগীর শরীরে এই উপসর্গ দেখা গিয়েছে। আর এই তিনজনেরই বয়শ ৪০ এর নীচে। করোনা থেকে সেরে ওঠার দুমাস পরে এই রোগ নিয়ে হাসপাতালে এসেছে তাঁরা।
হিন্দুজা হাসপাতালের ডিরেক্টর ডক্টর সঞ্জয় আগরওয়াল জানিয়েছেন, তিনজনেরই পায়ের উপরের দিকে ফিমার বোনে ব্যাথা শুরু হয়। এরপরে তাঁরা চিকিৎসকদের কাছে যান। উপসর্গ চিনতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করে দেন ডাক্তারা।
মূলত এই রোগের উৎস মূলত ব্যাপক পরিমাণে স্টেরয়েডের ব্যবহার। করোনা ভাইরাস থেকে দ্রুত সেরে ওঠার জন্যে অনেক সময়ে ডাক্তাররা অতিরিক্ত পরিমানে স্টেরয়েডের ব্যবহার করছেন। আর তাতেই বিপত্তি ঘটছে বলে প্রাথমিক অনুমান ডাক্তারদের।
শুধু তাই নয়, ডক্টর সঞ্জয় আগরওয়ালের স্টাডি বলছে, avascular necrosis এবং হারের কোষ শুকিয়ে যাওয়ার আরও একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন শরীরে করোনার ভাইরাস থেকে যাওয়া।
অন্যদিকে কোয়েম্বাটুরের সরকারি হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে ভর্তি হয়েছিলেন ২৬৪ জন রোগী। যার মধ্যে ৩০ জন দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন। যারা ভর্তি হয়েছিলেন তাঁদের সবার এন্ডোস্কপি করা হয়েছে।
শুধু তাই নয় ১১০ জনের চোখের অপারেশন হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০জনের সংক্রমণ অনেক বেশী হয়ে যাওয়াতে দৃষ্টি শক্তি চলে গিয়েছে। হাসপাতালের ডিন ডক্টর নির্মলা জানিয়েছেন, যারা শুরুর দিকে এসেছিলেন তাঁরা সবাই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কথা মাথায় রেখে সরকার রাজ্য গুলিকে অতিরিক্ত ২,১২,৫৪০ ভায়াল অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া ইতিমধ্যে এই কথা জানিয়েছেন। দেশজুড়ে অতিরিক্ত ১০ লক্ষ ভায়াল ওষুধ বিভিন্ন জায়গাতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের করেনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৪০ হাজারের নীচে নামল। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯,৭৯৬ জন। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দৈনিক মৃতের সংখ্যা কিন্তু সন্তোষ জনক নয়। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়ে দেশে মারা গিয়েছেন ৭২৩ জন।
গত কয়েক মাস ধরেই দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা করছে। করোনা ভাইরাসে গোটা দেশে এখন সংক্রমিত হয়েছেন ৩,০৫,৮৫,২২৯ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৪,৮২,০৭১জন।
করোনার সেকেন্ড ওয়েভ অনেকটাই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাই বলে দিচ্ছে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে দেশের করোনা পরিস্থিতি।