সূত্র মডেলের অনুমান
কোভিড-১৯ নিয়ে গাণিতিক প্রকল্প সূত্র মডেলের সঙ্গে যুক্ত মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন যে তবে সার্স-কোভ-২-এর নতুন কোনও ভ্যারিয়ান্ট প্রকাশ্যে আসলে তৃতীয় ওয়েভের সময় কোভিড সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস কেসগুলির তীব্রতা প্রকাশ্যে নিয়ে আসার জন্য গত বছর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এই প্যানেল গঠন করে। আইআইটি কানপুরের বিজ্ঞানী আগরওয়াল ছাড়াও এই প্যানেলে রয়েছেন আইআইটি হায়দরাবাদের এম বিদ্যাসাগর এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাধুরি কান্তিকার। এর আগে দেশে কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ওয়েভের তীব্রতা সম্পর্কে অবহিত না করার জন্য এই প্যানেল সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
সংক্রমণ বেশি ছড়াবে
তৃতীয় ওয়েভের অনুমান নিয়ে আগরওয়াল জানিয়েছেন যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, টিকাকরণের প্রভাব হ্রাস পাওয়া ও আরও বেশি করে নতুন ভ্যারিয়ান্ট সামনে আসার কারণে এই সময় সংক্রমণ বেশি ছড়াবে। যা দ্বিতীয় ওয়েভের সময় হয়নি। তিনি এও জানিয়েছেন যে বিস্তারিত রিপোর্ট শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
তিনটি পরিস্থিতি তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা
আগরওয়াল বলেন, ‘আমরা তিনটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেই। প্রথমটি আশামূলক, যেখানে আমরা মনে করছি যে অগাস্টেই মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে এবং কোনও নতুন মিউট্যান্টের আবির্ভাব হবে না। দ্বিতীয়টি হল মধ্যবর্তী, যেখানে আমরা অনুমান করছি যে টিকাকরণের প্রভাব ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে। চূড়ান্ত পরিস্থিতি হল বেশ হতাশাজনক, যা মধ্যবর্তী থেকে পৃথক, অগাস্টে মিউট্যান্ট সংক্রমণের প্রভাবে নতুন করে ২৫ শতাংশ করোনা সংক্রমণ দেখা দেবে।' আগরওয়াল একটি গ্রাফ তৈরি করেছেন যেখানে দেখা গিয়েছে যে অগাস্টের মধ্যবর্তী সময়ে দ্বিতীয় ওয়েভ বেশ খানিকটা হ্রাস পাবে এবং সম্ভাব্য তৃতীয় ওয়েভ অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে শিখরে পৌঁছাবে।
কেস বাড়বে তৃতীয় ওয়েভে
হতাশাজনক পরিস্থিতিতে তৃতীয় ওয়েভে দৈনিক কোভিড-১৯ কেস দেশে ১,৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০-তে বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত, মে মাসের প্রথমমার্ধে মারণ দ্বিতীয় ওয়েভের যে শিখর পৌঁছেছিল তা তৃতীয় ওয়েভের সংক্রমণের অর্ধেক ছিল। কিন্তু এই তৃতীয় ওয়েভের কারণে হাসপাতালে উপচে পড়বে রোগী এবং দৈনিক হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হবে। এখানে উল্লেখযোগ্য, গত ৭ মে ভারতে ৪,১৪,১৮৮ কোভিড-১৯ কেস রেকর্ড হবে, যা দ্বিতীয় ওয়েভে সময় সর্বোচ্চ।
তৃতীয় ওয়েভে দ্রুত সংক্রমণ
আগরওয়াল জানিয়েছেন যে যদি নতুন মিউট্যান্টের উদয় হয়, তবে তৃতীয় ওয়েভ দ্রুত সংক্রমণ হবে, তবে তা দ্বিতীয় ওয়েভের সময় যা ছিল তার অর্ধেক হবে। আগে যাঁরা বিভিন্ন ভ্যারিয়ান্টের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁরাই ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হয়েছেন বলেই জানিয়েছেন আগরওয়াল। তিনি এও জানিয়েছেন যে টিকাকরণ কর্মসূচি তৃতীয় বা চতুর্থ ওয়েভের সম্ভাবনাকে হ্রাস করবে।
দেশে দৈনিক কেসের পরিসংখ্যান
বিজ্ঞানীদের মতে, আশামূলক পরিস্থিতিতে দৈনিক কেস ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষে পৌঁছাবে। মধ্যবর্তী পরিস্থিতিতে একই দৃশ্য দেখা যাবে, তবে তা আশামূলক পরিস্থিতি থেকে বাড়বে। প্যানেলের আরও এক সদস্য এম বিদ্যাসাগর জানিয়েছেন যে তৃতীয় ওয়েভে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অনেক কম হবে।