জোর টক্কর
অতিরিক্ত সময়েও স্পেন-ঝড় অনবদ্য দক্ষতায় রুখে দিচ্ছিলেন সুইস গোলকিপার ইয়ান সমার। অতিরিক্ত সময়ে খেলার ফল ১-১ থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। চলতি সপ্তাহেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে পিছিয়ে থেকেও সমতা ফিরিয়ে টাইব্রেকারে বাজিমাত করেছিল সুইজারল্যান্ড। এরপর আজ তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নদের টাইব্রেকারে নিয়ে যায় দশজনের সুইজারল্যান্ড। ইউরোর ইতিহাসে এই নিয়ে চতুর্থবার একই ইউরোতে দুটি ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে গেল সুইজারল্যান্ড। ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের পর ২০১৬ সালে পোল্যান্ডের এই নজির ছিল। যদিও ওই দলগুলির মতো এবারেও টাইব্রেকারে হার মানল সুইসরা।
নাটকীয় টাইব্রেকার
টাইব্রেকারে প্রথম শটই পোস্টে মারেন সার্হিও বুস্কেৎস। এরপরই গারভানোভিচের গোলে এগিয়ে যায় সুইসরা। টাইব্রেকারে ১-১ করেন স্পেনের ওলমো। টাইব্রেকার যখন ১-১, তখন সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় শট রুখে দেন স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোন, গোল করতে ব্যর্থ হন পরিবর্ত হিসেবে নামা ফ্যাবিয়ান সার। এর পরের শট নিতে যান স্পেনের রদ্রি, ঝাঁপিয়ে পড়ে স্পেনের এগিয়ে যাওয়া রুখে দেন সমার, যিনি অতিরিক্ত সময়েও বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করেছেন। সুইজারল্যান্ডের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগাতে এরপর ব্যর্থ হন আকানজি। সার যেদিকে মেরেছিলেন সেদিক দিয়েই নীচু শটে গোল করতে গিয়েছিলেন তিনি, ঝাঁপিয়ে পড়ে তা বাঁচিয়ে দেন সিমোন। আগের ম্যাচেই পেদ্রির ব্যাক পাস সঠিকভাবে পা দিয়ে ধরতে না পারায় স্পেন আত্মঘাতী গোল হজম করেছিল, সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সিমোন। কিন্তু এদিনের জোড়া সেভ দিয়েই নিজের দক্ষতা বুঝিয়ে দিলেন টোকিও অলিম্পিকের দলে থাকা সিমোন।
শেষ হাসি স্পেনের
টাইব্রেকারে এরপরই স্পেনকে ২-১-এ এগিয়ে দেন মোরেনো। চাপের মুখে শট নিতে গিয়ে রুবেন ভার্গাস বল বাইরে মারতেই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় ইউরো কাপের শেষ চারে স্পেনের অগ্রগমন। ওয়াইয়ারজাবালের শট সমারকে পরাস্ত করতেই ওয়েম্বলির টিকিট পেয়ে যায় স্প্যানিশ আর্মাডা। টাইব্রেকারে স্পেনের পক্ষে ফল দাঁড়াল ৩-১। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারানোর পরও প্রথম কোনও মেজরের সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ হাতছা়ড়া হয় সুইসদের। ইউরো সেমিফাইনালে স্পেন খেলবে বেলজিয়াম ও ইতালি ম্যাচের জয়ী দলের বিরুদ্ধে।
দশজনেও স্মরণীয় লড়াই
সেন্ট পিটার্সবার্গে আজকের এই ম্যাচের আগে দুই দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল ২২ বার। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ছা়ড়া সুইসদের কাছে হারেনি স্পেন। জিতেছে ১৬টিতে, ড়্র হয়েছে ৫টি ম্যাচ। ম্যাচের ৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় স্পেন। কোকের কর্নার থেকে বল পেয়ে জোরালো শট মারেন আলবা, যা জাকারিয়ার পায়ে লেগে সুইসদের জালে জড়িয়ে যায়। কিছুই করার ছিল ইয়ান সমারের। যিনি ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অসাধারণ গোলকিপিং করার পাশাপাশি টাইব্রেকারে এমবাপের শট রুখে সুইজারল্যান্ডকে পৌঁছে দিয়েছিলেন শেষ আটে। প্রথমার্ধে পজেশনাল ফুটবল খেলে বল নিজেদের দখলে রাখলেও স্পেনকে খুব বেশি আক্রমণে যেতে দেয়নি সুইসরা। কাউন্টার অ্যাটাকেও সুইজারল্যান্ডকে বিপজ্জনক লাগছিল। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধে মরিয়া হয়ে উঠে একের পর পর আক্রমণ শানাতে থাকেন সুইজারল্যান্ডের রডরিগেজ, শাচিকি, জুবাররা। স্পেন গোলকিপার উনাই সিমোন বেশ কয়েকটি ভালো সেভ করে দলের বিপদ দূর করলেও পরাস্ত হন ৬৮ মিনিটের মাথায়। রেমো ফ্রেউলারের অ্যাসিস্টে টানা তিন ম্যাচে নিজের তৃতীয় গোলটি করে সমতা ফিরিয়েছিলেন শাচিরি।