সিনে জগতে নিরুঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতেই নয়া হাতিয়ার? সিনেমাটোগ্রাফ বিল নিয়ে কেন তোলপাড় দেশ?

২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিক বিতর্কিত আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছে মোদী সরকারি। দু-বছর আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল হয় গোটা দেশ। এমনকী গত বছর নয়া কৃষি বিল নিয়েও বেকায়দায় পড়ে সরকার। সম্প্রতি নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়মে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এবার বিতর্ক বাড়ছে সিনেমাটোগ্রাফ (সংশোধনী) বিল, ২০২১ নিয়ে।

সিনেমাটোগ্রাফ (সংশোধনী) বিল নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ

সম্প্রতি সাধারণ মানুষের মতামত জানার জন্য সিনেমাটোগ্রাফ (সংশোধনী) বিল, ২০২১-র খসড়া সামনে এনেছে সরকার। আর তা দেখেই চমকে উঠেছেন পরিচালক থেকে প্রযোজক থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলী সকলেই। অভিযোগ নয়া বিল এনে সেন্সর বোর্ডের ক্ষমতা খর্ব করেই নিজেই সর্বেসর্বা হতে চাইছে সরকার। সিনে জগতে নিরুঙ্কুশ নিয়্ন্ত্রণ কায়েম করতেই হাতিয়ার করা হচ্ছে নয়া বিলকে।

সিবিএফসি-র উপর নিরুঙ্কুশ নিয়্ন্ত্রণ কায়েম করতেই হাতিয়ার নয়া আইন ?

ইতিমধ্যেই বিলের যে খসড়া প্রকাশ্যে এসেছে তাতে বলা হয়েছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন(সিবিএফসি) কোনও সিনেমাকে মুক্তির জন্য সবুজ সংকেত দিলেও তা আটকাতে পারবে সরকার। সরকার যদি মনে করে ছবিটি আদৌও রিলিজ করা যায় কিনা, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা বা কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে, তবে সেই ক্ষমতা সরকারের হাতেই থাকবে।

শিল্পীর স্বাধীনতায় মারণ আঘাত?

আর ঠিক এই খানেই প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন টলি থেকে বলি রূপোলী পর্দার প্রায় সমস্ত কলাকুশলীরাই। অভিযোগ, বিরুদ্ধ কণ্ঠ রোধ করতেই নয়া আইনকে হাতিয়ার করে সুপার সেন্সরের ক্ষমতা চাইছে সরকার। সেই সঙ্গে এই আইন প্রণয়ন হলে শিল্পীর স্বাধীনতায় মারণ আঘাত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় এর ফলে ভারতের মতো স্বাধীন দেশে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতাতেও বড়সড় হস্তক্ষেপ হবে বলে মনে করছেন শিল্পীরা।

কী চাইছে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক?

কিন্তু কেন্দ্রের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক চাইছে, ১৯৫২ সালের সিনেমাটোগ্রাফ আইনে নতুন একটি ধারা যোগ করা হোক। এদিকে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে কেন্দ্র একবার সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া সিনেমাকে এখন আর আটকাতে পারে না। আর ঠিক এখানেই আপত্তি তুলে সুপার সেন্সরের ক্ষমতা হাতে চাইছে কেন্দ্র। সহজ কথায় নয়া আইনের দ্বারা সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ফের সিনেমার পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা চাইছে মোদী সরকার।

আপত্তির কথা জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি বিশিষ্টজনদের

এদিকে ইতিমধ্যেই সিনে জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার প্রায় ১,৪৩০ জন খ্যাতনামা ব্যাক্তি নয়া আইনে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এই তালিকায় রয়েছেন বিজয়কৃষ্ণ আচার্য, দীবাকর ব্যানার্জি, জোয়া আখতার, ভেত্রি মারান, অনুরাগ কাশ্যপ, নন্দীতা দাস, হনসল মেহতা, শাবানা আজমির মতো ব্যক্তিদের নাম। সেই সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন টলিউডের কলাকুশলীদের একটা বড় অংশও।

More CINEMA News  

Read more about:
English summary
center wants to be a super censor by bringing a bill to amend the cinematograph, killing the freedom of the artist