টোকিও অলিম্পিকে ইতিহাস লেখা জলকন্যা মানার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জলকন্যা মানা প্যাটেল। হবে না-ই বা কেন। ভারতের প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন মানা। সজন প্রকাশ ও শ্রীহরি নটরাজের পর দেশের তৃতীয় সাঁতারু হিসেবে মানার টোকিও-র টিকিট নিশ্চিত হয়েছে 'ইউনিভার্সালিটি কোটা'র মাধ্যমে। গর্বিত হয়েছে দেশ। সেই আবহে ২১ বছরের সাঁতারুর ইতিহাস দেখে নেওয়া যাক।

সাঁতার শুরু

সাত বছর বয়স থেকে সাঁতার শেখা শুরু করেছিলেন মানা প্যাটেল। মাত্র ছয় বছরের মধ্যে নিজেকে তৈরি করে ফেলেছিলেন গুজরাতের জলকন্যা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি হায়দরাবাদে হওয়া ৪০তম জুনিয়র জাতীয় অ্যাকোয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন। ২ মিনিট ২৩.৮১ সেকেন্ডে প্রতিযোগিতা শেষ করে কিংবদন্তি শিখা ট্যান্ডনকে (২ মিনিট ২৪.৪১ সেকেন্ড) টপকে গিয়েছিলেন মানা।

কেরিয়ারের উত্থান

জাতীয় গেমসের ৫০ মিটার ও ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে সোনা জেতা মানা প্যাটেল, ২০১৫ সালের ন্যাশনাল স্কুল গেমসের ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকেও প্রথম হয়েছিলেন। একই প্রতিযোগিতার ফ্রি স্টাইল ৪x১০০ মিটার রিলে ইভেন্টে সোনা জিতে দেশের নজরে পড়ে গিয়েছিলেন গুজরাতের কিশোরী। ওই বছরই হওয়া অলিম্পিক গোল্ড কোয়েস্টের জন্য ভারতীয় শিবিরে ডাক পেয়েছিলেন মানা। ২০১৬ সালের সাউথ এশিয়ান গেমস থেকে দুটি সোনা, তিনটি রূপো এবং একটি ব্রোঞ্জ জেতা সাঁতারু ওই বছর মোট ১১টি জাতীয়, ৬১টি আন্তর্জাতিক ও ৭৫টি রাজ্যস্তরীয় পদক জিতে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের সিনিয়র ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক চ্যাম্পিয়নশিপেও তিনটি সোনা জিতেছিলেন গুজরাতের সাঁতারু।

চোট পাওয়া ও ফিরে আসা

ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির নিয়ম অনুযায়ী 'ইউনিভার্সালিটি কোটা' প্রতি দেশ থেকে একজন পুরুষ ও মহিলা প্রতিযোগীকে গেমসে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে অলিম্পিক সিলেকশন বি টাইমের ভিত্তিতে ইতিহাস রচনা করার সুযোগ পেয়েছেন মানা। টোকিও গেমসে ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্টে ভারতের হয়ে তিনি প্রতিনিধিত্ব করবেন। এই খবরে উচ্ছ্বসিত হয়েছে মানা। যিনি বেলগ্রেডে ১ মিনিট ০৩ সেকেন্ডে ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক সম্পন্ন করে নজির স্থাপন করেছেন। টোকিওয় সেই সময় কমিয়ে ১ মিনিট ০২ সেকেন্ড করাই তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ২১ বছরের ভারতীয় সাঁতারু। ২০১৯ সালে চোট পেয়েছিলেন মানা। মাঝে করোনা ভাইরাস কিছুটা হলেও কঠিন করে দিয়েছিল আহমেদাবাদের মহিলা সাঁতারুর এগিয়ে চলার রাস্তা। চলতি বছরের এপ্রিলে জলে নেমেই কামাল করেছিলেন মানা। উজবেকিস্তান ওপেন সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে দেশকে গর্বিত করেছিলেন ২১ বছরের সাঁতারু। ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্ট ১ মিনিট ০৪.৪৭ সেকেন্ডে শেষ করেছিলেন মানা। ফলে তাঁর কাছ থেকে যে টোকিও অলিম্পিকে পদক জয়ের প্রত্যাশা থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ব্যক্তিগত জীবন

২০০০ সালের ১৮ মার্চ গুরজাতের আহমেদাবাদ জন্ম হয় মানা প্যাটেলের। আহমেদাবাদের উড়গ্রাম স্কুল অফ চিল্ড্রেন থেকে তিনি কমার্স নিয়ে পাস করেন। গুজরাত বিদ্য়াপীঠ সুইমিং সেন্টারে কোচ কমলেশ নানাবতীর হাত ধরে মানার সাঁতারের যাত্রা শুরু। বর্তমানে মুম্বইয়ের গ্লেনমার্ক অ্যাকোয়াটিক ফাউন্ডেশনে কোচ পিটার কার্সওয়েলের পরামর্শে নিজেকে তিল তিল করে তৈরি করছেন ভারতের গর্ব।

More TOKYO OLYMPICS 2021 News  

Read more about:
English summary
Gold medalist of South Asian Games is now the hope of India in Tokyo Olympics
Story first published: Friday, July 2, 2021, 18:27 [IST]