ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ে রিতিকা
রাইফেল শুটিংয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করছিলেন রিতিকা। স্কুল ও রাজ্য স্তরের শুটিং প্রতিযোগিতায় সাফল্যও পান। নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে তিনি ভর্তি হন অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকারের শুটিং আকাদেমিতে। জাতীয় মিটে যোগ্যতা অর্জন করলেও যেতে পারেননি অসুস্থতার কারণে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে রিতিকার শরীরে থাবা বসিয়েছে ব্লাড ক্যান্সার।
মনের জোর
রাজারহাটের টাটা মেমোরিয়ালে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করতে হয় রিতিকাকে। জয়দীপ কর্মকার সর্বতোভাবে পাশে দাঁড়ান ছাত্রীর। তিনিই বলছিলেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রিতিকার মনের জোর প্রশংসনীয়। বেশ কিছুদিন সেই হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর চিকিৎসকরা মনে করেছিলেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই জিতেই গিয়েছেন রিতিকা। বাড়ি ফেরেন। চলছিল শুটিং রেঞ্জে ফেরার প্রস্তুতি। কিন্তু সেই ধারণা যে সঠিক ছিল না কয়েক মাস পরেই তা স্পষ্ট হয়।
আর্থিক প্রতিবন্ধকতা
গত বছর চিকিৎসা করাতে গিয়ে রিতিকার পরিবারের কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রিতিকার বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করতে হবে। দরকার কমবেশি ৩০ লক্ষ টাকা। জয়দীপ কর্মকার রিতিকার বিষয়টি রাজ্য ক্রীড়া দফতরের নজরে আনতেই এই শুটারের পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার।
২ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য
আজ নব মহাকরণে ক্রীড়া দফতরের রিতিকার মায়ের হাতে রাজ্য সরকারের তরফে ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ক্রীড়া দফতর একটি পরিবারের মতো। সকলেই সকলের পাশে থাকেন। রাজ্যে কোন ক্রীড়াবিদের কী সমস্যা তা খোঁজখবর রেখে যথোপযুক্তভাবে সরকারের নজরে রাখেন প্রাক্তন ক্রীড়াবিদরাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় আমরা কে কোন খেলার সঙ্গে জড়িয়ে তা না দেখে পরিবারের একজন মনে করেই সকলে ঝাঁপিয়ে পড়ি। জয়দীপ রিতিকার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের তরফে এই অর্থসাহায্য এদিন তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল। আমরা এই পরিবারের পাশে রয়েছি। অন্য কেউ কোনও সমস্যায় পড়লেও আমাদের দফতরে জানালে আমরা সকলেরই পাশে থাকব। আশা করি, রিতিকা দ্রুত আরোগ্য লাভ করে জীবনের সাধারণ ছন্দে ফিরবেন।
ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিশাতেই আমরা কাজ করছি। রাজ্য সরকারের তরফে রিতিকার পরিবারের হাতে আজ ২ লক্ষ টাকা তুলে দিলাম। ব্যক্তিগতভাবেও প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়দের কাছে আবেদন রাখব, সাধ্যমতো অর্থসাহায্য করে রিতিকার পাশে থাকার জন্য।
অসুস্থ ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়
বিশিষ্ট প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় গতকাল রাত থেকে অসুস্থ হয়ে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা সকালে তাঁকে দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। তাঁর পার্কিনসন রোগ রয়েছে। সকালের দিকেও খিঁচুনি হওয়ায় ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়কে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাঁর পরিবারের পাশেও রয়েছে রাজ্য সরকার।