বিতর্কের আবহেই টোকিও অলিম্পিক্সে অংশ নিয়ে ইতিহাস রচনা করতে চলেছেন নিউজিল্যান্ডের রূপান্তরকামী ভারোত্তোলক লাউরেল হাবার্ড। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া যজ্ঞে এর আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। তীব্র সমালোচনা সামাল দিয়ে সোমবার তাদের অলিম্পিক্সগামী দলে হাবার্ডের নাম অন্তর্ভূক্তিকরনের কথা জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের অলিম্পিক কমিটি। যাকে ঘিরে ফের নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
নিউজল্যান্ড অলিম্পিক কমিটির প্রধান কেরেইন স্মিথ জানিয়েছেন, ৪৩ বছরের লাউরেল হাবার্ড ৩০ বছর বয়সে নিজেকে ছেলে থেকে মহিলায় রূপান্তর করেন। অলিম্পিক্সে রূপান্তকারী অ্যাথলিটদের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় মানদন্ড ওই ভারোত্তোলক পেরিয়ে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্মিথ। বক্তব্য, ক্রীড়াক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যের মতো ক্ষতিকারক অভ্যাসকে মান্যতা দিতে চায় না নিউজিল্যান্ড অলিম্পিক কমিটি।
নিউজিল্যান্ডের লাউরেল হাবার্ড প্রাথমিকভাবে টোকিও অলিম্পিক্সের পুরুষ বিভাগে নাম লেখালেও, গেমসের নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে মহিলাদের বিভাগে তুলে আনা হয়। ২৩ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা টোকিও গেমসে মহিলাদের ৮৭ কেজি বিভাগের ভারোত্তোলন ইভেন্টে অংশ নেবেন হাবার্ড। যে ইভেন্টে ৪৩ বছরের অ্যাথলিট বিশ্ব ক্রমতালিকার ১৬ নম্বর স্থানে অবস্থান করছেন।
ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির ২০১৫ সালের লিপিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী কোনও রূপান্তরকামী অ্যাথলিট তখনই গেমসে অংশ নিতে পারেন, যখন তাঁর শরীরে টেস্টস্টেরনের মাত্রা প্রতি ১০ ন্যানোমোলসের নিচে থাকে। সেই যোগ্যতার মাত্রায় নিউজিল্যান্ডের লাউরেল হাবার্ড উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। অলিম্পিক্সে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে আপ্লুত হয়েছেন অ্যাথলিট নিজে। জানিয়েছেন, কঠিন সময়ে তিনি দেশের মানুষ এবং অলিম্পিক কমিটির থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছেন, তাতে তিনি আপ্লুত।
ইতিহাস লিখতে চলা লাউরেল হাবার্ড ২০১৭ সালের বিশ্ব ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে রূপো জিতেছিলেন। চোটের কারণে ২০১৯ সালে তিনি একই প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থান দখল করেছিলেন। যাঁর টোকিও অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণের যুক্তিগ্রাহ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বেলজিয়ামের ভারোত্তোলক আনা ভ্যানবেলিংহেন। ঘটনাকে তিনি রসিকতা বলে আখ্যা দিয়েছেন। অলিম্পিক্সে হাবার্ডের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্ব ক্রীড়া মহলের অন্য একটা অংশও।