ঘনিষ্ঠ নেতাদের দিয়ে বিজেপির অন্দরে কোন্দলের সৃষ্টি!
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, মুকুল রায় তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের দিয়ে বিজেপির অন্দরে কোন্দলের সৃষ্টি করতে চাইছেন। সেই কোন্দলের পথেই আসবে ভাঙন। ঠিক যেভাবে উত্তরবঙ্গে ভাঙন ধরেছে, সেভাবেই রাঢ়বঙ্গেও এবার আঘাত নামতে পারে বলে পূর্বাভাস পেতে শুরু করেছেন বাংলার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বঙ্গভঙ্গ বা পৃথক রাজ্যের দাবি বিতর্কে ফাটল বাড়ছে
সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি করেছেন। তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রকেও। এমনকী রাজ্যের কাছেও প্রস্তাব রাখবেন বলে জানিয়েছেন। আর তারপরই কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে শাসকদল তৃণমূলের তরফে। বিজেপিও প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানিয়েছে, বঙ্গভঙ্গ বা পৃথক রাজ্যের দাবি সমর্থন করে না তাঁরা।
সাংসদের বঙ্গভঙ্গের দাবিতে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি
বিজেপি বঙ্গভঙ্গ নিয়ে পৃথক অবস্থান নিলেও সাংসদের বঙ্গভঙ্গের দাবিতে তোলপাড় হওয়ার পর জেলা বিজেপির সভাপতি-সহ শীর্ষসারির সাত নেতা দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা যোগদান করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। সেই যোগদানের দিনেই রাঢ়বঙ্গের এক সাংসদ মন্তব্য করে বসেছেন জঙ্গলমহলকে নিয়ে পৃথক রাজ্য চাই।
মুকুল রায়কে মীরজাফর রায় বলে কটাক্ষ সৌমিত্রর
এবার যে সাংসদ রাঢ়বঙ্গে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন, তিনি হলেন মুকুল রায়ের অনুগামী বলে পরিচিত সৌমিত্র খাঁ। সম্প্রতি মুকুল রায় তৃণমূলে যোগদানের পর মুখ খুলছিলেন সৌমিত্র। মুকুল রায়কে মীরজাফর রায় বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে গিয়ে বিজেপির কেউ আর কুলাঙ্গার হবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আর মুকুল-অনুগামী নন। মুকুল রায়ের ঘরওয়াপসির বিরোধিতা করেন তিনি।
বিচ্ছিন্নতাবাদের সুর তুলিয়ে বিভাজনের সৃষ্টি করা হচ্ছে
কিন্তু মুকুল-ঘনিষ্ঠ জন বার্লার পর সৌমিত্র খাঁয়ের পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হওয়ার পর রাজনৈতিক মহলের একাংশ এ সবের পিছনে মুকুল রায়ের হাতযশ দেখছে। একাংশের দাবি, মুকুল রায় বিজেপিতে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদের সুর তুলিয়ে বিভাজনের সৃষ্টি করছেন। যার ফলে বিজেপির একাংশ তৃণমূলমুখী হয়ে পড়বেন, আর বিজেপিতে ধস নামবে।
বিজেপিকে ভেঙে ছারখার করে দিতে সুক্ষ্ম পরিকল্পনা
বাঙালি ভাবাবেগের ফেল বিজেপি বিচ্ছিন্নতাবাদে সায় দিতে পারবে না। দিলীপ ঘোষরা বলতে বাধ্য হবেন, তাঁরা বঙ্গভঙ্গ বা পৃথক রাজ্যের পক্ষে নন। তখনই একটা জটিলতা তৈরি হবে। এর ফলে গেরুয়া শিবিরের উপর মানুষও তিতিবিরক্ত হয়ে যাবে। মুকুল রায় এমনই একটা সুক্ষ্ম পরিকল্পনায় বিজেপিকে ভেঙে ছারখার করে দিতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মুকুল রায় তৃণমূলে যাওয়ার পর থেকেই ভাঙন আতঙ্ক
বিজেপির এমন কোনও পরিকল্পনা ছিল না। তাহলে হঠাৎ করে কেন তাঁদের সাংসদরা এমন দাবি তুলছেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপির একাংশ থেকেও এই মন্তব্যের সমালোচনায় বলা হচ্ছে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। বিজেপির অন্দরে কোন্দল বাড়াতে মুকুল রায়ের কৌশল হতে পারে এটা। মুকুল রায় তৃণমূলে যাওয়ার পর থেকেই ভাঙন আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে বিজেপিকে। ফলে বিজেপিকে ভাবাচ্ছে এই বঙ্গভঙ্গের সুর।
বঙ্গভঙ্গের ডাকের পিছনে কী অভিষন্ধি বিজেপি নেতাদের
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, গেরুয়া শিবিরে অনেক নেতাই দলবিরোধী এবং দলের নীতিবিরোধী মন্তব্য করে চলেছেন। অনেকে চাইছেন, দল আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, তাহলেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার পথ সুগম হয়ে যাবে। আচমকাই বঙ্গভঙ্গের ডাকের পিছনে তেমন কোনও অভিষন্ধি থাকতে পারে। কিন্তু বিজেপি সাংসদরা কেউই তা স্বীকার করছেন না। এটা মানুষের দাবি বলে তাঁরা ব্যাখ্যা করছেন। মানুষের প্রতিনিধি হয়ে স্রেফ একথা তাঁরা বলছেন। উন্নয়নের জন্যই তাঁরা এই দাবি উত্থাপন করেছেন মানুষের হয়ে।
মুকুলের 'খেল' শুরু হয়ে গেল তৃণমূলে! গুরুভার পেয়ে ফিক্সড করে ফেললেন টার্গেটও