তৃণমূলের হয়ে আইপ্যাকের কাজের চুক্তির মেয়াদ বাড়ল, প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জল্পনা

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ফল বেরনোর পরে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (prashant kishor) জানিয়েছিলেন, তিনি আর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবেন না। কিন্তু সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের (ipac) সঙ্গে তৃণমূলের (trinamool congress) চুক্তি হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। ফলে প্রশান্ত কিশোরের অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

২০১৯-এ আইপ্যাককে নিয়োগ

২০১৯-এ ৪২-এ ৪২ ডাক দেওয়া তৃণমূল পেয়েছিল ২২ টি আসন। আর বিপক্ষে বিজেপি ১৮ টি। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাককে নিয়োগ করে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর অনুযায়ী এব্যাপারে বেশি আগ্রহ ছিল বর্তমান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তারপর থেকে দল ও সরকারের একাধিক কর্মসূচি সফলভাবে পরিকল্পনা করে আইপ্যাক। যার সর্বশেষটি হল ডিসেম্বরে দুয়ারে সরকার।

মিলে গিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী

ভোটের আগে বিজেপির প্রচার সভায় ব্যাপক ভিড়। দলে দলে তৃণমূলের নেতারা যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। সব সভাতেই বিজেপির দাবি এবার ২০০ পার। কিন্তু সেই সময়ই প্রশান্ত কিশোর বলে দিয়েছিলেন, বিজেপি ১০০ পার করতে পারবে না। অন্যদিকে তৃণমূল ২০০ পার করে দেবে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। যদি ভুল কিছু হয়, তাহলে তিনি এই পেশাই ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।

ভোটের পরেই প্রশান্ত কিশোরের ঘোষণা

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের নির্বাচনী জয়ের পরে প্রশান্ত কিশোর ঘোষণা করেছিলেন তিনি আর ভোটকুশলী হিসেবে কাজ করবেন না। পাশাপাসি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারেও কাউকে পরামর্শ দেবেন না। বদলে অন্য কোনও পেশায় যাওয়ার ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানোর জল্পনাও শোনা গিয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে তিনি মুম্বইতে গিয়ে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। তারপরেই অবশ্য তাঁকে নিয়ে অন্য জল্পনা তৈরি হতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জন্য কাজ করেছেন প্রশান্ত কিশোর

বলা যেতে পারে প্রশান্ত কিশোরের ভোটকুশলীর কাজটা শুরু করেছিলেন গেরুয়া শিবিরের হাত ধরে। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কাজ করেছিল তার সংস্থা আইপ্যাক। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে নীতিশ কুমারের হয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। পরে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এর মধ্যে দিল্লিতে কেজরিওয়াল, অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন, তামিলনাড়ুতে ডিএমকের স্ট্র্যালিনকে ক্ষমতার আনার ক্ষেত্রে তাঁর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাকের ভূমিকা রয়েছে। পঞ্জাবে অমরিন্দর সিং-এর কংগ্রেসের সঙ্গেও চুক্তি মাফিক কাজও শুরু করেছেন তিনি।

তৃণমূলের হয়ে কাজ ২০২৬ পর্যন্ত

সূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাকের চুক্তি হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ এর মধ্যে রয়েছে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২৬-এর পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন। এই চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৫ বছর আইপ্যাক তৃণমূলের হয়ে কাজ করবে।

দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ

তবে তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, টাকা নিয়ে নির্বাচনে জিতাচ্ছেন, অনৈতিক কাজ করছেন। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা মিথ্যা প্রচার ও মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এব্যাপারে তিনি বলেছেন, তৃণমূল ব্যবসায়িক সংস্থায় পরিণত হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক দল এজেন্সি নির্ভর হলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার বলেও মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষ।

More PRASHANT KISHOR News  

Read more about:
English summary
Prashant Kishor's IPAC will work for TMC till 2026, says sources