মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু
সোমবার বিধায়কদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই মুকুল রায়কে বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিতে একদিন সময় দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছিলেন, ইস্তফা না দিলে দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। তিনি বলেছিলেন, গত ১০ বছরে রাজ্যে দলত্যা বিরোধী আইন প্রয়োগ করা হয়নি। এবার তা যাতে প্রয়োগ হয়, তার জন্য তিনি জোর দেবেন। রাজ্যে এই আইন কার্যকর করা না হলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলে শুভেন্দু অধিকারী।
আগে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুকুল রায়
আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল বিজেপির প্রতি। আর নির্বাচনের পল বেরোনোর পরেই পাকাপাকিভাবে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সিদ্ধান্ত। যে কারণে নির্বাচনের ফল বেরনোর একমাস পরেও বিজেপির বৈঠকে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে কিংবা পরে বিধানসভার সদস্যপদে ইস্তফা দেবেন।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সিদ্ধান্ত বদল
মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে পরিস্থিতির অনেকটাই পরিবর্তন হয়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, অনেক বিধায়কই মুকুল রায়ের সঙ্গে থাকার ব্যাপারে প্রাথমিক কথা দেন। যার জেরে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে মুকুল রায় তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। আপাতত ঠিক হয়েছে, শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে তা বললে, তিনি যেন বিধায়ক পদে ইস্তফা না দেন।
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হতে পারে মুকুলকে
লোকসভাই হোক কিংবা বিধানসভা, সাধারণভাবে প্রধান বিরোধীদলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দেওয়ার রীতি রয়েছে। যেমন লোকসভায় এই পদে রয়েছেন অধীর চৌধুরী। কিন্তু এই রীতি যে অনুসরণ করতে হবে, তা কোনও নির্দেষ্ট আইন নেই। এই এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ বিজেপির হাতে না দিয়ে সেখানে মুকুল রায়কে বসাতে পারে তৃণমূল। তৃণমূলের একাংশ এব্যাপারে বিজেপির সঙ্গে বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে চ্যালেঞ্জে যেতে চাইছে। তবে এব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
২০১৬ নির্বাচনের পরে দীর্ঘদিন এই পদ তৃণমূল নিজের হাতে রেখেছিল
২০১৬-র নির্বাচনের পরে বিরোধী দল হিসেবে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ পাওয়ার কথা কংগ্রেসের। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে তা সুজন চক্রবর্তীকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ অধ্যক্ষের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তৃণমূল সেই পদে বসায় কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মানসু ভুঁইয়াকে। পরে মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভায় নির্বাচিত হলে সেই পদে আনা হয় রানাঘাট উত্তর পশ্চিম থেকে কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচিত হয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া শঙ্কর সিংকে। তবে একেবারে শেষের দিকে তৃণমূল সেই পদ ছেড়ে দেয় কংগ্রেসকে। কংগ্রেসের তরফে জলপাইগুড়ির তৎকালীন বিধায়ক সুখবিলাক বর্মাকে সেই পদে বসানো হয়েছিল।