কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মুকুল রায় রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন। এছাড়াও দ্বিতীয় ইউপিএ জমানায় কেন্দ্রে একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন মুকুল রায়। এহেন মুকুল রায় ২০১৭-র সেপ্টেম্বরে রাজ্যসভার সদস্যপদে ইস্তফা দেন। তারও বেশ কিছু সময় পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির অন্দরমহলের খবর তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়া পরে। কিন্তু বিষয়টিতে দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। তাঁকে রাজ্যসভাতেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরে একটা সময়ে বিজেপির তরফে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়। তবে এই পদটা যে অলঙ্কারিক তা ঝানু রাজনীতিক মুকুল রায় জানতেন। কেননা এই পদের সেরকম কোনও ক্ষমতা ছিল না।
টিকিট বিলি করতে চেয়েছিলেন
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মুকুল রায় অনেকটাই নিজের মতো করে কাজ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। বিজেপির অন্দমহলের অনেকেই মনে করছেন, মুকুল রায় ভেবেছিলেন, ২০২১-এ টিকিট বিলি করার দায়িত্বও তিনিই পাবেন। খানিকটা কিং মেকারের মতো। কিন্তু কা হতে বাধা দিয়েছেন আরএসএস পন্থী নেতারা। সর্বশেষে অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরদারিতেই টিকিট বিলি করা হয়েছিল।
নির্বাচনের পরেও তিনি যে ক্ষুব্ধ তা বোঝাতে বিধায়কদের শপথ গ্রহণের দিন নিজের দলের বিধায়কদের মধ্যে না গিয়ে তিনি আগে গিয়েছিলেন সুব্রত বক্সির ঘরে। তখন থেকেই জল্পনা ছড়ায় মুকুল রায়ের দলবদল নিয়ে।
ছেলে হেরে গিয়েছে
বিজেপিকে মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়কে টিকিট দিয়েছিল বীজপুর থেকেই। যে বীজপুর থেকে গত দুবার শুভ্রাংশু নির্বাচিত হয়েছিল তৃণমূলের টিকিটে। আর তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কৃষ্ণনগর উত্তরে। নিজের এই অবস্থা নেমে নিতে পারেননি মুকুল রায়। পাশাপাশি নিজে রাজনীতি থেকে অনেক কিছু পেলেও, ছেলে সবে রাজনীতিতে উঠতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই হার। ছেলেকে নিয়ে চিন্তা তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়়ে খাচ্ছিল।
বিজেপি হেরে গিয়েছে
সব থেকে বড় কারণ হল বিজেপি হেরে গিয়েছে। মুকুল রায় ঘরে অর্থাৎ তৃণমূলে ফেরার পরে যেটা রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মুকুল রায় ছাড়াই তৃণমূল যদি ২১৩ টি আসন পেতে পারে, তাহলে মুকুল রায়কে ছাড়াও বিজেপি চলতে পারবে। এক্ষেত্রে নির্বাচনে হারের পর থেকে কোথাও একটা সম্মানহানির কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন মুকুল রায়। বিশেষ করে দলবদলের কিং মেকার হওয়া, তার পক্ষে বিজেপিতে থেকে আর সম্ভব ছিল না। ফলে তৃণমূলে না গিয়ে আর উপায়ও ছিল না মুকুল রায়ের।