শাকিব এবং বিতর্কের সম্পর্ক কতটা নিবিড়? কী বলছে ক্রিকেটের ইতিহাস?

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ চলার সময় অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য তিন ম্যাচ নির্বাসন করা হয়েছে শাকিব আল হাসানকে। যা নিয়ে তপ্ত রয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। যদিও বাংলাদেশী অল রাউন্ডারের বিরুদ্ধে নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ যে প্রথমবার উঠছে, তা মোটেই নয়। এর আগেও বিতর্কের সঙ্গে একাধিকবার সংযোগ ঘটেছে শাকিবের। সেই ইতিহাস দেখে নেওয়া যাক।

মাঠকর্মীর ওপর ক্ষোভ

২০১০ সালে বাংলাদেশে এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ওয়ান ডে চলাকালীন প্রথমবার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শাকিব আল হাসান। ম্যাচ চলাকালীন মাঠের সাইটস্ক্রিনের সামনে দিয়ে বারবার আসা-যাওয়া করা এক মাঠকর্মীকে ব্যাট উঁচিয়ে তেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বাংলাদেশী অল রাউন্ডারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জন্য শাকিবকে কেবল সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

২০১১ সালের বিতর্ক

২০১১ সালের বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৯ উইকেটের হার হজম করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেশের ক্রিকেটারদের প্রতি কটূক্তি করেছিলেন গ্যালারিতে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশী দর্শক। তাঁদের লক্ষ্য করে কু-ইঙ্গিত করার অভিযোগ উঠেছিল শাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে। সেবারও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি

২০১৪ সালে ঢাকায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ওয়ান ডে ম্যাচ চলাকালীন লাইভ টিভিতে কু-ইঙ্গিত করার অভিযোগ উঠেছিল শাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার জন্য অল রাউন্ডারকে তিন ম্যাচ নির্বাসনে পাঠানোর পাশাপাশি তাঁকে আড়াই লক্ষেরও বেশি টাকা জরিমানা করা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শাকিবের শাস্তি কমানোর আর্জি জানিয়েছিলেন দলের তৎকালীন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

ফ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ

২০১৪ সালে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ম্যাচ চলাকালীন এক বাংলাদেশী ফ্যান শাকিব আল হাসানের স্ত্রীকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেছিল বলে অভিযোগ। উত্তেজিত হয়ে ওই ফ্যানকে শাকিব মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রশ্নের মুখে পড়ে অল রাউন্ডার জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালীন যে ক্রিকেটারদের সাজঘর ছাড়তে নেই, তা তিনি জানতেন না।

কোচের সঙ্গে বিতর্ক

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার চান্দিকা হাথুরুসিংহে। ওই কোচের অধীনে তিনি অনুশীলনে যোগ দেবেন না বলে খোলা চিঠিতে জানিয়েছিলেন শাকিব আল হাসান। যার জন্য তাঁকে ৬ মাসের জন্য নির্বাসনে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শাকিবের আচার-আচরণে যে সমস্যা রয়েছে, তা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন বিসিবি-র সভাপতি নাজমুল হাসান। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জেরে শাকিবের নির্বাসন তিন মাস কমাতে বাধ্য হয়েছিল বোর্ড।

২০১৫ সালের বিতর্ক

২০১৫ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ চলাকালীন ফিল্ড আম্পায়ারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল শাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে। অল রাউন্ডারকে এক ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করার পাশাপাশি তাঁকে জরিমানাও করা হয়েছিল।

২০১৮ সালের বিতর্ক

২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন শেষ ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান মহম্মদ্দুল্লার সঙ্গে ফিল্ড আম্পায়ারের তর্ক হয়েছিল। সতীর্থকে ড্রেসিং রুমে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শাকিব আল হাসান। যদিও ওই ঘটনার জন্য পরে ক্ষমাও চেয়েছিলেন বাংলাদেশী অল রাউন্ডার।

আইসিসি-র নির্বাসন

২০১৯ সালে শাকিব আল হাসান জানিয়েছিলেন যে তাঁকে ম্যাচ ফিক্সিং করার জন্য প্রলুব্ধ করেছিল এক বুকি। সব জেনেও এ ব্যাপারে মুখ বন্ধ করে থাকার জন্য বাংলাদেশী অল রাউন্ডারকে দুই বছরের জন্য নির্বাসিত করেছিল আইসিসি। ২০২১ সালে ফের বাইশ গজে ফিরে আসেন শাকিব।

More SHAKIB AL HASAN News  

Read more about:
English summary
How disciplinary issues knock Shakib Al Hasan's cricket career many times
Story first published: Sunday, June 13, 2021, 12:58 [IST]