কুনাল-রাজীব বৈঠক!
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বাড়িতে যান প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিকেলে কুণাল ঘোষের বাডিতে হাজির হন রাজীব। সবার নজর এড়িয়েই কুণাল ঘোষের বাড়িতে পৌঁছে যান রাজীব। এরপর পুরো বিষয়টিকে লুকিয়ে করতে বাড়ির গেটে তালাও বন্ধ করে দেন কুণাল। জানা গিয়েছে, কোনও রকম ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ছাড়াই এদিন কুণাল ঘোষের বাড়িতে আসেন রাজীব। ব্যবহার করেন অন্যের গাড়িও। প্রায় এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলে কুণাল-রাজীব বৈঠক।
সৌজন্য সাক্ষাৎ!
সবটাই সৌজন্য সাক্ষাৎ। বললেন কুণাল ঘোষ। একই দাবি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কুণাল জানান, রাজীবের এক আত্মীয় অসুস্থ রয়েছেন। তাঁকে দেখতে এখানে এসেছিলেন। আর এখানে এসে ফোন করে আমি আছি কিনা জানতে চান রাজীব। আছি শুনে রাজীব বলেণ, এক কাপ তাহলে চা হয়ে যাক। আর এই চা চক্রে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি বলেই দাবি কুণাল ঘোষের। শুধু তাই নয়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান কুণাল ঘোষ আমার দাদার মতো। শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেই তাঁর বাড়িতে আসা। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি রাজীবের। এমনকি রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয়নি বলে খবর।
প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
গত সপ্তাহে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রাজীব। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা নিয়েও দলের বিরুদ্ধে গিয়ে মুখ খোলেন তিনি। সাফ জানিয়ে দেন, বিপুল ভোটে জিতে আসা এক সরকারে বিরুদ্ধে নেওয়া যে কোনও ব্যবস্থাই উলটো পথে হতে পারে। এদিন ফের একবার এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন রাজীব। এবার কুণাল ঘোষের বাড়িতে দাঁড়িয়ে কার্যত বিজেপির অবস্থান নিয়ে মুখ খুললেন রাজীব। প্রকাশ্যে সমালোচনা করলেন। বললেন, 'বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা একটা সরকারের মাত্র এক মাস হয়েছে। এই অবস্থায় ৩৫৬ ধারার জুজু দেখানো কিংবা বিভাজনের রাজনীতি করার আমি বিরোধী। আমি গোঁড়া সাম্প্রদায়িকতার বিরোধী। আর সে কথা দলকেও জানিয়েছি। অর্থাৎ দলের কিছু অবস্থান নিয়ে যে তাঁর মত পার্থক্য রয়েছে, তা স্বীকার করলেন রাজীব। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে রাজীব লেখেন, বিজেপির সমালোচনা কর লিখেছিলেন, "সমালোচনা তো অনেক হল....মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না।
তৃণমূলে যোগদান নিয়ে ঝুলে অবস্থান!
এদিন কুণাল ঘোষ বলেণ, আমার সঙ্গে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। দলে নেওয়া বা না নেওয়াটা সবটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর। তবে তাঁরা জানেন হাওড়ার নেতা-কর্মীরা যেভাবে লড়াই করে তৃণমূলকে জিতিয়ে এনেছেন সে দিকে তাকিয়ে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না তাতে কর্মীদের অপমান করা হয়। রাজনৈতিকমহলের মতে, কুণালের এহেন মন্তব্যে ঝুলেই রইল রাজীবের দলবদল।