জমা পড়ল নিউ টাউনের রুদ্ধশ্বাস গুলির লড়াইয়ের ফরেন্সিক রিপোর্ট! ধৃত ভরতের শ্বশুরবাড়ির খোঁজ কলকাতায়

অভিশপ্ত বি ব্লকের ২০১ নং ফ্ল্যাট! সেখানে গত কয়েকদিন ধরে লুকিয়ে ছিল পঞ্জাবের কুখ্যাত দুই গ্যাংস্টার। জয়পাল, জসপ্রীত। আর তাঁদের গ্রেফতার করতে গিয়েই রুদ্ধশ্বাস এবং টানটান এক উত্তেজনার সাক্ষী থাকল কলকাতার মানুষ।

যদিও এই অপারেশণ মাত্র ১৫ মিনিটেই শেষ করে এসটিএফের কম্যান্ডো বাহিনী।

আর রুদ্ধশ্বাস ১৫ মিনিটে ৩৫ রাউন্ড গুলি চলে। নিউটাউন এনকাউন্টার কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল ফরেনসিক দল। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনার তিনদিন পর প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ল।

সূত্রের খবর, আধিকারিকদের জমা দেওয়া রিপোর্টে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আগামিদিনে এই তথ্য অনেক কাজে লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ফরেনসিক সূত্রে খবর, ঘটনার দিন শুধুমাত্র ফ্ল্যাটের ভিতরেই গুলি বিনিময় হয়েছিল। বাইরে একটাও গুলির দাগ নেই। অর্থাৎ এনকাউন্টার হয়েছিল ২০১ নং ফ্ল্যাটের চার দেওয়ালের মাঝে।

ঘরের দেওয়াল, আলমারিতে বুলেটের দাগ রয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, নিহত জসপ্রীতের দেহে ৪টি এবং জয়পালের শরীরে ৬টি বুলেটের ক্ষত দেখা গিয়েছে। ৪৮০ স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাটের বেডরুমে তারা ছিল।

সূত্রের খবর, পুলিশ ঢুকে প্রথমে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। তাতে তারা পালটা বন্দুক বের করে। তাতেই গুলিযুদ্ধ শুরু হয়। দুপক্ষের গোলাগুলির মধ্যে এক পুলিশ আধিকারিক গুরুতর জখম হয়েছে। তাদের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি MP5 পিস্তল, একটি গ্লক পিস্তল।

উদ্ধার হয়েছে ল্যাপটপ, এটিএম কার্ড, প্রিন্টার, মোবাইল। সেখানে কী কী তথ্য আছে, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে খবর।

অন্যদিকে, এদিনেই গ্রেফতার করা হয়েছে আসল সুমিত কুমারকে। আর এই সুমিত কুমারকে জেরা করেই ভরত কুমারের খোঁজ পেতে চাইছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। তার কাছ থেকেই জয়পাল, যশপ্রীতদের সন্ধান পায় পুলিশ। জানা যায়, এই ভরত কুমারই কলকাতায় এসে ফ্ল্যাট ভাড়ার ব্যবস্থা করেছিল।

আর সেই ফ্ল্যাটেই থাকত দুই মোস্ট ওয়ান্টেড দুষ্কৃতী। পাঞ্জাব পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ভরত কুমার। জানা গিয়েছে তার শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়। সম্ভবত সেই সূত্রেই কলকাতার আটঘাট তার চেনা। কিন্তু চারু মার্কেটের সেই বাড়িতে এখনই শুধুই দুশ্চিন্তার ছায়া।

অন্য দিকে, মেয়েকে দিনের পর দিন ফোনে না পেয়ে চিন্তা বাড়ছে মায়ের। ভরত কুমারের শ্বশুরবাড়ি চারু মার্কেট এলাকার সুলতান আলম রোডে। বছর তিনেক আগে পঞ্জাবের বাসিন্দা ভারতের সঙ্গে বিয়ে হয় ভারতী দে'র মেয়ে পিয়ালি দে'র। বাড়ির অমতেই বিয়ে হয় তাঁদের।

ভরতের মোবাইলের ব্যবসা আছে বলেই জানেন পিয়ালির মা। বিয়ের পর একাধিকবার কলকাতায় এসেছে ভরত। কলকাতায় এলে ভরতকে হোটেলে রেখে বাপের বাড়িতে আসতেন পিয়ালী, কারণ এই বাড়িতে ভরতের প্রবেশাধিকার ছিল না।

গত মে মাসের শেষের দিকেও ভরত ও পিয়ালী কলকাতায় আসেন। ভরতের শাশুড়ি ভারতী দেবী মনে করেন, 'ভরত যদি দোষ করে থাকে তাহলে শাস্তি হবে। যোগ্য শাস্তি হওয়া উচিত।

তবে মেয়ের জন্য চিন্তা হচ্ছে। গত ১৫ দিন ধরে মেয়েকে ফোনে পাচ্ছিনা। ফোন বন্ধ। মেয়ে যদি এখন ফিরে আসতে চায় তো আসুক। আমরা কখনই সম্পর্ক মেনে নিইনি। তাই ওই ছেলেটাকে বাড়িতে ঢুকতে দিতাম না।'

More NEW TOWN News  

Read more about:
English summary
New town encounter: forensic report filed
Story first published: Saturday, June 12, 2021, 22:49 [IST]