কোপেনহাগেন: আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি…

সদ্য প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষের(Shankha Gosh) এই কবিতার কথাগুলোই শনির সন্ধ্যায় বারবার মনে পড়ছিল পার্কেন স্টেডিয়ামের(Parken Stadium) দৃশ্যগুলো দেখে। অধিনায়ক সাইমন কায়েরের(Simon Kjaer) নির্দেশে ড্যানিশ ফুটবলাররা হাতে হাত ধরে এদিন আড়াল করে রেখেছিলেন লুটিয়ে পড়া এরিকসনকে(Christian Eriksen)। পরিস্থিতি অনুধাবন করে ড্যানিশ অধিনায়কই সতীর্থের হৃদযন্ত্রে পাম্প করা শুরু করেছিলেন প্রথম, চিকিৎসার ভাষায় যাকে বলে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন(CPR)। এরপর মাঠেই মজুত দক্ষ চিকিৎসকদের প্রাথমিক চিকিৎসায় সংজ্ঞা ফিরে পেয়েছিলেন এরিকসন।

আপাতত চিকিৎসায় দারুণ সাড়া দেওয়া ড্যানিশ ফুটবলার কথা বলছেন। হাসপাতালে ফিরছেন স্বাভাবিক ছন্দে। কিন্তু এই যে কয়েকঘন্টায় তাঁকে ঘিরে যে গোটা ফুটবলদুনিয়া তোলপাড় হয়ে গেল সেটা কতোটা আঁচ করেছেন তিনি, কে জানে। এরিকসন স্থিতিশীল, বার্তা পৌঁছনোর পরেই দু’দলের ফুটবলারদের অনুরোধে প্রাথমিকভাবে স্থগিত হয়ে যাওয়া ম্যাচ ঘন্টাদেড়েক বাদে আবারও শুরু হয়। আর ইউরোর আবির্ভাবে ডেনমার্ককে(Denmark) হারিয়ে সেই ম্যাচে ইতিহাস তৈরি করল ফিনল্যান্ড(Finland)। তবে এদিনের ম্যাচে জয়টা বোধহয় সত্যি গৌণ ছিল। তাই তো ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ফিনল্যান্ডের হয়ে ঐতিহাসিক গোলের পর সেলিব্রেশন থেকে বিরত থাকলেন জোয়েল পোহজানপালো(Joel Pohjanpalo)।

এদিকে হাসপাতালের বেডে শুয়েই ম্যাচ সেরা হলেন এরিকসন। সাম্মানিক ম্যাচ সেরার সম্মান উৎসর্গ করা হয় ডেনমার্ক তারকাকে। পুরো ম্যাচ খেলেননি তিনি কিন্তু অসুস্থ হয়ে বুঝিয়ে দিলেন ফুটবল শুধু খেলা নয়, ফুটবল একটা সুতো। যে সুতো বেঁধে রেখেছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের তামাম ফুটবল অনুরাগীদের। তাইতো উয়েফা প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে বললেন, ‘ফুটবল সুন্দর আর সেটা দারুণভাবে খেলল এরিকসন।’ আলেকজান্ডার সেফেরিনের(Aleksander Ceferin) কথায়, ‘এমন মুহূর্তগুলোই বলে দেয় জীবনে দৃষ্টিভঙ্গিটাই আসল। আমি চাই ক্রিশ্চিয়ান দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এবং ওঁর পরিবার কঠিন সময়ে শক্তি পাক।’

পার্কেন স্টেডিয়ামে এরিকসনের আরোগ্য কামনায় দু’দলের সমর্থকদের অভিনব প্রার্থনা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেকথা উল্লেখ করে উয়েফা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি শুনেছি দু’দলের সমর্থকেরা ওঁর নামে ধ্বনি তুলছিল। সত্যি ফুটবল সুন্দর আর ক্রিশ্চিয়ান দারুণ খেলল।’ উল্লেখ্য, ডেনমার্ক-ফিনল্যান্ড(Denmark vs Finland) ইউরোর তৃতীয় ম্যাচের প্রথমার্ধ এদিন এই ভয়ানক ঘটনার সাক্ষী থাকে। ম্যাচের ৪২ মিনিটের মাথায় হঠাতই বল ধরতে গিয়ে মাটিতে সংজ্ঞাহীন হয়ে লুটিয়ে পড়েন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন। অক্সিজেন সাপোর্টের মাধ্যমে স্টেডিয়াম থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় ইন্টার মিলান (Inter Milan) ফুটবলারকে।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.