গত কয়েকবছরে কলকাতার বুকে সবথেকে বড় অভিযান। ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিআইডি। আর তদন্তে নেমে একের পর এক রহস্যের পর্দাফাঁস। আর এক এক করে সূত্রে ঢুকে জট খোলার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আর সেই সূত্র ধরে অবশেষে পুলিশের জালে আসল সুমিত কুমার।
নিউ টাউন শ্যুট আউট কাণ্ডে নেমে প্রথমে এই সুমিত কুমারের নাম সামনে আসে। কিন্তু কে এই সুমিত কুমার? তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। আর সেই তদন্তে বড়সড় সাফল্য গোয়েন্দাদের।
রাতেই মোহালি থেকে সুমিত কুমারকে গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশের ইন্টারনাল সিকিউরিটি টিম।
জানা যাচ্ছে, প্রয়োজনে তাঁকে সিআইডিও জেরা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে সাফল্য পেলেও অন্যদিকে আরও একটি বিষয়কে নিয়ে ক্রমশ দানা বাঁধছে রহস্য।
নিউটাউন এনকাউন্টার-কাণ্ডে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এল পুলিশের। মৃত দুই গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার এবং যশপ্রীত সিংহ ছাড়াও ফ্ল্যাটে তৃতীয় ব্যক্তির আঙুলের ছাপ মিলেছে ফরেন্সিক রিপোর্টে।
তা ছাড়াও আবাসনের প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ভুল্লারদের ফ্ল্যাটে বেশ কয়েকজনের যাতাযাতও ছিল। তাঁরা কারা, যে তৃতীয় ব্যক্তির হাতের ছাপ পাওয়া গিয়েছে, তিনিই বা কে-উঠছে এমন বহু প্রশ্ন।
ফরেন্সিক রিপোর্টে ফ্ল্যাটে যে তৃতীয় ব্যক্তির আঙুলের ছাপ মিলেছে, তা ভরত কুমারের কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সাপুজির সুখবৃষ্টি আবাসনের ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটে বেডরুম থেকেই চলেছে গুলির লড়াই। গুলি চালানো হয়েছে দু'তরফেই।
খাট, আলমারি-সহ সারা ঘরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির দাগ মিলেছে। এমপি ৫ এবং গ্লক পিস্তলের প্রচুর খালি কার্তুজও পাওয়া গিয়েছে ওই ভুল্লারদের ফ্ল্যাটে।
এ ছাড়াও ৮০টির মতো নকল পরিচয়পত্রও মিলেছে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু নমুনা পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু কে এই ভরত কুমার? জানা যায়, সুমিত কুমারের আধার কার্ড-সহ অন্যান্য তথ্য ব্যবহার করে সাপুরজির আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল।
ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল ভরত কুমার নামে এক ব্যক্তি। প্রাথমিত তদন্তে মনে করা হয় ভরত কুমার ও সুমিত কুমার একই ব্যক্তি।
পরে জানা যায়, না সুমিত কুমার একজন আলাদা ব্যক্তি। দিল্লিতে অটো মোবাইল যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতেন যিনি। সেখান থেকে পাসপোর্টও বানান। যিনি ভরত কুমারের অত্যন্ত পরিচিত।
ফলে সুমিত কুমারের খোঁজ শুরু করে পুলিশ, অবশেষে মোহালি থেকে সুমিত কুমারকে গ্রেফতার করে পঞ্জাব পুলিশের ইন্টারনাল সিকিউরিটি টিম।
ইতিমধ্যে দফায় দফায় সুমিত কুমারকে জেরা শুরু করেছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, জেরায় ইতিমধ্যে কুকীর্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছে ওই অভিযুক্ত। তবে এখন তাঁকে জেরা করে ভরত কুমারের খোঁজ পেতে চাইছেণ তদন্তকারী আধিকারিকরা।
কারণ ভরত কুমারকে জেরা করলে নিউ টাউন কান্ডের অনেক রহস্য ভেদ হওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।