মুকুলকে নিয়ে প্রথমদিন থেকেই নরম ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি ভোটের সময়েও তিনি জানিয়েছিলেন, 'মুকুল অতটা খারাপ না।' উলটোদিকেও সৌজন্য বজায় রাখতে দেখা গিয়েছিল মুকুল রায়কেও।
ভোট চলাকালীন সেভাবে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে দেখা যায়নি। কিছুটা নরমেই ছিল।
অনেকে বলেন, কৃষ্ণনগরে মুকুল রায়কে প্রার্থী করে কার্যত বেঁধে দেওয়া হয়। কোথাও কোনও জায়গাতে প্রচারে ডাকা হয়নি তাঁকে। রাজনৈতিকমহলের মতে, শুভেন্দুকে পেয়ে যেভাবে মুকুল রায়কে কোনঠাসা করে দেওয়া হয় তা মেনে নিতে পারেননি তিনি।
আর সে কারণেই ধীরে ধীরে বিজেপি থেকে মুখ ফেরান তিনি। আর বৃহস্পতিবার রাতেই চরম সিদ্ধান্তটা নিয়ে নেন মুকুল রায়। শুক্রবার দুপুরেই দলবদল। মুকুলকে স্বাদরেই স্বাগত জানাল তৃণমূল। কিন্তু সেই মঞ্চেই দলনেত্রী বার্তা দিয়ে রাখলেন, মুকুল রায় ফিরলেও গদ্দারদের দলে ফেরানো হবে না। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেই এই বার্তা দিলেন মমতা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য তৃণমূল ছাড়ার পর একাধিকবার তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু। নিজের বক্তব্যে অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করেছেন, তাতে যে মমতা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট, তা বুঝিয়েই দিয়েছেন।
বিশেষ করে নন্দীগ্রামে লড়াইকে কেন্দ্র করে সংঘাত চরমে ওঠে শুভেন্দু-মমতার। যতদিন গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে দূরত্ব। দলত্যাগীদের অনেককেই বারবার 'গদ্দার' বলে সম্বোধন করেন মমতা।
আর সেই কারণেই মুকুলের ঘরে ফেরার দিন স্পষ্ট বার্তাটি দিয়ে রাখলেন। একুশে তৃণমূলের বিরাট জয়ের পর থেকে যেভাবে দলত্যাগীদের তৃণমূলের ফেরার হিড়িক পড়েছে, তাতে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
উল্লেখ্য, আজ মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেণ, বিজেপিতে কেউ থাকতে পারে না। ওদের শোষণ নীতির কাছে কেউ থাকতে পারবে না।
এই প্রসঙ্গের উত্থাপন করেই এ দিন মমতা বলেন, "মনে রাখবেন চরমপন্থী এবং নরমপন্থী আছে। কিছু লোক আছে যারা হয়তো মুকুলের সঙ্গে গিয়েছে। মুকুল চলে এলে তাঁরাও নিশ্চই চলে আসতে চাইবে। সেটার ব্যপারে দল সিদ্ধান্ত নেবে।"
কিন্তু এরপরই তাঁর হুঁশিয়ারি, "যারা গদ্দারি করে নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের আমরা নেব না।" ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মুকুলের মতোই এই নরমপন্থীদের তালিকায় থাকতে পারেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, সোনালী গুহ-সহ অন্যান্যরা। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বা অর্জুন সিং; এদের মতো দলবদলুদের জন্য কড়া অবস্থান নেবে তৃণমূল।
সূত্রের খবর, মুকুল রায়কে সম্ভবত বড় পদ দেওয়া হবে তৃণমূলে। এমনয়াই সূত্রের খবর। তবে এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দলের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।