রাজ্যে করোনায় সরকারি তথ্যে 'গরমিলের' অভিযোগ, ২৪ ঘন্টায় একধাক্কায় হোম আইসোলেশনে থাকাদের সংখ্যা কমল ৯২৩২৫

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) হাতে থাকা স্বাস্থ্য দফতরের (health dept) জারি করা দৈনিক করোনা বুলেটিনে (covid-19 bulletin) তথ্যে অসঙ্গতির অভিযোগ। ৯ জুন যেখানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা ছিল ৯৮,৫৯২, সেখানে ১০ জুন হোম আইসোলেশনে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২৬৭। তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে রাজ্যে সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের তরফে স্বাস্থ্যদফতরের প্রধান সচিবকে দেওয়া চিঠির পরেই।

স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি

রাজ্য সরকারের প্রকাশিত করোনা সংক্রান্ত বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্যে সক্রিয় আক্রান্তদের সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি দেয় রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের অন্যতম বড় সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক মানস গুমটার স্বাক্ষরিত চিঠিতে রাজ্যের প্রকাশিত রিপোর্টে কোথাও টেকনিক্যাল ভুল আছে কিনা চিঠিতে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

সংখ্যাতাত্ত্বিক গরমিল

চিকিৎসক মানস গুমটা বেঙ্গলি ওয়ান ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, ১ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের দেওয়া বুলেটিন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় হিসেব করলে দেখা যাবে, (৯৪২৪, ৮৯২৩, ৮৮১১, ৭৯১৩, ৭৬৮২, ৭০০২, ৫৮৮৭, ৫৪২৭, ৫৩৮৪) ৬৬৪৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর ওই দিনই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা ৯৮৫৯২, আর সেফ হোমে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা ১৯০৩। সেখানে ওইদিনই কী করে রাজ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৭০২ হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তাহলে ৬৬৪৫৩, ৯৮৫৯২, ১৯০৩ সবাই তো সক্রিয় আক্রান্ত। সাধারণভাবে কোনও পজিটিভ রোগীকে ১০ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হয়। তাই গত ১০ দিনের সব সক্রিয় আক্রান্তকেই সক্রিয় হিসেবে ধরা হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও আইসিএমআর-এর গাইডলাইন অনুযায়ী, কোনও দিন করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যার অর্থ হল সেইদিন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা থেকে সুস্থদের সংখ্যার বিয়োগ ফল।

একধাক্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের সংখ্যা কমল ৯২৩২৫

এরপরেই ১০ জুন সন্ধেয় রাজ্য সরকারের প্রকাশিত হেলথ বুলেটিনে ২৪ ঘন্টায় একধাক্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের সংখ্যা ৯২৩২৫ কমে যায়। ৯ জুন যেখানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা ছিল ৯৮,৫৯২, সেখানে ১০ জুন হোম আইসোলেশনে থাকা রাজ্যবাসীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২৬৭।

খুব তাড়াতাড়ি কি রাজ্যের 'স্বাস্থ্য' ভাল দেখানোর চেষ্টা?

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যের 'স্বাস্থ্য' ভাল দেখাতে গিয়েই এমন হল, প্রশ্ন করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সময়ে রাজ্য-সহ সারা দেশেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের বুলেটিনে যেভাবে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে তা কি বিজ্ঞান সম্মত ভাবে করা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রিপোর্ট শুধু ভারত সরকারের কাছে নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছেও যায়। এতে হয়ত মনে হবে বাংলার মানুষ ভাল আছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা ভয়ানক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত ১০ জুন সকালে সারা দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা একধাক্কায় ৬১৪৮ জনে পৌঁছে যায় (আগের দিন অর্থাৎ ৯ জুন তা ছিল ২২১৯)। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায় বিহারে মৃতদের তালিকা সংশোধিত হয়েছে। যার জেরেই বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা।

More CORONAVIRUS News  

Read more about:
English summary
Discrepancy in data in Govt Covid-19 Bulletin in West Bengal, Says AHSD