'থার্ড ওয়েভ' এড়াতে দ্রুত ভ্যাকসিনেশনের পথে হাঁটছে ভারত। অগাস্ট থেকে প্রতিদিন ১ কোটি ভ্যাকসিনেশনের টার্গেট নিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়েও কি আটকানো যাবে করোনা? ICMR এর নতুন রিপোর্ট চিন্তায় ফেলছে ভারত তথা বিশ্ববাসীকে৷ সম্প্রতি আইসিএমআর-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে ভ্যাকসিনের একটি ডোজ কিংবা দুটি ডোজ নেওয়ার করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন অনেকে৷ এমনকি তাদের ৫-৭ ভালো মাত্রার জ্বর ভোগ করতে হচ্ছে৷
আইসিএমআরের আইজিআইবি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৬৩ জন ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তি ফের করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন৷ যার মধ্যে ১০ জন কো-ভ্যাকসিন এবং ৫৩ জন কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন। তবে আইসিএমআরের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়েছে যে জ্বর এলেও ভ্যাকসিন নেওয়া ৬৩ জন ব্যক্তিদের মধ্যে কারও মৃত্যু হয়নি।
কী এই বিটা ও ডেল্টা ভাইরাস?
কিাচুদিন আগে কোভিড ভাইরাসের 'থ্রিপল মিউটেন্ট' ভারতীয় স্ট্রেন B.1.617 এর সংক্রমণ ক্ষমতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল ডব্লিউএইচও। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয় পুরো B.1.617 নয়, এই 'ত্রিপল মিউটেন্ট স্ট্রেন'এর একটি শাখা B.1.617.2 কেই দ্রুত সংক্রমণের জন্য দায়ী।
গত মাসেই 'থ্রিপল মিউটেন্ট' B.1.617 কোভিড ভাইরাসটিকে 'ভাইরাস অফ কনসার্ন' ঘোষণা করেছিল ডব্লিউএইচও। সেখান থেকে সরে এসে সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, ভারতীয় স্ট্রেনের সবকটি ভাগ নয় শুধু মাত্র B.1.617.2 ভাইরাসটিই দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মধ্যে। এই ভাইরাসটির অসুস্থ করার ক্ষমতাও অন্যদের তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। দেশে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ার আগেই তৃতীয়বার চরিত্র বদলে ফেলা এই কোভিড ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল মহারাষ্ট্রে৷ ৫ অক্টোবর ২০২০ মুম্বইয়ে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে৷ তবে তখনও এই ভাইরাসটি 'ডাবল মিউটেন্ট' হিসেবে কাজ করছিল৷ পরে নিজেকে আবার বদলে ফেলে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে
B.1.617.1 এবং B.1.617.2 ভাইরাস দুটি। সম্প্রতি ভারতে পাওয়া এই ভাইরাসদুটির নতুন নামকরণ করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। কাপ্পা এবং ডেল্টা নামে কোভিডের এই নতুন স্ট্রেন দুটিকে চিহ্নিত করেছে WHO
একই ভাবে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান শাখার থ্রিপল মিউটেন্ট ভাইরাসটিকে বিটা নামে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এই দুটি ভাইরসই মূলত ভ্যাকসিনের সুরক্ষা বলয় ভেঙে সংক্রমিত করছে বলে আগেই সতর্ক করেছিল WHO
কী বলছে WHO?
সম্প্রতি ডাব্লুএইচওর প্রযুক্তিগত প্রধান মারিয়া ভ্যান কেরখভ সাংবাদিকদের জানান, '
B.1.617.2 স্ট্রেনটি নিজের স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন করেছে। স্পাইক প্রোটিনে কিছু জিনিস সরিয়ে এটি আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে। কোভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়ান্টগুলোর তুলনায় কোভিড ভাইরাসের এই প্রজাতিটি সহজেই মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে৷ এর মারণ ক্ষমতা অনেকটাই বেশি।'
তবে আশার কথা এই যে আইসিএমআর প্রকাশিত রিপোর্টে এও বলা হয়েছে ভারতীয় পদ্ধতিতে তৈরি কোভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে করোনার থ্রিপল মিউট্যান্ট ভাইরাসে সংক্রমিত করলেও মারণ ক্ষমতা কম।