দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান মেনে নিতে পারেননি! আর সেই কারনে নাকি দল ছেড়েছিলেন। সাড়ে তিন বছর আগে মুকুলের দলবদল প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি ছিল। শুধু দাবি নয়, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিশানা করেন মুকুল।
'বিশ্ব বাংলা'র মালিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, একাধিক বিষয়ে মুকুলের টার্গেটে ছিল সেই অভিষেকই। নিজেকে দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে দাবি করা মুকুল কিছুতেই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড হিসাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেনে নিতে পারেননি।
কিন্তু সেই সাড়ে তিন বছর পর অভিষেকই তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দিতে তৃণমূলে স্বাগত জানান। দু'জনে আলিঙ্গনও করেন। মুকুলের পুত্র শ্রুভ্রাংশু রায়কেও উত্তরীয় পরিয়ে জড়িয়ে ধরেন অভিষেক।
আনুষ্ঠানিক যোগদানের পর মাইক্রোফোন নিয়ে উঠে দাঁড়াতে যাচ্ছিলেন মুকুল। সেই সময় মুকুলের হাত ধরে তাঁকে চেয়ারে বসেই বলার অনুরোধ করতে দেখা যায় অভিষেককে।
মুকুলের মুখে একগাল হাসি। হাসিমুখেই তিনি বললেন, ''এখানে এসে খুবই ভাল লাগছে। কারণ, দলের পুরনো ছেলেদের দেখতে পাচ্ছি। অনেকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।'' দৃশ্যতই স্বস্তিতে থাকা মুকুলও এমনও বলেন, ''বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে এসে সত্যিই ভাল লাগছে। বাংলা আবার নিজের জায়গায় ফিরবে।
নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি আমাদের নেত্রী, ভারতের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।''কিন্তু যার উত্থানে দল ছেড়েছিলেন তাঁর সঙ্গে কাজ করতে সমস্যা হবে না? অভিষেকের সঙ্গে মুকুলের সম্পর্কের সমীকরণ কী হবে?
প্রশ্ন উঠতেই মুকুল বলতে শুরু করেন, ''অভিষেকের সঙ্গে আমার কোনও মতবিরোধ ছিল না।'' কিন্তু তিনি তাঁর জবাব শেষ করার আগেই সামনে-রাখা মাইক্রোফোন টেনে নিয়ে স্বয়ং মমতা বলেন, ''অভিষেকের সঙ্গে কখনওই মুকুলের মতবিরোধ ছিল না। কারও সঙ্গেই ছিল না।'' সবটাই নাকি সংবাদমাধ্যমের বানানো!!
মনে করা হচ্ছে, মুকুল রায়কে এবার গুরু দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে জাতীয় রাজনীতিতে। ইতিমধ্যে ২০২৪ এর লক্ষ্যে দলকে ঢেলে সাজিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখতে চাইছেন নেত্রী।
আর এখানে অভিষেককে সবরকম সাহায্য করতে পারেন মুকুল রায়। কারণ একটা সময় ত্রিপুরা, অসম সহ একাধিক রাজ্যে মুকুলের নেতৃত্বেই সংগঠন তৈরি হয়। এবার সেই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে অভিষেক বলেছেন, গোটা দেশের সমস্ত কোনায়, প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা।
শুধু তাই নয়, একাধিক রাজ্যে তৃণমূল লড়াই করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেছেন, বাংলার বাইরে তৃণমূল ভোটে লড়বে এবং জিতবেও। ফলে এখানে মুকুলের দেখানো খুব প্রয়োজন। আর সাড়ে তিন বছর বিজেপিতে কাটিয়েছেন মুকুল রায়।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তাঁর। ফলে অনেক অংকই তাঁর জানা। ফলে ২০২৪ ে বিজেপিকে রুখতে মুকুলই কি হবে তৃণমূলের তরুপের তাস? জল্পনা রাজনৈতিকমহলের।