সন্তান কীভাবে সৃষ্টি হয়? বহুদিন ধরে এই বিষয়ে অজ্ঞাত ছিল মানুষ। ১৭ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত বংশোবিস্তারের প্রক্রিয়া নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না। কিন্তু তারপর আধুনিক বিজ্ঞানের হাত ধরে মানুষ জানতে পারল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম লুকিয়ে রয়েছে মায়ের ঋতুস্রাব (menstrual blood) এবং পিতার বীর্যের (semen) মধ্যে। কোনও মহিলা ডিম্বাণু বা কোনও পুরুষ শুক্রাণু উৎপাদন করতে পারছে কিনা তার উপর নির্ভর করবে তাদের বংশবিস্তার।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দুই বিজ্ঞানী, জার্মানির ওসকার হার্টভিগ (Oskar Hertwig) এবং ফ্রান্সের হারমান ফোল (Hermann Fol) সামুদ্রিক জীবের উপর গবেষণা চালিয়েছিলেন। তখনই তাঁরা সিদ্ধান্তে আসেন যে নতুন বংশধর তৈরি করতে একটি ডিম্বাণু (egg) এবং একটি শুক্রাণুর (sperm) প্রয়োজন হয়। বিভ্রান্তি সত্ত্বেও, প্রাচীন যুগের মানুষ একটি বিষয়ে নিশ্চিত ছিল যে প্রজনন (Reproduction) যে হবেই এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু বর্তমানে প্রজননের বৈজ্ঞানীর তত্ত্ব আবিষ্কারের পর এটি কোনও সমস্যাই নয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৫ শতাংশ দম্পতি স্বাভাবিকভাবেই সন্তান ধারণ করতে পারেন না। ফলে অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকেন। এক শতাব্দী আগেও তাঁদের দুঃখ দূর করার মতো বা সমস্যা সমাধানের মতো কোনও পথ বিজ্ঞানের কাছে ছিল না। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে অন্য কোনও ব্যক্তির সঙ্গ শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েই কোনও মহিলা গর্ভবতী হতে পারতেন। একই ঘটনা ঘটত পুরুষদের ক্ষেত্রেও। তাঁদেরও পিতৃত্বের জন্য অন্য কোনও মহিলার দ্বারস্থ হতে হত। এটি অনেকসময়ই ব্যভিচার হিসেবে পরিগণিত হত।
কিন্তু ১৯৭৮ সালের পর অনেক কিছু বদলে যায়। বিশ্বের সামনে আসে প্রথম টেস্ট টিউব বেবি (test tube baby)। নাম লুইস ব্রাউন (Louise Brown)। এই ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (in vitro fertilization) বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখিয়েছিল। যদিও বর্ মায়ের কাছ থেকে একটি পরিপক্ক ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণু পরীক্ষাগারে নিষিক্ত করে তাকে কয়েক দিন ধরে পরীক্ষাগারেই বাড়তে দেওয়া হয়। একে বলে জাইগোট (zygote)। এরপর সেটি মায়ের জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। মায়ের গর্ভে শিশু তারপর স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে ওঠে। এই আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা একে আরও বিস্তারিতভাবে আবিষ্কার করতে চান। পৃথিবীতে আজ লক্ষাধিক সন্তানের জন্ম হয় এই পদ্ধতিতে।
নিষেকের জন্য প্রয়োজন হয় একটি পরিণত ডিম্বাণু (mature egg)। মহিলারা প্রতি মাসে একটি করে এমন ডিম্বাণু উৎপাদন করতে পারে। ৩০ বছর বয়সের পর সেই ডিম্বাণুর কার্যকারিতা কমে যায়। মহিলাদের দুটি ডিম্বাশয় থাকে। ঋতুস্রাবের আগে একটি থেকে একমাসে ও অন্যটি থেকে দ্বিতীয় মাসে ডিম্বাণু উৎপাদন হয়। এই পরিণত ডিম্বাণু শুক্রাণুর সাহায্যে ইন্টারকোর্সের মাধ্যমে বা পরীক্ষাগারে নিষিক্ত হয়। অনেক সময় মহিলারা ডিম্বাণু আগে থেকে হিমায়িত করেও রাখেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম এক মহিলা নিজের হিমায়িত ডিম্বাণু ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর যমজ সন্তানের জন্ম দেন। তবে হিমায়িত ডিম্বাণু ব্যবহার করে সফলভাবে নিষেক ঘটানোর সম্ভাবনা খুব কম। কখনও তা ১ থেকে ২ শতাংশ। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে চিত্রটা অনেকটাই বদলে যায়। যাঁরা দেরিতে সন্তান নিতে চান তাঁদের কাছে অন্যতম বিকল্প হয়ে ওঠে ডিম্বাণুর ক্রিওপ্রিজারেশন (egg cryopreservation)। বর্তমানে এই পদ্ধতি আরও উন্নত হয়েছে। এখন ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়া অনেক সহজেই পরীক্ষাগারে সম্পন্ন হয়।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.