কলকাতা : বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এক সোনালি অধ্যায়ের অবসান। ৭৭ বছর বয়সে কিডনি সমস্যায় প্রয়াত জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত পরিচালক ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বুধবার সকাল ছটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে মৃত্যু হয় পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের। জানা যায়, কিডনির সমস্যার কারণে ডায়ালাইসিস চলছিল তার। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিনোদন জগত।
তাহাদের কথা (Tahader Katha),উত্তরা (Uttara),গৃহযুদ্ধ (Grihajuddha),বাঘ বাহাদুর (Bagh Bahadur),মন্দ মেয়ের উপাখ্যান(Mondo Meyer Upakkhyan),জানালা (Janala), আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা (Aami Yasin ar Amar Madhubala),চরাচর (Charachar) প্রভূত ছবিতে তিনি যেন বাস্তবেরই ছবি এঁকেছেন।
এই ছবিগুলির মধ্যে ‘বাঘ বাহাদুর’ সেরা জাতীয় ফিচার ফিল্ম-১৯৮৯),’তাহাদের কথা’ জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ফিচার ফিল্ম-১৯৯৩ সম্মানে ভূষিত হয়। ‘দূরত্ব’ তাঁর প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি।। পুরস্কার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।।২০০০ ও ২০০৫ সালে যথাক্রমে ‘উত্তরা’ ও ‘স্বপ্নের দিন’ সিনেমার জন্য পান সেরা জাতীয় পরিচালকের পুরস্কার।। ২০০৮ এ স্পেনে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে “Lifetime Achievement “সম্মান।
এথেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড, বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন বিয়ার পুরস্কার সহ অজস্র সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। কবিতার মধ্যে রয়েছে-“গভীর আড়ালে”,”কফিন কিম্বা সুটকেস”,”রোবটের গান” ইত্যাদি। পুরুলিয়ার আনাড়ায় জন্ম প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের। এক কথায় সিনেমা জগতের “ইন্দ্রপতন”।
বর্ষিয়ান পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিনোদন জগত। টলিউডের অলিখিত অভিভাবক অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় শোকবিহ্বল হয়ে জানিয়েছেন,” আমাদের কাছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত একজন সত্তিকারের মাস্টার। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের আকাশে ওনার নামটা চিরস্থায়ী ভাবে উজ্জ্বল। শুধু বাংলা বলবো না ভারতবর্ষের চলচ্চিত্রের, পৃথিবীর চলচ্চিত্র জগতে অন্যতম একজন পরিচালক চলে গেলেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ওনার সঙ্গে পরপর দুটি ছবিতে অভিনয় করার। যা আমার কাছে আশীর্বাদ।
“আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা’ ও ‘স্বপ্নের দিন’। সেই অভিজ্ঞতা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। বুদ্ধদা যে ধারার ছবি করতেন বা যে ধারার ছবিতে বিশ্বাস করতেন, তা একেবারে অন্যধারা হলেও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে উনি একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন, সেই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল যখন আমার ওনার সঙ্গে টরোন্টো এবং বেশ কয়েকটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।
আমি দেখেছিলাম ওনার নাম শুনেই মানুষ কতটা উচ্ছ্বসিত হন। আমি গর্ববোধ করি উনি একজন বাঙালি এবং প্রচুর ভালো ভালো ছবি আমাদের উপহার দিয়েছেন ছোটবেলা থেকে ওনার ছবি দেখছি। একজন প্রকৃত শিক্ষক তো বটেই সঙ্গে একজন খুব ভালো মানুষ ছিলেন। অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রে একজন মানুষ হিসেবে বুদ্ধদাকে পাশে পেয়েছি। ওনার প্রয়াণ খুবই দুঃখের। কিরকম যেন সবাই হারিয়ে যাচ্ছে! উনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন ওনার কাজ আমাদের মধ্যে থাকবে শিক্ষা রুপে।”
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র ভেঙে পড়েছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণে। তিনি বললেন, “দেশ ও পৃথিবীর জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি ওনার সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। সত্যি শেখার মত এক অভিজ্ঞতা। একজন প্রকৃত শিক্ষক উনি। যা ভবিষ্যতে আমায় এগিয়ে নিয়ে যাবে। উনি একজন বাম সমর্থক ছিলেন। বিরোধিতা করার মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে, কিন্তু উনি অন্যায় দেখলে বিরোধিতা করতেন। আর উনি যে একজন দক্ষ পরিচালক এ কথা তো বলাই বাহুল্য। নিঃসন্দেহে এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.