শুভ্রাংশুর সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক!
গত কয়েকদিন ধরে সঙ্কটজনক অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল রায়ের স্ত্রী। আর তাঁকে দেখতেই হঠাত করেই হাসপাতালে চলে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে শুভ্রাংশুর সঙ্গে দেখা হয়। বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়। আর এরপর থেকেই রাজনৈতিকমহলে শুরু হয় জল্পনা। আরও জল্পনা বাড়িয়ে এরপর অভিষেক জানান, শুভ্রাংশুর মা আমার মাতৃসম। আল্টা শুভ্রাংশুও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধণ্যবাদ জানান। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও খোঁজ নেন। তাঁকেও ধন্যবাদ জানান শুভ্রাংশু।
অভিষেকের পরেই হাসপাতালে যান দিলীপ
অভিষেক বের হতেই সেদিনই মুকুল-জায়াকে দেখতে হাসপাতালে যান দিলীপ ঘোষ। রাজনৈতিকমহলে প্রশ্ন উঠতে থাকে তাহলে কি অভিষেককে দেখেই হাসপাতালে আসলেণ দিলীপ ঘোষ। এই বিষয়ে মুকুল রায় জানান, কে গেছে, কেন গেছে কোনও তথ্য নেই। পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন দিলীপ ঘোষও। যা নিয়ে প্রকাশ্যে চলে আসে মুকুল-দিলীপ সংঘাত।
দিলীপের ডাকা বৈঠকেও জানানি মুকুল
ভোটের পর প্রথম বৈঠক। আর সে দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠক এরিয়ে গেলেন মুকুল রায়। এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজেপি বিধায়ক জানান, কীসের বৈঠক। আমার কাছে এমন কোনও খবর নেই। পালটা বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানান, ওণাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার জন্যে আসতে পারেননি। এমনকি সময় পেলে মুকুলদা আসবে বলেও জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেন দিলীপ ঘোষ। একদিকে যখন দিলীপবাবুর বৈঠক এড়িয়ে যাচ্ছেন মুকুল রায় তখন সল্টলেকের বাড়িতে তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক সারছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপির ‘দিলীপ বিরোধী' শিবিরের নেতা সৌমিত্র খাঁ। শোনা যাচ্ছে, আরেক বেসুরো বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন মুকুল।
মুকুল অত খারাপ নয়!
বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল,"মুকুল অত খারাপ নয়। ও বাজে কথা বলে না।" আবার নজিরবিহীনভাবে বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত নিষ্ক্রিয়ই ছিলেন মুকুল। মূলত নিজের কেন্দ্রেই ভোট প্রচার সেরেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। আর এর মধ্যেও অভিষেক-শুভ্রাংশু সাক্ষাৎ মুকুল রায়কে নিয়ে আরও জল্পনা বাড়িয়েছে। অনেকে বলছেন মুকুলের তৃণমূলে ফেরা কার্যত নিশ্চিত। আর এই অবস্থায় বড়সড় ইঙ্গিত দিলেন সৌগত রায়।
সৌগতের মন্তব্যে জল্পনা!
দমদমের সাংসদের দাবি, "এমন বহু নেতা আছে, যারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, এবং তাঁরা এখন ফিরে আস চায়।" সৌগতর বক্তব্য তৃণমূলের এই দলত্যাগীরা মূলত দুই শিবিরে বিভক্ত। কেউ কেউ নরমপন্থী, কেউ কেউ চরমপন্থী। এরপরই বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা কার্যত উদাহারন হিসাবে শুভেন্দুর নাম সামনে আনেন। তিনি বলেন, "শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা যেখানে মমতাকে নিয়ে প্রকাশ্যেই বাজে কথা বলেছে, সেখানে মুকুল রায় কখনও মমতাকে নিজে কটু কথা বলেননি।" সৌগতর এই মন্তব্যের পরই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি ‘নরমপন্থী' মুকুলের জন্য দলের রাস্তা খুলে দিল তৃণমূল? যদিও সৌগতবাবু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দলত্যাগীদের ফেরানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মমতাই নেবেন। উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে লাখ টাকার প্রশ্ন, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় কি গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলেই ফিরতে চলেছেন? সেই প্রশ্নের উত্তর অজানা থাকলেও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় কি মুকুলকে কোনও ইশারা দিতে চাইলেন? মুকুল রায় ফিরতে চাইলে তৃণমূলের রাস্তা যে তাঁর জন্য খোলা সেটাই বোঝাতে চাইলেন সাংসদ? প্রশ্ন রাজনৈতিকমহলের।