রাজীবের মতো দলবদলুদের কি ফিরিয়ে নেওয়া উচিত, ঘরওয়াপসির প্রশ্নে কী ভাবছে তৃণমূল

একদিনে তিনজন নেতা বেসুরো হয়েছেন বিজেপিতে। আর অনেকই বিক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূলে ফিরতে মুখিয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় বেসুরো বা বিক্ষুব্ধদের দলে ঠাঁই দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের ভরা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চাপানো হয়েছে।

দলবদলুদের ফিরিয়ে নিতে আপত্তি তৃণমূল কংগ্রেসে

তৃণমূল কংগ্রেস দলবদলুদের ঘরওয়াপসি নিয়ে এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে জেতার পর বলেছিলেন কেউ দলে ফিরতে চাইলে স্বাগত। কিন্তু তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ দলবদলুদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত নয়। বিশেষ করে একুশের ভোটের প্রারম্ভে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত নয় বলেই মনে করে তৃণমূলের বড় অংশ।

বিক্ষুব্ধদের দলে নেওয়া ঠিক হবে না, বলছে তৃণমূল

তৃণমূলীরা মনে করছেন, বিক্ষুব্ধদের দলে নেওয়া ঠিক হবে না। কেনই বা তাঁদের নেবে? যে দুর্বল মুহূর্ত কাটিয়ে নিজেদের দমে তৃণমূল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, সেটাকে তাহলে অসম্মান করা হবে। আর যাঁরা বেরিয়ে গিয়েছেন তাঁদেরকে মানুষ উচিত শিক্ষা দিয়েছে। তাঁদের প্রায় কেউই জিততে পারেননি। বিশ্বাসঘাতকতা করার পর তাঁদের আর না ফেরানোই ভালো।

দলবদলুদের নেওয়া মানে নিচুতলায় অশান্তি ডেকে আনা

তৃণমূল মনে করে, একুশের ভোটের আগে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাংলরা মানুষ তাঁদের গ্রহণ করেননি। এই অবস্থায় তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া মানে ফের নিচুতলায় অশান্তি ডেকে আনা। কেন এই বিরাট জয়ের পর ফের দলের অন্দরে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হবে। তাই রাজীবদের না ফেরানোই শ্রেয়।

শুদ্ধিকরণ ভোটের আগে তৃণমূলে হয়ে গিয়েছিল দলবদলে

তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, দলের তরফে শুদ্ধিকরণ না করলেও, শুদ্ধিকরণ ভোটের আগে তৃণমূলে হয়ে গিয়েছিল। সেটাকে নষ্ট করা ঠিক হবে না বলেই অধিকাংশের অভিমত। ফলতঃ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেরই সোনালি গুহ, সরলা মুর্মু, অমল আচার্য, দীপেন্দু বিশ্বাস, বাচ্চু হাঁসদা প্রমুখের ঘরওয়াপসি আটকে যাওয়ারই কথা।

মমতার সরকারের সমালোচনা না করে আত্মসমালোচনার বার্তা

উল্লেখ্য, বিজেপির পর্যালোচনা বৈঠকের দিনই তিন হেভিওয়েটকে নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়। মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হাদির হননি দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে। সেই থেকে জল্পনার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক শেষ হতে না হতেই টুইট করে বসেন। সেখানে মমতার সরকারের সমালোচনা না করে আত্মসমালোচনার বার্তা দেন ও কথায় কথায় ৩৫৬ ধারার জুজু থেকে সরে আসতে দলকে পরামর্শ দেন তিনি।

মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী দত্ত বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে মুখর

আর রাজীবকে নিয়ে অস্বস্তিকর মধ্যেই মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সব্যসাচী দত্ত বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি নেতৃত্ব নিয়েই ক্ষোভ উগরে দেন। আর বলেন ভাষা সমস্যার কথা। জন্মগত বাংলাভাষী আর বাংলা শিখে বলার মধ্যে যে ফারাক হবে, তা ধরিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমালোচনাই করেন।

ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর স্রোত উল্টোদিকে বইতে শুরু করেছে

আর মুকুল রায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বয়ানে অসঙ্গতি তে আছেই। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই তিনি নীরব। তার উপর পারিবালিক সমস্যায় জেরবার তিনি। এরই মধ্যে পুত্র শুভ্রাংশু ফেসবুকে পোস্ট করে নেতৃত্বকে সবক শিখিয়েছিলেন। তারপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল-জায়াকে দেখতে হাসপাতালে আসার পর থেকেই স্রোত উল্টোদিকে বইতে শুরু করেছে। জল্পনার জাল বোনা শুরু হয়েছে নতুন করে।

'তৃণমূলে গিয়ে কুকুরের মতো থাকতে হবে',দিল্লি যাওয়ার আগে বিস্ফোরক সৌমিত্র'তৃণমূলে গিয়ে কুকুরের মতো থাকতে হবে',দিল্লি যাওয়ার আগে বিস্ফোরক সৌমিত্র

More MAMATA BANERJEE News  

Read more about:
English summary
TMC doesn’t want to accept Rajib Banerjee and others who were rebel against Mamata Banerjee
Story first published: Wednesday, June 9, 2021, 12:53 [IST]