'বাংলার কংগ্রেস নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপির হয়ে চলছিল কাজ', দলবদল করতেই বিস্ফোরক সোমেন-পুত্র

বিধানসভা ভোটে এবার বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়াই করে প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতেই মুখ থুবড়ে পড়ে বাম-কংগ্রেস জোট। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিধানসভায় কোনও সদস্য নেই বাম কিংবা কংগ্রেসের। এই অস্থায় আগামিদিনে কোন পথে এগোবে জোট তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আর এরই মধ্যে কংগ্রেসের অন্দরে বিশ্বাসঘাতকত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অন্তত কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতার বিজেপিতে যোগদানের পরেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বিজেপিতে যোগ জিতিন প্রসাদের

জিতিন প্রসাদ দীর্ঘদিন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। বিদ্রোহী একজন নেতা জেনেও তাঁকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। জিতিন প্রসাদ একসময় রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কংগ্রেস আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন। তবে, গত দু'বছরে গান্ধীদের ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকী কংগ্রেসের অন্দরের বিদ্রোহী G-23 শিবিরেও নাম লেখান। কিন্তু এরপরেও তাঁর উপর ভরসা করা হয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগেই করলেন দলবদল। হাত ছেড়ে বিজেপিতে গেলেন জিতিন। তাঁর বিজেপি যোগে নিঃসন্দেহে উত্তরপ্রদেশে শক্তিবৃদ্ধি হল বিজেপির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা পীযূষ গোয়েলের হাত ধরে দলবদল করলেন জিতিন। আর জিতিনের দলবদলের পরেই একাফহিক জল্পনা উঠতে শুরু করেছে প্রদেশ কংগ্রেসে।

বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন জিতিন

বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে আনা হয়েছিল তাঁকে। গত দু'বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক ছিলেন। বামফ্রন্ট-কংগ্রেস ও আইএসএফের মধ্যে জোট হয়েছিল তাঁর পর্যবেক্ষণেই। কিন্তু বাংলার ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি নেই। ভোটে হারের পর থেকেই আর বাংলায় দেখা যায়নি তাঁকে। এমনকি দলের বরিষ্ঠ কোনও নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি তিনি। বঙ্গ নেতারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কোনও যোগযোগ করেননি। জিতিনের বিজেপি যোগের পরেই প্রদেশ কংগ্রেসে উঠছে একাধিক প্রশ্ন! তাহলে বাংলায় কংগ্রেসের এহেন পরাজয়ের পিছিনে কি জিতিনই!

পিছনে ওই নেতার হাত ছিল!

খোদ বাংলার দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষকের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে প্রদেশে কংগ্রেস। বিদ্রোহী জেনেও ভোটের আগে বাংলার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস। প্রকাশ্যে এই বিষয়ে প্রকাশ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘‘তিনি যদি সত্যিই বিজেপি-তে যোগদান করেন তার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় পশ্চিমবঙ্গের ভোটে আমাদের যে ভরাডুবি হয়েছে। ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে, তার পিছনে ওই নেতার হাত ছিল। এই ধরনের লোক যদি পর্যবেক্ষক হন, সেই রাজ্যের সাংগঠনিক উন্নতি করা কখনওই সম্ভব নয়।''

বিস্ফোরক দাবি সোমেন-পুত্রের

জিতিনের বিজেপি যোগে রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরের টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হল। প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর ছেলে রোহন মিত্রের অভিযোগ, বাংলার দুই নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে জিতিন এরাজ্যেও বিজেপির হয়ে কাজ করছিলেন। তাঁর দলত্যাগে কংগ্রেসেরই মঙ্গল হল। বাংলার কোন দুই কংগ্রেস নেতার কথা তিনি বলতে চাইছেন, সেটা স্পষ্ট করেননি রোহন। তবে, তাঁর ইশারা অধীর চৌধুরী এবং আবদুল মান্নানের দিকে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

More CONGRESS News  

Read more about:
English summary
bengal congress leader rohan target adhir chowdhury and abdul mannan